Sunday, 26 November 2017

ইউটিউব এ আমার জুমআর বয়ান, আরিব বক্তব্য, আরবি শিশু সঙ্গীত সমূহঃ

ইউটিউব এ আমার জুমআর বয়ান, আরিব বক্তব্য, আরবি শিশু সঙ্গীত সমূহঃ
অনুগ্রহপূর্বক দাওয়াতের উদ্দেশ্যে লগইন, শেয়ার, ও মন্তব্য করুন
----- আবু মাহফুজ মুফতি আব্দুস সালাম ----

০১. আমার জুমআর খুৎবাহ্ব / বয়ানঃ
* তাক্বওয়া : মুমিনের জীবনের ভালো, উত্তম ও শ্রেষ্ঠ ভূষণ
# ভিডিও লিঙ্ক : https://www.youtube.com/watch?v=8ikXaQR755A&t=85s

০২. আমার জুমআর খুৎবাহ্ব / বয়ানঃ
* তাক্বওয়া : মুমিনের জীবনের শ্রেষ্ঠ ভূষণ
# ভিডিও লিঙ্ক : https://www.youtube.com/watch?v=eNiJN2522i0&t=131s

০৩. আরবি ভাষা সাহিত্য চর্চাঃ
* আরবি ভাষা শেখার আসরঃ
# ভিডিও লিঙ্ক : https://www.youtube.com/watch?v=IcLMnaZGGRA&t=205s

০৪. আরবি ভাষা সাহিত্য চর্চাঃ
* আরবি ভাষায়ঃ মুসলিম শিশু ছড়া; আমি মুসলিম শিশু
# ভিডিও লিঙ্ক : https://www.youtube.com/watch?v=4fJwPIYh-Ug&t=191s


০৫. আরবি ভাষা সাহিত্য চর্চাঃ
* আরবি বক্তব্যবার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেপ্রদত্ত ভাষণ
# ভিডিও লিঙ্ক : https://www.youtube.com/watch?v=7wRYq6Re_o0&t=17s

০৬. শিক্ষক প্রতিনিধির বক্তব্যঃ
* বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেপ্রদত্ত ভাষণ
# ভিডিও লিঙ্ক : https://www.youtube.com/watch?v=8_ZweWPO8nQ

المحاضرة، خطبة الجمعة، إلقاء العربية، نشيدي وموسقى الطفل بالعربي في يوتيوب

المحاضرة، خطبة الجمعة، إلقاء العربية، نشيدي وموسقى الطفل بالعربي في يوتيوب – رجائكم تسجيل الدخول والمشاركة والتعليق للدعوة.
----- أبو محفوظ مفتي عبد السلام ----


1- الخطبة / البيان
* الموضوع : التقوى : هى أفضل، أحسن وخير اللباس لحياة المؤمنين

2- الخطبة / البيان
* الموضوع : التقوى : هى لباس الخير لحياة المؤمنين

3- اللغة العربية والممارسة الأدبية
* الموضوع : حلقة تعليم اللغة العربية

4- اللغة العربية والممارسة الأدبية
* الأناشيد أو  الأغاني الأطفال المسلمين باللغة العربية؛ أنا طفل مسلم - -

5- اللغة العربية والممارسة الأدبية
* الموضوع : الخطبة العربية : واردة الكلمة فى برنامج حفلة التوزيع الجائزة السنوية

6- بيان المعلم الممثل :
* واردة الكلمة فى برنامج حفلة التوزيع الجائزة السنوية

Saturday, 25 November 2017

কুরআন ও সহীহ্ হাদীছের আলোকে ফরয নামাযের পর সম্মিলিত ভাবে দুই হাত উত্তোলন করে দু’আ ও মুনাজাতের বিধান

أحكام الدعاء والمناجات المروِّجة برفع الأيدى بعد الصلاة المكتوبة بضوء القرآن والسنة الصحيح
কুরআন ও সহীহ্ হাদীছের আলোকে ফরয নামাযের পর সম্মিলিত ভাবে দুই হাত উত্তোলন করে দুআ ও মুনাজাতের বিধানঃ
আবু মাহফুজ আব্দুস সালাম

প্রশ্নঃ ফরজ নামাজের পর সম্মিলিত ভাবে মোনাজাত করা যাবে কি না এব্যাপারে কোরআন হাদীসের আলোকে আপনার মতামত জানতে চাই

 

উত্তর: এক্ষেত্রে তিনটি বিষয় আলোচ্য: (১) নামাযের পরে মুনাজাত করা, (২) মুনাজাত করার সময় হাত উঠানো এবং (৩) উপস্থিত সকলেই সমবেতভাবে জামাতে যিকর ও মুনাজাত করা

(১) নামাযের পরে মুনাজাত করা 
নামায মুমিনের জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদতনামাযের শেষে মুমিনের হৃদয়ে প্রশান্তি ও আবেগ আসেএই সময়ে তাড়াহুড়ো করে উঠে চলে যাওয়া মুমিনের উচিত নয়নামাযের পরে যতক্ষণ সম্ভব নামাযের স্থানে বসে দুআ মুনাজাত ও যিকিরে রত থাকা উচিতমুমিন যদি কিছু না করে শুধুমাত্র বসে থাকেন তাও তাঁর জন্য কল্যাণকরনামাযের পরে যতক্ষণ মুসল্লী নামাযের স্থানে বসে থাকবেন ততক্ষণ ফিরিশতাগণ তাঁর জন্য আল্লাহর কাছে দুআ করবেন বলে হাদীসে বর্ণিত হয়েছেরাসূলুল্লাহ (সা.)বলেছেন: 
إَذَا صَلَّى الْمُسْلِمُ ثُمَّ جَلَسَ فِيْ مُصَلاَّهُ لَمْ تَـزَلِ الْمَلاَئِكَةُ تَدْعُو لَهُ اَللَّهُمَّ اغْـفِـرْ لَـهُ اَللَّهُمَّ ارْحَـمْهُ مَا لَـمْ يُـحْدِثْ أَوْ يَـقُمْ
 “যদি কোনো মুসলিম সালাত আদায় করে, এরপর সে তাঁর সালাতের স্থানে বসে থাকে, তবে ফিরিশতাগণ অনবরত তাঁর জন্য দুআ করতে থাকেন : হে আল্লাহ একে ক্ষমা করুন, হে আল্লাহ, একে রহমত করুনযতক্ষণ না সে ওযু নষ্ট করে বা তাঁর স্থান থেকে উঠে যায় ততক্ষণ 


হাদীসের শিক্ষার আলোকে আমারা দেখতে পাই যে, পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামাযের পরে কিছু সময় বসে যিক্র ও মুনাজাত করা সুন্নাত সম্মত গুরুত্বপূর্ণ নেক আমলপাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামাযের পরের দুআ কবুল হয় বলে হাদীস শরীফে বলা হয়েছেহযরত আবু উমামা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ(সা.)-কে প্রশ্ন করা হলো: কোন্ দুআ সবচেয়ে বেশি শোনা হয় বা কবুল করা হয় ?” তিনি উত্তরে বলেন :

جَـوْفُ الليـلِ الآخِـرُ، ودُبـُر الصلواتِ الـمكتـوبات
রাত্রের শেষ অংশ ও ফরয নামাযের শেষে (দুআ বেশি কবুল হয়) 

এভাবে আমরা বুঝতে পারি যে, পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের পরে দুআ করা একটি সুন্নাত সম্মত নেক আমল 



সুতরাং আমাদের সকলেরই উচিত নামাযের শেষে কিছু সময় যিকর ও মুনাজাতে কাটানোএধরনের আরো কিছু দোয়া নামাযের পর রাসূল সাঃ করতেন


(২) হাত তুলে মুনাজাত করা
দুআ-মুনাজাতের একটি আদব হলো, দুই হাত তুলে দুআ করাএই অর্থে একটি হাদীসে বলা হয়েছে: নিশ্চয় আল্লাহ লাজুক দয়াবানযখন কোনো মানুষ তাঁর দিকে দুখানা হাত উঠায় (দুআ করতে), তখন তিনি তা ব্যর্থ ও শূন্যভাবে ফিরিয়ে দিতে লজ্জা পান


অন্য বর্ণনায় সালমান ফারসী (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন :

مَا رَفَـعَ قَـوْمٌ أَكُـفَّـهُمْ إِلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ يَسْأَلُوْنَهُ شَيْئًا إِلاَّ كَـانَ حَـقًّا عَـلَى اللهِ أَنْ يَـضَـعَ فِـيْ أَيْدِيْـهِمْ الَّذِيْ سَأَلُوْا
 “যখনই কিছু মানুষ আল্লাহর কাছে কিছু চাওয়ার জন্য তাদের হাতগুলিকে উঠাবে, তখনই আল্লাহর উপর হক্ক (রহমতের দায়িত্ব) হয়ে যাবে যে তারা যা চেয়েছে তা তিনি তাদের হাতে প্রদান করবেনহাফিয হাইসামী উল্লেখ করেছেন যে, হাদীসটির সনদ সহীহ 


অন্য হাদীসে মালিক ইবনু ইয়াসার (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন:

إِذَا سَأَلْتُمْ اللَّهَ فَاسْأَلُوهُ بِبُطُونِ أَكُفِّكُمْ وَلا تَسْأَلُوهُ بِظُهُورِهَا
তোমরা যখন আল্লাহর কাছে চাইবে, তখন হাতের পেট দিয়ে চাইবে, হাতের পিঠ দিয়ে চাইবে নাহাদীসটির সনদ গ্রহণযোগ্য

রাসূলূল্লাহ ((সা.) বিভিন্ন সময়ে হাত উঠিয়ে দুআ করতেনআয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) বলেন :

 يَرْفَعُ يَدَيْهِ يَدْعُو حَتَّى إِنِّي لأَسْأَمُ لَهُ مِمَّا يَرْفَعُهُمَا يَدْعُو اللَّهُمَّ فَإِنَّمَا أَنَا بَشْرٌ فَلا تُعَذِّبْنِي بِشَتْمِ رَجُلٍ شَتَمْتُهُ أَوْ آذَيْتُهُrكَانَ رَسُولُ اللَّهِ
রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর হাত দুখানা উঠিয়ে দুআ করতেন, এমনকি আমি তাঁর (দীর্ঘ সময়) হাত উঠিয়ে দুআ করাতে ক্লান্ত ও অস্থির হয়ে পড়তাম; তিনি এভাবে দুআয় বলতেন : হে আল্লাহ, আমি একজন মানুষ মাত্রআমি কোনো মানুষকে গালি দিয়ে ফেললে বা কষ্ট দিলে আপনি সেজন্য আমাকে শাস্তি দিবেন না 


এ থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, অন্যান্য সময়ের ন্যায় নামাযের পরেও মুনাজাতের সময় হাত উঠানো উত্তমতবে যে ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (সা.) সর্বদা ফযীলত বাদ দিয়েছেন, সেক্ষেত্রে ফযীলত বাদ দেওয়াই সুন্নাতযেমন, কিবলামুখী হয়ে মুনাজাত করা মুস্তাহাবকিন্তু নামাযের পরে ইমামের জন্য এই মুস্তাহাবপরিত্যাগ করাই সুন্নাত



অনেক হাদীস থেকে আমরা দেখতে পাই যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) অনেক সময়, বরং অধিকাংশ সময় দুআ-মুনাজাতের জন্য হাত উঠাতেন নাবরং শুধু মুখে দুআ-মুনাজাত করতেনসাহাবীগণ থেকেও আমরা অনুরূপ কর্ম দেখতে পাইএ সকল ক্ষেত্রে আমরা কী করব? আমরা কি বলব যে, এ সকল ক্ষেত্রেও হাত উঠিয়ে দুআ করা উত্তম এবং হাত না উঠানো অনুচিত? তাহলে তো স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কর্ম অনুচিত পর্যায়ের হয়ে গেলনা কি আমরা বলব যে, এ সকল ক্ষেত্রে হাত উঠানো উত্তম, তবে না উঠালেও দোষ নেই? সেক্ষেত্রে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাজ অনুত্তমবলে গণ্য হলোনা কি বলব যে, এ সকল ক্ষেত্রে হাত না উঠানোই উত্তম, তবে হাত উঠানোতে দোষ নেই? অথবা বলব যে, এ সকল ক্ষেত্রে হাত উঠানো জায়েয নয়? তাহলে হাত উঠানোর ফযীলতে বর্ণিত হাদীসের কী হবে?
এ থেকে আমরা বুঝতে পারি, যে সকল সময়ে তিনি দুআ-মুনাজাতে হাত উঠিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে সেখানে হাত উঠানো সুন্নাত বলে গণ্য হবেযেমন আরাফার মাঠে, ইসতিসকার দুআয়, যুদ্ধে শুরুতে, বিশেষ আবেগের ক্ষেত্রে, ইত্যাদিআর যেখানে ও যে সময়ে তিনি হাত উঠাননি বলে জানা গিয়েছে সেখানে হাত না-উঠানো সুন্নাতঅধিকাংশ নিয়মিত মাসনূন দুআ এই প্রকারের



বিভিন্ন হাদীস থেকে আমরা আরো বুঝতে পারি যে, এ সকল মুনাজাত পালনের সময় রাসূলুল্লাহ (সা.) দু হাত তুলে মুনাজাত করেন নিআমরা দেখছি যে, সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ঘুরে বসা, ঠোট নাড়া, কথা বলা ইত্যাদি সব কিছুর বর্ণনা দিচ্ছেন, কিন্তু কখনোই বলছেন না যে, তিনি দুই হাত তুলে এই কথাগুলি বলেছিলেনশুধু পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের পরের মুনাজাতের ক্ষেত্রেই নয়, অধিকাংশ নিয়মিত দুআ- মুনাজাতের ক্ষেত্রেই তিনি হাত উঠাতেন না
উপরের বিষয়গুলি সবই সর্বজন স্বীকৃত বিষয়এ সকল তথ্যের বিষয়ে কোনো মতভেদ আছে বলে জানি নানামাযের পরে সামষ্টিক মুনাজাতের পক্ষের কোনো আলেমও কোথাও উল্লেখ করেন নি বা দাবী করেন নি যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বা সাহাবীগণ কখনো ফরয সালাতের সালাম ফেরানোর পরে উপস্থিত মুসাল্লীদের নিয়ে সমবেতভাবে দুআ করেছেন বলে কোনো হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে 



তবে নামাযের পরে দুআয় একাকী হাত উঠানোর বিষয়ে কিছু কথা বর্ণিত হয়েছেগত শতাব্দীর কোন কোন আলেম উল্লেখ করেছেন যে, একদিন ফজরের নামাযের পরে ঘুরে বসে রাসূলুল্লাহ (সা.) হাত তুলে দুআ করেছিলেনতাঁরা বলেন, ইবনে আবী শাইবা বর্ণনা করেছেন, ইয়াযিদ ইবনুল আসওয়াদ (রা) বলেন: 

 الْفَجْرَ فَلَمَّا سَلَّمَ انْحَرَفَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ وَدَعَاrصَلَّيْتُ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ
 “আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর সাথে ফজরের নামায আদায় করলানতিনি সালামের পরে ঘুরে বসলেন এবং দুই হাত উঠালেন ও দুআ করলেন

 এর সাথে ফজরের নামায আদায় করলানতিনি সালাম ফেরানোর পরে ঘুরে বসলেনকোন গ্রন্থেই এবং দুই হাত উঠালেন ও দুআ করলেনএই অতিরিক্ত কথাটুকু নেইএজন্য আল্লামা মুফতী আমীমুল ইহসান বলেছেন, হাদীসটি নাযীর হুসাইন মুঙ্গীরী এভাবে উল্লেখ করেছেন, কিন্তু তিনি কোনো গ্রন্থে তা খুঁজে পান নি এবং এর সনদ জানতে পারেন নি rএই হাদীসটি মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ও অন্যান্য গ্রন্থে সংকলিত হয়েছেতবে এ সকল গ্রন্থে সংকলিত হাদীসের ভাষা নিুরূপ: আসওয়াদ বলেন, “আমি রাসূলুল্লাহ 
অন্য হাদীসে ফাদল ইবনু আব্বাস (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,

الصَّلاةُ مَثْنَى مَثْنَى تَشَهَّدُ فِي كُلِّ رَكْعَتَيْنِ وَتَخَشَّعُ وَتَضَرَّعُ وَتَمَسْكَنُ وَتَذَرَّعُ وَتُقْنِعُ يَدَيْكَ يَقُولُ تَرْفَعُهُمَا إِلَى رَبِّكَ مُسْتَقْبِلا بِبُطُونِهِمَا وَجْهَكَ وَتَقُولُ يَا رَبِّ يَا رَبِّ وَمَنْ لَمْ يَفْعَلْ ذَلِكَ فَهُوَ كَذَا وَكَذَا، (فَهِيَ خِدَاجٌ)
সালাত দুই রাকআত, দুই রাকআত করে, প্রত্যেক দুই রাকআতে তাশাহ্হুদ পাঠ করবে, বিনীত হবে, কাতর হবে, অসহায়ত্ব প্রকাশ করবে, বেশি করে সাহায্যা প্রার্থনা করবে এবং তোমার দুই হাত প্রভুর দিকে উঠিয়ে দুই হাতের পেট তোমার মুখের দিকে করবে এবং বলবে: হে প্রভু, হে প্রভুযে এরূপ না করলো তার সালাত অসম্পূর্ণ 


এই হাদীসে নামাযের পরে হাত তুলে দোওয়া করার কথা বলা হয়েছেতবে স্পষ্টতই হাদীসটি নফল নামাযের বিষয়ে, যা দুই রাকআত করে পড়তে হয়সর্বোপরি হাদীসটির সনদ অত্যন্ত দুর্বলইমাম বুখারী, উকাইলী, যাহাবী প্রমুখ মুহাদ্দিস হাদীসটির দুর্বলতা উল্লেখ করেছেন 
আরেকটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, আব্দুল্লাহ ইবনু যুবাইর (রা) এক ব্যক্তিকে দেখেন যে, সে সালাত শেষ করার পূর্বে তার দুই হাত উত্থিত করে রেখেছেঐ ব্যক্তি সালাত শেষ করলে তিনি বলেন:

 لَـمْ يَكُـنْ يَرْفَـعُ يَدَيْهِ حَتَّى يَفْرُغَ مِنْ صَلاَتِهِ.rإِنَّ رَسُوْلَ اللهِ
রাসূলুল্লাহ (সা.) সালাত থেকে বিরত না হওয়া পর্যন্ত তাঁর দুই হাত উঠাতেন নাহাদীসটির সনদ গ্রহণযোগ্য 


সালাত শেষের আগে হাত উঠাতেন নাথেকে মনে হয় সালাত শেষের পরে রাসূলুল্লাহ (সা.) হাত তুলতেনএখানে ফরয বা নফল সালাতের কথা উল্লেখ করা নেইতবে যে ব্যক্তিকে ইবনু যুবাইর কথাটি বলেছিলেন সে ব্যক্তি বাহ্যত নফল সালাত আদায় করছিল এবং এজন্যই একাকী সালাতের মধ্যে দুই হাত তুলে দোওয়া করছিলতার পরেও এই হাদীসের ভিত্তিতে আমরা দাবি করতে পারি যে, তিনি নফল ও ফরয উভয় সালাতের পরেই হাত তুলে দুআ করতেনতবে অন্যান্য অগণিত সহীহ হাদীস, যেগুলিতে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ফরয সালাতের পরের দু, যিক্র, বক্তৃতা ও অন্যান্য কর্মের বিবরণ বিস্তারিতভাবে দেওয়া হয়েছে সেগুলি থেকে জানা যায় যে, তিনি ৫ ওয়াক্ত ফরয সালাতের পরের দুআ-মুনাজাত করার সময় হাত তুলতেন নাসে সকল হাদীস ও এ হাদীসটির সমন্বয়ে আমরা ধারণা করতে পারি যে, তিনি সম্ভবত মাঝে মাঝে সালাত শেষে দুআ-মুনাজাতের জন্য হাত তুলতেন বা নফল সালাতে দুআ করলে সালাত শেষে হাত তুলে দুআ করতেন
এ সবই একা একা হাত তুলে দুআ করার বিষয়েফরয নামাযের পরে মুক্তাদীদেরকে নিয়ে সমবেতভাবে হাত তুলে বা হাত না তুলে দুআ তিনি কখনো করেননিএ বিষয়ে কারো কোনো দ্বিমত আছে বলে আমাদের জানা নেই


(৩) উপস্থিত সকলেই সমবেতভাবে জামাতে যিক্র ও মুনাজাত করা

নামাযের পরে জামাতবদ্ধ মুনাজাত গত কয়েকশত বৎসর যাবৎ চালু হয়েছেতাতে কোনো প্রকারের ফযীলত আছে বলে আমি জানতে পারি নিরাসূলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবীগণের যুগে এইরূপ মুনাজাতের প্রচলন ছিল না বিধায় কোনো কোনো আলিম একে বিদআত বলেছেনআমরা জানি যে, নামাযের পরে মুনাজাত করা ও মুনাজাতে হাত উঠানোর ফযীলত হাদীসে বর্ণিত হয়েছেএকাকী মুনাজাত করলে এই দুইটি ফযীলতই পলিত হয়সমবেতভাবে মুনাজাত করার কোনো ফযীলত হাদীসে উল্লেখ করা হয় নিএক্ষেত্রে আমাদের আশা হলো, একজন মুনাজাত করবেন এবং সমবেত সকলেই আমিনবলবেন, এতে হয়ত আল্লাহ সকলের আবেদনে মুনাজাতটি কবুল করবেনএ জন্য অবশ্যই ইমামকে জোরে জোরে সবাইকে শুনিয়ে মুনাজাত করতে হবেএতে মাসবূকমুসাল্লীদের নামায আদায় বিঘিœত হবেআর ইমাম যদি মনে মনে মুনাজাত করেন তবে তো কিছুই হলো নাইমাম একাকী মুনাজাত করলেনমুক্তাদিগণ কিছুই না করে হাত তুললেন ও নামালেনপক্ষান্তরে একাকী মুনাজাত করলে নিজের মনের আবেগ ও প্রয়োজন অনুসারে মুনাজাত করা যায়এতে মুনাজাতের ফযীলত ও মূল উদ্দেশ্য পুরোপুরি সাধিত হয়, কিন্তু কারো নামাযের ক্ষতি হয় নাএভাবে আমরা বুঝতে পারছি যে, রাসূলুল্লাহ  (সা.)-এর সুন্নাতই উত্তমকিন্তু আমরা বিষয়টিকে উল্টে ফেলেছি


তাছাড়া রাসূল সাঃ পরের যুগগুলিতেও সাহাবী, তাবেয়ী ও তাবে-তাবেয়ীগণের যুগেও কেউ কখনো ফরয নামাযের পরে সমবেতভাবে হাত তুলে মুনাজাত করেননিতাঁরা সুযোগ পেলে এই সময়ে ব্যক্তিগতভাবে যিক্র ও মুনাজাত করতেন।) হাদীস থেকে বুঝা যে, রাসূলুল্লাহ (সা.)যিকর ও মুনাজাত একাকী পালন করতেনজামাতে উপস্থিত সাহাবীগণের সাথে একত্রে তা আদায় করতেন নাকখনোই সাহাবীগণ নামাযের পরের মুনাজাতে তাঁর সাথে শরীক হয়েছেন বলে বর্ণিত হয় নিপ্রায় অর্ধ শত সাহাবী থেকে বর্ণিত মুতাওয়াতিরপর্যায়ের হাদীসগুলির একটি হাদীসেও বর্ণিত হয় নি যে, একদিন একটি বারও তিনি মুক্তাদিগণের সাথে একত্রে মুনাজাত করেছেনপক্ষান্তরে সাধারণ ফযীলত জ্ঞাপক হাদীসের আলোকে অনেক আলিম একে সমর্থন করেছেনতাঁরা এই জামাতবদ্ধ মুনাজাত”-কে মুস্তাহাববলেছেনচার ইমাম ও পূর্ববর্তী সকল ফকীহ বলেছেন যে সালামের মাধ্যমে নামায শেষ হয়ে যায়হাদীস শরীফেও বলা হয়েছে যে তাকবীর দিয়ে সালাত শুরু এবং সালামেই সালাত শেষএগুলির সাথে সঙ্গতি রক্ষার জন্য তাঁরা বলেছেন যে, এই মুনাজাত নামাযের কোনো অংশ নয়নামাযের পরে অতিরিক্ত একটি মুস্তাহাব কাজনামায সালামের সাথে সাথেই শেষ হয়ে যায়, তবে কেউ যদি এর পরে অন্য কোনো মুস্তাহাব কাজ করে তাহলে দোষ নেই

এখানে মূল হলো মনের আবেগসহ মাসনূন মুনাজাতগুলি পালন করানামাযের পরে মুনাজাতের ক্ষেত্রে একাকী মুনাজাতই রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর রীতিএছাড়া মনোযোগ আনয়ন ও মাসনূন বাক্য পালনের জন্যও একাকী মুনাজাত উত্তমজামাতে ইমামের সাথেও মুনাজাত করা যেতে পারেতবে সদাসর্বদা এইরূপ জামাতবদ্ধ মুনাজাত করা, একে জরুরী মনে করা বা তা পরিত্যাগকারীকে খারাপ মনে করা খুবই অন্যায়আল্লাহ আমাদেরকে সহীহ বুঝ দান করুন আমীন


এব্যাপারে আরো বিস্তারিত জানতে ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রচিত মুনাজাত ও নামাজ বইটি পড়ার জন্য অনুরোধ করছি