সৎ ও আদর্শ নারী, রমণী বা স্ত্রী ; সৌভাগ্যের চাবি স্বরূপঃ
Honorable
and ideal woman, woman or Waif; The key to luck is luck
মুুফ্তি
আব্দুস সালাম হুসাইন আলী
[সতী-সাধবী, আদর্শ নারী
/ রমণী, ন¤্র-ভদ্র, কোমল-বিনয়ী, পূণ্যবতী
স্ত্রী, সচ্চরিত্রা
স্ত্রী সুখময়-মধুময় দাম্পত্য জীবন, সুখী পরিবার গঠন ও সৌভাগ্যের চাবি
স্বরূপ ঃ]
যাবতীয় ভূয়ুশী প্রশংসা নিখিল
বিশ্বের একচ্ছত্র অধিপতির জন্য যিনি ‘মানুষকে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন’[ ]। দুরূদ
সালাম ও শান্তি বর্ষিত হউক সর্বকালের, সর্বযুগের, সর্বশ্রেষ্ঠ
নবী ও রাসূল স¤্রাট, মহামানব ও
মানবতার পরম বন্ধু ‘মুহাম্মাদ
(ﷺ)
এর প্রতি যিনি নারী জাতির সম্মান প্রতিষ্ঠ করেছেন এবং সৎ, আদর্শ নারী
/ রমণী ও পূণ্যবর্তী স্ত্রীর ‘জান্নাতে গমন করা সহজ মর্মে ঘোষণা করেছেন’[ ]। সকল
সাহাবাসহ আপামোর জণসাধারণের প্রতিও সালাম ও শান্তি বর্ষিত হউক, আমীন।
০২. নারী প্রসঙ্গে কিছু লেখার
মত কেন এতো বড় স্পর্ধা ও দুঃসাহসিকতা?
এ ধরাপৃষ্ঠের সূচনা লগ্ন থেকে
নারী / রমনী জাতিকে নিয়ে এতো অধিক পরিমাণে প্রবন্ধ-নিবন্ধ, বই, কাব্যগ্রন্থ
রচিত হয়েছে যার সঠিক হিসাব নিরূপণ করা আদৌ সম্ভব নয়। সাহিত্য
চর্চার চরম উৎকর্ষ সাধনের চূড়ায় উড্ডীন হয়েছে নানান রসালো কাব্যগ্রন্থ। সেখানে
কেউ রচনা করেছে ইতিবাচক আর কেউ বা রচনা করেছে নীতিবাচক দিকে। কেউ
শানিত করেছে কলম সৈনিকের কলমকে নারীর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বিশ্রি বিবরণে আর কেউ বা
অশ্রুভেজা নয়নে সিক্ত করেছে পূণ্যবতী সৎ, আদর্শ নারী / রমনী ও স্ত্রীর উত্তম
বৈশিষ্ঠ্যমন্ডিত অনুস্মরণীয় গুণাবলীর। যা
অনুসন্ধানিচ্ছু মানবত্মাকে রিতিমতো ভাবিয়ে তুলে। তথা
একজন আদর্শ নারী / রমণী সহিষ্ণুনতা, সংযমতা, উদারতা, বদান্যতা, পরোপকারিতা
গুণের সাথে সাথে শতসহ¯্র অবহেলা, লাঞ্চনা-বঞ্চনা, নির্যাতন সহ্যকারিণী, ধৈর্য্য ও
পারাকাষ্ঠায় পর্বতসম লৌহমানবী, নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন কারিণীও বটে।
ইতিহাসের সর্নোজ্জল, গৌরবোজ্জল, ঐতিহ্যময়
অধ্যায়ের প্রতিটি পাঠেই মুসলিমা, মু’মিনা
সৎ, আদর্শ
নারী / রমণী ও পূণ্যবতী স্ত্রীগণ সুখময়-মধুময় দাম্পত্য জীবনে সৌভাগ্যের
চাবিস্বরূপ যে ভূমিকা রেখেছেন
তা অনুস্বীকার্য। মুসলিমা মহিলাদের কালজয়ী প্রতিভা ও
জীবনদর্শন, মানবিক
মূল্যবোধের ষ্ফুরণ, সমৃদ্ধশালী
পারিবারিক সুরক্ষিত দূর্ঘ,
যারা জাগর-
জাগরণের (বৈধ পন্থায় স্বামীর
মনোরঞ্জনে) গায়িকা ও সাম্যের কবি, শোষণ, বঞ্চনা, অত্যাচার, অনাচার, দুরাচার, কুসংস্কার, কুফর, শিরক ও বিদ’আতের বিরুদ্ধে যাদের কন্ঠ প্রতি
মুহুর্তই ধ্বণিত হচ্ছিল এবং সোচ্চার চিল, সতেজ ভূমিকা রেখেছেন সেই সব
পবিত্রাত্মা, ভালো-উত্তম
মনের অধিকারীণীদের স্মৃতিচারণই আমার এই দুঃসাহিসকতা।
০৩. আদর্শ নারীর পরিচয় ঃ
মহান আল্লাহ্ তা’আলার
ঐশীগ্রন্থ আল-কুরআন ও রাসূল (সা.)-এর মুখনিসৃত হাদীসে বর্ণিত একজন সতী-সাধবী, পূণ্যবতী
স্ত্রী, আদর্শ
নারী / রমণী, ন¤্র-ভদ্র, কোমল-বিনয়ী, সচ্চরিত্রা
স্ত্রী বা তরুণী বা কন্যা বা মহিলাই হলো আদর্শ নারী। আর
একজন আদর্শ নারী হলেন সুখময় দাম্পত্য জীবন, সুখী পরিবার গঠন ও সৌভাগ্যের চাবি
স্বরূপ ঃ
০৪. নারী ও পুরুষের পালনীয়
আবশ্যকীয় মূলনীতি ঃ
ইসলামের নির্দেশাবলীর জ্ঞান
লাভ, তার
প্রতি শ্বিাস ও কর্ম জীবনে বাস্তবায়নের জন্য প্রত্যেক নারী-পুরুষের নি¤œলেখিত
মূলনীতিটি সর্বাবস্থায় স্মরণ রেখে চলতে হবে। আর তা হচ্ছে, আল্লার
বিধানের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ এবং রাসূল (ﷺ)-এর জীবনকে
নিজের জন্য মডেল বা আদর্শরূপে গ্রহণ। এ উপলক্ষে
মহান আল্লাহ তা’আলা
এরশাদ করেন : ﴿وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمْرًا أَنْ يَكُونَ لَهُمْ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلالا مُبِينًا﴾ ‘আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (ﷺ) কোন কাজের
আদেশ করলে কোন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন ক্ষমতা নেই যে, আল্লাহ্ ও
তাঁর রাসূলের (ﷺ) আদেশ অমান্য করে সে প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায়
পতিত হয়।’[
]।
০৫. আদর্শ নারীর বৈশিষ্ট্য ঃ
প্রত্যেকটি জিনিসের ভাল ও
খারাপ দিক বা গুণাবলী রয়েছে। এই
গুণাবলীকে সে জিনিসের বৈশিষ্ট্য বলা হয়। এ
ধরাপৃষ্টের প্রতিপালক মহান আল্লাহ তা’আলা এবং তদ্বীয় রাসূল (সা.)-এর পক্ষ
থেকে মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট কিছু উত্তম আদর্শ রয়েছে। সেগুলোই
হচ্ছে আদর্শ নারীর বৈশিষ্ট্য। এই উত্তম
বৈশিষ্ট্যগুলো যে নারীর মধ্যে পাওয়া যাবে সেই হচ্ছে ইসলামের দৃষ্টিতে আদর্শ নারী
বলে বিবেচিত হবে।
০৬. মহান আল্লাহ আদর্শ নারীর
বৈশিষ্ঠ্যের ব্যাপারে এরশাদ করেন :
فَالصَّالِحَاتُ قَانِتَاتٌ حَافِظَاتٌ لِلْغَيْبِ بِمَا حَفِظَ اللَّهُ ৩৪ ‘অতঃএব যারা
সতী-সাধবী স্ত্রী তারা তাদের স্বামীদের ব্যাপারে আল্লাহর হুকুম পালনকারীনী এবং
স্বামীদের অনুপস্থিতিতে গোপনীয় বিষয়গুলির সংরক্ষণকারীণী হয়ে থাকে। কেননা
আল্লাহ নিজেই তার সংরক্ষণ করেন।’[ ]।
উক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ তা’আলা আদর্শ
নারীর পরিচয়ে তিনটি বৈশিষ্ঠ্যের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। যথা
:
ক. সতী-সাধবী ঃ ঐ নারীকে সতী-সাধবী বলা হয় যার
মধ্যে ইসলামের দৃষ্টিতে অসাধূ ও দৃষ্টিকটু কোন আচরণ পরিলক্ষিথ হয় না।
খ. আল্লাহর হুকুম-আহকাম, বিধি-বিধান
স্বতঃস্ফূর্তভাবে মেনে চলা।
গ. স্বামীর অনুপস্থিতিতে গোপনীয়তা রক্ষা করা। এগুলো
হচ্ছে আদর্শ নারীর বিশেষ গুণাবলী।
ইমাম ইবনু তাইমিয়্যা (রহ.) ফাতাওয়া
গ্রন্থে এই আয়াতের তাফসীরে বলেন : ‘নারী সর্বদা স্বামীর আনুগত্য করবে। তিনি
বলেন : আল্লাহ ও রাসূল (সা.)-এর পর নারীর আনুগত্য পাওয়ার জন্য স্বামীর চাইতে অন্য
কেউ অধিক হকদার নয়।’[
]।
হাফেজ ইবনু কাছীর (রহঃ) অত্র আয়াতের
তাফসীরে বলেন : صَالِحَاتٌ
বলতে সৎ, সতী-সাধবী
ও পূণ্যবতী / পূণ্যশীল নারীদেকের বুঝানো হয়েছে। ইবনু
আব্বাস (রাযি) প্রসমূখ বলেন : قَانِتَاتٌ
অর্থ হচ্ছে, স্বামীর
আনুগত্যকারীণী। আর حَافِظَاتٌ لِلْغَيْبِ
অর্থ সম্পর্কে সুদ্দী প্রমূখ বলেন : স্বামীর অনুপস্থিতিতে স্ত্রী নিজের মান-সম্মান, ইজ্জত-আব্রু
সংরক্ষণ করবে এবং স্বামীর সম্পদের সংরক্ষণ করবে।’[ ]।
অতএব র্বতমান যুগরে মর্ডান ও
প্রগতবিাদী নারীরা সাবধান। যারা
স্বামীর অবাধ্য হয়ে চলতে চায়, পুরুষরে উপর র্কতৃত্ব করতে চায়। লজ্জা
ও আবরু পদদলতি করে বপেরওয়াভাবে যা ইচ্ছা তা করতে চায়, যখোনে খুশি
যতেে চায়। নারী অধকিাররে নামে আখরোতরে বনিমিয়ে
দুনয়িা ও তার চাকচক্যি ক্রয় কতে চায়। সাবধান হে
মুসলমি বোন! তাদরে চক্রান্তরে জাল থকেে বঁেচে থাকার চষ্টো করুন। তাদরে
পথ ও চরত্রি থকেে সর্তক হোন। কারণ সদেনি
বশেী দূরে নয় যখন আপনার যৌবনরে চমক ও অহংকার শষে হব,ে মৃত্যুর বভিষিীকা আপনাকে ঘরিে ফলেব।ে
আপনি উপস্থতি হবনে সইে দনিে যদেনি শশিু র্বাধক্যে উপনতি হব।ে
র্অথাৎ - ক্বয়িামত দবিস।
০৭. সৎ রমণী, সতী-সাধবী
স্ত্রী হচ্ছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ ঃ
আব্দুল্লাহ বিন আমর থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ
ﷺ
বলেছেন : اَلدُّنْيَا كُلُّهَا مَتَاعٌ وَخَيْرُ مَتَاعِ الدُّنْيَا اَلْمَرْأَةُ الصَّالِحَةُ ‘সমস্ত পৃথিবী হচ্ছে সম্পদ
(ভোগ্যসামগ্রী), আর
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ (ভোগ্যসামগ্রী) হচ্ছে সৎ, সতী-সাধবী স্ত্রী’।[ ]। অর্থাৎ
: একজন মুসলিম পুরুষের জীবনে সঙ্গী নির্বাচন করার জন্য একজন নেক ও সৎ রমণী প্রয়োজন। আর
মুসলিম রমণীর উপর আবশ্যক হচ্ছে, নেক স্ত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। এ
অবস্থায় আল্ল¬াহ
দুজনের উপরই সন্তুষ্ট হন। তাই নেককার রমণীর মাধ্যমে শুধুমাত্র
দুনিয়ার জীবনই নয় আখিরাতের জীবনও শান্তিময় হতে পারে। সংসারে
ধৈর্য্য-সহ্য, সংযম
ও সহিষ্ণতার খুবই প্রয়োজন। এক্ষেত্রে
স্বামীর চেয়ে স্ত্রীকেই বেশি ধৈর্যশীল ও সংযমী হতে হয়।
আবু হুরায়রা (রা.) হতে র্বণতি। নবী
(ﷺ)
বলনে : تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاكَ “চারটি গুণরে কারণে কোন রমণীকে ববিাহ করা হয়, তার সম্পদ, বংশ র্মযাদা, সৌর্ন্দয ও
র্ধমভীরুতা। র্ধমভীরু নারী ববিাহ করে তুমি বজিয়ী
হও। তোমার দু’হাত ধুলোলুন্ঠতি
হোক।”
[বুখারী, অধ্যায়ঃ
ববিাহ, হা/
৪৭০০। ও মুসলমি, অধ্যায়ঃ
দুগ্ধপান, হা/
২৬৬১।
০৮. মহান আল্লাহ আদর্শ নারীর
বৈশিষ্ঠ্যের ব্যাপারে অন্যত্র এরশাদ করেন :
﴿عَسَى رَبُّهُ إِنْ طَلَّقَكُنَّ أَنْ يُبْدِلَهُ أَزْوَاجًا خَيْرًا مِنْكُنَّ مُسْلِمَاتٍ مُؤْمِنَاتٍ قَانِتَاتٍ تَائِبَاتٍ عَابِدَاتٍ سَائِحَاتٍ ثَيِّبَاتٍ وَأَبْكَارًا ৫﴾ ‘যদি নবী (ﷺ)
তোমাদের সকলকে পরিত্যাগ করেন তবে তাঁর প্রতিপালক দিতে পারেন তাঁকে তোমাদের অপেক্ষা
উৎকৃষ্টতর স্ত্রী- যারা হবে মুসলমান ঈমানদার, আনুগত্যকারিণী, তাওবা-কারিণী, ইবাদতকারিণী, রোযা
পালনকারিণী, অকুমারী
এবং কুমারী।’[
]।
উক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ তা’আলা আদর্শ
নারীর পরিচয়ে ছয়টি বৈশিষ্ঠ্যের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। যথা
:
ক. মুসলিম (আজ্ঞাবহ) আত্মসমর্পনকারীণী ; এমন স্ত্রী
যে, একনিষ্ঠভাবে
আল্লাহর যাবতীয় আদেশ-নিষেধ পালন করতে সর্বদা প্রস্তুত থাকে।
খ. মু’মিনা (বিশ্বাসী) ; যে অকৃত্রিম
নিষ্ঠাসহকারে ঈমান এনেছে। অর্থাৎ যাবতীয় বাধা-বিঘœ উপেক্ষা করে
আল্লাহ, তাঁর
রাসূল (ﷺ)
এবং তাঁর দ্বীনের প্রতি ঈমান আনয়ন করেছে।
গ. আনুগত্যশীলা হওয়া ; মহান
আল্লাহর, তাঁর
রাসূূল (ﷺ)
এবং তার স্বামীর আনুগত্যশীল হওয়া।
ঘ. তাওবা-কারিণী ; এমন নারী যে, সর্বক্ষণ
আল্লাহর নিকট নিজের কৃত অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থণা করে। কৃতকর্মের
জন্য সদা-সর্বদা লজ্জিত,
অনুশোচিত ও অনুতপ্ত হয়। যার মধ্যে
গর্ব-অহঙ্কার, গৌরব
ও আত্মম্ভরিতার কোন অবকাশই থাকে না বরং আদর্শ, ন¤্র-ভদ্র, সংযমী ও
কোমল-নরম প্রকৃতির হয়।
ঙ. ইবাদতকারিণী ; একজন আদর্শ নারীকে শ্রেষ্টত্বের ভূষণ
অর্জনে সর্বদা ইবাদতকারিণী হওয়ার বিকল্প নেই।
চ. সিয়াম পালনকারিণী ; ফরয ও নফল
সিয়াম পালন করা আদর্শ নারীর অন্যতম বিশেষণ।
০৯. রাসূলুল্লাহ ﷺ
আদর্শ নারীর বৈশিষ্ঠ্যের ব্যাপারে এরশাদ করেন :
‘তোমাদের মহিলাদেরে মধ্যে সর্বোত্তম
হচ্ছে এমন নারী যে, ¯েœহপরায়ন, ঘন ঘন
সন্তান প্রসবকারীণী,
সমব্যথী, সান্তনা
প্রধানকারীণী, সহযোগিনী’।[ ]।
এ হাদীসে আদর্শ নারীর চারটি
বৈশিষ্ট্য বর্ণিত হয়েছে। যথা :
ক. স্বামীর প্রতি গভীর অনুরাগী ও বন্ধু
ভাবাপন্ন হওয়া।
খ. অধিক সন্তান প্রসব করা ; দারিদ্রতার
ভয়ে সন্তান না নেয়া,
সন্তান হত্যা না করা,
প্রচলিত জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতি গ্রহন না করা। কেননা
রিযিকের একচ্ছত্র অধিপতি ও মালিক হলেন মহান আল্লাহ তা’আলা।
গ. স্বামীর কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করা ; স্বামীর
ইবাদত-বন্দেগী, তথা
ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকসহ
যাবতীয় কার্যাবলীতে সহযোগিতা করা।
ঘ. স্বামীর সমব্যথী হওয়া ; স্বামীর
সুখে সুখী, দুঃখে
দুঃখী হওয়া ও তার ব্যথায় সমব্যথী হওয়া।
১০. রাসূলুল্লাহ ﷺ
আদর্শ নারীর বৈশিষ্ঠ্যের ব্যাপারে অন্যত্র এরশাদ করেন :
تُنْكَحُ بِالْإِبْكَارِ فَإِنَّهُنَّ أَعْذَبُ أَفْوَاهًا وَأَنْتَقُ أَرْحَامًا وَأَرْضَى بِالْيَسِيْرِ ‘তোমরা কুমারীদের বিবাহ কর। কেননা
তাদের মুখ বেশি মিষ্টি,
তারা অধিক গর্ভধারিণী এবং অল্পে তুষ্ট’।[ ]।
এ হাদীসে আদর্শ নারীর তিনটি
বৈশিষ্ট্য বর্ণিত হয়েছে। যথা :
ক. নরম ও কোমল কণ্ঠের অধিকারীণী।
খ. অধিক গর্ভধারিণী। অল্প
গর্ভ ধারণ ও গর্ভ নিরোধ পরিহার করা।
গ. অল্পে তুষ্টি অর্জনকারিণী। স্বামীর
সামাজিক ষ্ট্যাটাজ ও অর্থনৈতিক সামর্থের আলোকে তার উপার্জিত ও আনীত সওদায় সন্তুষ্ঠ
থাকা।
১১. মহান আল্লাহ তা’আলা আদর্শ
নারীর বৈশিষ্ঠ্যের ব্যাপারে এরশাদ করেন :
﴿وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آَبَائِهِنَّ أَوْ آَبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَى عَوْرَاتِ النِّسَاءِ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَا الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ ৩১﴾
‘ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন
তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাযত করে। তারা
যেন যা সাধারণত: প্রকাশমান,
তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ
দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের ¯¦ামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, ¯¦ামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতু¯পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক
অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত
পুরুষ, ও
বালক, যারা
নারীদের গোপন অঙ্গ স¤পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের
সৌন্দর্য্য প্রকাশ না করে,
তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মু’মিনগণ, তোমরা সবাই
আল্লাহ্র সামনে তওবা কর,
যাতে তোমরা সফলকাম হও।’[ ]।
উক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ তা’আলা আদর্শ
নারীর পরিচয়ে আটটি বৈশিষ্ঠ্যের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। যথা
:
ক. রাস্তায় চলার পথে বা অন্যত্র দৃষ্টি অবনত ও
সংত রাখা।
খ. লজ্জাস্থান বা যৌনাঙ্গের হেফাযত করা।
গ. আল্লাহ কর্তৃক প্রদত্ত রূপ-লাবন্য ও
সৌন্দর্য প্রদর্শন না করা।
ঘ. পর্দা করা।
ঙ. ওড়না দিয়ে মাথা ও বক্ষদেশ ঢেকে রাখা।
চ. মাহ্রাম (যাদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ বৈধ
কিন্তু বিবাহ অবৈধ) ব্যতীত গাইরে মাহ্রাম (যাদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ অবৈধ কিন্তু
বিবাহ বৈধ) নিজের রূপ-লাবন্য ও সৌন্দর্য প্রদর্শন না করা।
ছ. গোপনীয় সাজ্জ-সজ্জার বহিঃপ্রকাশে জোরে
পদচারণা না করা এবং গৃহ থেকে বহির্গমনে সুগন্ধী ব্যবহার না করা।
জ. জীবনের সর্বক্ষেত্রে সফলতা আনয়নে অধিক
পরিমাণে তাওবাহ করা।
১২. মহান আল্লাহ তা’আলা আদর্শ
নারীর বৈশিষ্ঠ্যের ব্যাপারে অন্যত্র এরশাদ করেন :
﴿وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى وَأَقِمْنَ الصَّلَاةَ وَآَتِينَ الزَّكَاةَ وَأَطِعْنَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ ﴾ ‘তোমরা
গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে-মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না। নামায
কায়েম করবে, যাকাত
প্রদান করবে এবং আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের (সা.) আনুগত্য করবে। হে
নবী পরিবারের সদস্যবর্গ। আল্লাহ্ কেবল চান তোমাদের থেকে
অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পূর্ণরূপে পূত-পবিত্র রাখতে।’[ ]।
উক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ তা’আলা আদর্শ
নারীর পরিচয়ে পাঁচটি বৈশিষ্ঠ্যের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। যথা
:
ক. গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করা মূর্খতা যুগের
অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন না করা।
খ. সালাত ক্বায়িম করা।
গ. যাকাত প্রদান করা।
ঘ. আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.)-এর আনুগত্য করা।
ঙ. নিজেকে সর্বপ্রকার কালিমা ও কোলষমুক্ত রাখা।
১৩. মহান আল্লাহ তা’আলা আদর্শ
নারীর বৈশিষ্ঠ্য এবং উত্তম ও অধম নারীর দৃষ্টান্তে এরশাদ করেন :
﴿ضَرَبَ اللَّهُ مَثَلًا لِلَّذِينَ كَفَرُوا اِمْرَأَةَ نُوحٍ وَامْرَأَةَ لُوطٍ كَانَتَا تَحْتَ عَبْدَيْنِ مِنْ عِبَادِنَا صَالِحَيْنِ فَخَانَتَاهُمَا فَلَمْ يُغْنِيَا عَنْهُمَا مِنَ اللَّهِ شَيْئًا وَقِيلَ ادْخُلَا النَّارَ مَعَ الدَّاخِلِينَ ১০ وَضَرَبَ اللَّهُ مَثَلًا لِلَّذِينَ آَمَنُوا اِمْرَأَةَ فِرْعَوْنَ إِذْ قَالَتْ رَبِّ ابْنِ لِي عِنْدَكَ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ وَنَجِّنِي مِنْ فِرْعَوْنَ وَعَمَلِهِ وَنَجِّنِي مِنَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ ১১ وَمَرْيَمَ ابْنَتَ عِمْرَانَ الَّتِي أَحْصَنَتْ فَرْجَهَا فَنَفَخْنَا فِيهِ مِنْ رُوحِنَا وَصَدَّقَتْ بِكَلِمَاتِ رَبِّهَا وَكُتُبِهِ وَكَانَتْ مِنَ الْقَانِتِينَ
১২﴾
‘‘আল্লাহ্ তা'আলা
কাফেরদের জন্যে নূহ-পতœী ও লুত-পতœীর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন। তারা
ছিল আমার দুই ধর্মপরায়ণ বান্দার গৃহে। অত:পর তারা
তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করল। ফলে নূহ ও
লুত তাদেরকে আল্লাহ্ তা'আলার
কবল থেকে রক্ষা করতে পারল না এবং তাদেরকে বলা হল: জাহান্নামীদের সাথে জাহান্নামে
চলে যাও।’
(১০) ‘‘আল্লাহ্
তা'আলা
মু’মিনদের
জন্যে ফেরাউন-পতœীর
দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন। সে বলল : হে আমার পালনকর্তা! আপনার
সন্নিকটে জান্নাতে আমার জন্যে একটি গৃহ নির্মাণ করুন, আমাকে
ফেরাউন ও তার দুস্কর্ম থেকে উদ্ধার করুন এবং আমাকে যালেম সম্প্রদায় থেকে মুক্তি
দিন।’
(১১) ‘আর
দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন ইমরান-তনয়া মারিয়ামের, যে তার সতীত্ব বজায় রেখেছিল। অত:পর
আমি তার মধ্যে আমার পক্ষ থেকে জীবন ফুঁকে দিয়েছিলাম এবং সে তার পালনকর্তার বাণী ও
কিতাবকে সত্যে পরিণত করেছিল। সে ছিল বিনয়
প্রকাশকারীণীদের একজন।’ (১২)[ ]।
১৪. নারীদের মধ্যে
শ্রেষ্ঠত্বে কামালিয়াত (পূর্ণতা) অর্জন কারিণী দুই পথিকৃত নারী ঃ
عَنْ أَبِي مُوسَى رضى الله عنه قَالَ، قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ : كَمَلَ مِنَ الرِّجَالِ كَثِيرٌ، وَلَمْ يَكْمُلْ مِنَ النِّسَاءِ إِلاَّ آسِيَةُ امْرَأَةُ فِرْعَوْنَ، وَمَرْيَمُ بِنْتُ عِمْرَانَ، وَإِنَّ فَضْلَ عَائِشَةَ عَلَى النِّسَاءِ كَفَضْلِ الثَّرِيدِ عَلَى سَائِرِ الطَّعَامِ .
আবূ মূসা (রাযি.) থেকে বর্ণিত। রাসূল
(ﷺ)
বলেছেন : পুরুষদের মধ্যে বহুসংখ্যক লোক শ্রেষ্ঠত্বে কামালিয়াত (পূর্ণতা) হাসিল
করেছে ; কিন্তু
নারীদের মধ্যে ফির’আউনের
স্ত্রী ‘আসিয়া’ এবং ইমরানের
কন্যা ‘মারইয়াম’ ছাড়া আর
কেউই পূর্ণতা অর্জনে সক্ষম হয়নি। তবে আয়েশার
(রাযি.) মর্যাদা সব নারীদের ওপর এমন, যেমন সারীদের (শুরুয়া ও ঝোলে ভিজা
রুটি) মর্যাদা সর্বপ্রকার খাদ্যের ওপর’।[ ]।
১৫. আদর্শ মা হলেন প্রধান
শিক্ষক আর মাতৃকোড়ই শিশুর জন্য প্রথম বিদ্যানিকেতন ঃ
আধুনিক শিক্ষার জনকরা বলেছেন, ‘আমাকে একজন
শিক্ষিত মা দাও, আমি
শিক্ষিত জাতি দেব।’
ইসলামের আলোকিত জীবেন একজন নারীকে কিভাবে দেখা হয়? ইসলামে নারী
সমাজ তথা মায়ের জাতিকে প্রত্যেক সন্তানের জন্য প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় অর্থাৎ
মাতৃকোড়ই শিশুর জন্য প্রথম বিদ্যানিকেতন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সমাজ
জীবনে যা কিছুর প্রয়োজন,
মা-ই শিশুকে ছোট বেলা থেকেই কোলে-কাখে রেখে শিখিয়ে থাকে। মায়ের
শিখানো বিষয়গুলোই প্রতিটি সন্তান বড় হয়ে বাস্তব জীবনে প্রতিফলন ঘটায়।
১৬. শিশুদেরকে ছোট থাকতেই
ইসলামি আদব কায়দা শেখাতে হবে ঃ
হাদিসে আছে প্রতিটি শিশুই
ইসলামি ফিতরাত নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। তার
পিতা-মাতাই তাকে অন্য ধর্মে দীক্ষিত করে। তাই শিশু
যখন কথা বলতে শিখে তখন সোনামনি “আব্বু‘” বল,
না বলে আল্ল¬াহু, আল্ল¬াহু আকবার, সুব্হাল্ল¬াহ্ ইত্যাদি
শেখাতে হবে। বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর সময় “বিস্মিল্ল¬াহ” বলে খাওয়াতে
হবে। অন্যথায় শয়তানের বাচ্চা তাতে অংশ
নিবে। শিশুদেরকে ছোট থাকতেই ইসলামি আদব
কায়দা শেখাতে হবে। শৈশবে শিক্ষা না দিলে পরবর্তীতে
শিক্ষার ভিত্তি দৃঢ় হয় না। আমরা যদি
ঘুম পাড়ানোর গান কিংবা ছড়া দিয়ে ঘুম না পাড়িয়ে সুব্হানাল্ল¬াহ, আলহামদুলিল্ল¬াহ, ইত্যাদি
জিকিরের সাথে ঘুম পাড়াই,
তাহলে জিকিরের সওয়াব যেমন পাবেন তেমনি আপনার অবুঝ সন্তানের মধ্যেও এর প্রভাব
পড়বে। মা-বাবা ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের নিজ
হাতে খাওয়ার সময় ডান হাতে খাওয়ার শিক্ষা দেবেন। কেননা
ডান হাত দিয়ে সামনের দিক থেকে এবং ডান দিক থেকে খাওয়া শুরু করা।[
]।
তবে খাওয়ার শুরুতে
বিস্মিল্লাহ্ এবং খাওয়ার শেষে আলহামদুলিল্ল¬াহ্, বলার শিক্ষা দিতে হবে। খাওয়ার
পর পানি খেতে হয়। এসময় ডান হাতে গ্ল¬াস ধরা, বসে পান করা, পানির
পাত্রে শ্বাস না ফেলা এবং তিন নিঃশ্বাসে পানি পান করা সুন্নাত। ঘুম
থেকে উঠে আল্ল¬াহর
শুকরিয়া আদায় করা থেকে আবার ঘুমুতে যাওয়া পর্যন্ত সবকিছুই ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী
আমাদেরকে করতে হবে এবং শিশুদের শিক্ষা দিতে হবে। নিয়মিত
চুল পরিষ্কার করা ভাল। চুল আঁচড়ানোর সময় ডান দিক থেকে শুরু
করতে হবে। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন : রাসুল (সা.) অযূ,
চুল-দাড়ি আঁচড়ানো ও জুতা পরিধানসহ অন্যান্য সকল (শুভ) কাজ ডান দিক থেকে শুরু
করা পছন্দ করতেন।[ ]।
শিশুদেরকে দাঁত পষ্কিারের
অভ্যাস করাতে হবে। হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, রাসূল
(সা.) বলেছেন : মিসওয়াক মুখ পরিষ্কারকারী এবং আল্ল¬াহর সন্তুষ্টি লাভের উপায়।’[ ]।
ঘরে ঢুকতে বিস্মিল্ল¬াহ বলে
ঢুকতে হবে। এছাড়া ঘরে প্রবেশ করে সবাইকে সালাম
দিতে হবে। ছেলে-মেয়েদেরকে আমরা অনেক সময় অন্যের
ঘরে বিভিন্ন প্রয়োজনে পাঠাই। এক্ষেত্রেও
কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে। রাসুলে আকরাম (সা.) বলেছেন : তোমাদের
কেউ তিনবার অনুমতি প্রার্থনার পরেও যদি তাকে অনুমতি না দেয়া হয়, তাহলে
সেখানে না যাওয়াই উত্তম।[ ]।
শিশুদেরকে সালাম দেয়া / নেয়া
শেখাতে হবে। কারও সাথে সাক্ষাৎ হলে সালাম
বিনিময়ের পর ডান হাতে মুসাফা করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এ
সময়কালের কৃতকর্মের হিসেব দিতে হবে। বিধর্মীদের
মতো যাচ্ছে-তাই করে চললে হবে না। আদর্শ নারীর
গুণাবলী আপনার মধ্যে কতটুকু আছে একটু ভেবে দেখুন। একজন
পুণ্যবতী নারী ইচ্ছে করলে তার বেনামাযী স্বামী ও সন্তানদেরকে ইসলামের সঠিক পথে
পরিচালিত করতে পারেন। তাই বলা যায়, একজন আদর্শ
রমণী আখেরাতের জীবনকেও সুন্দর করতে সাহায্য করে।
১৭. একজন আদর্শ নারীর
আবশ্যকীয় পালনীয় অন্যান্য বৈশিষ্ঠ্য ঃ
একজন আদর্শ নারীর বৈশিষ্ট্য
কেমন হবে। সংসার জীবনে স্বামী-সন্তানের জন্য
তার কাজগুলো যদি হয় উত্তম গুণাবলী সম্পন্ন তবেই দুনিয়াতে ভোগ করবে স্বর্গীয় সূধা। সমাজ
পাবে আদর্শ প্রজন্ম আর আখিরাতের জীবনে থাকবে তাদের জন্য মুক্তি ও চিরকালীন
সুখ-শান্তির পুরস্কার। বৈশিষ্ট্যগুলো নি¤œরূপ ঃ
ক. পর্দাশীল ও লজ্জাশীল হওয়া
ঃ
আল্ল¬াহ তা’আলা
প্রত্যেক নারী-পুরুষের ওপর পর্দা ফরজ করেছেন। তাই
পর্দা পালন প্রত্যেক সম্ভ্রানত নারী-পুরুষের জন্য একান্ত আবশ্যক। পর্দার
মাধ্যমেই মানুষের মাঝে জাগরিত হয় লজ্জা। পর্দা ও
লজ্জাই একজন পর্দাশীল নারীকে যে কারো সঙ্গেই অবাধ মেলামেশা, চলফেরা থেকে
হেফাজত করে। রাসূল (সা.) বলেছেন : اَلْحَيَاءُ شُعْبَةٌ مِّنَ الْإِيْمَانِ ‘লজ্জা হলো ঈমানের অঙ্গ’।
খ. ধৈর্যশীল হওয়া ঃ
ধৈর্য মহৎ গুণ। পারিবারিক
জীবনে ধৈর্যশীল নারীর বিকল্প নেই। আদর্শ
পরিবার গঠনে ধৈর্যশীলতার বিকল্প নেই। আর এ
ধৈর্যশীলতা আল্ল¬াহর
একটি স্পেশাল গুণ। আল্লাহ তা’আলা বলেন : ﴿إِنَّ اللهَ مَعَ الصَّابِرِيْنَ﴾ ‘নিশ্চয়
আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন’।
গ. সত্যবাদী
হওয়া ঃ
সত্যবাদীতা মানব জীবনের
শ্রেষ্ঠ গুণের একটি। যার মাঝে যত বেশি সত্যবাদীতা রয়েছে
তার মাঝে ততবেশি ঈমানদারিতা রয়েছে। নারী যদি
সত্যবাদী হয় পরিবারের প্রত্যেকটি লোকই সত্য বলতে শিখে। রাসুল
(সা.) বলেছেন : اَلصِّدْقُ يُنْجِيْ وَالْكِذْبُ يُهْلِكْ ‘সত্য মানুষকে নাজাত দেয়; মিথ্যা
মানুষকে ধংস করে’।
ঘ. কোমলতা ঃ
মানুষের সর্বোত্তম গুণের
একটি হচ্ছে কোমলতা। কোমল চরিত্রের নারী পরিবারের জন্য
আল্ল¬াহর
সীমাহীন নিয়ামত স্বরূপ। সুন্দর আচার-আচরণ কোমলতার দ্বারাই
প্রকাশ পায়। এক ব্যক্তি রাসূল (সা.)-এর ধংসের দু’আ করেন : اَلسَّامُ عَلَيْكُمْ (আসসামু
আলাইকিুম) বলে। তখন উম্মুল মু’মিনীন আয়িশা
(রাযি.) ঐ ব্যক্তিকে অভিশম্পাত করলে রাসূল (সা.) বলেন : يَاعَائِشَةَ ! إِنَّ اللهَ يُحِبُّ الرِّفْقَ وَاللَّيِّنَ হে আয়িশা!
নিশ্চয় আল্ল¬াহ
তা’আলা
দয়া ও কোমলাকে ভালোবাসেন।
ঙ. উত্তম ব্যবহারকারী হওয়া ঃ
পৃথিবীতে সেই ব্যক্তিই
সন্মানিত ও অনুকরণীয় আদর্শ যার ব্যবহার উত্তম। পরিবারে
নারী যদি উত্তম ব্যবহারের অধিকারী হয়, তবে অবশ্যই তার থেকে পরিবারের
সদস্যগণ উত্তম ব্যবহার শিখবে। আর উত্তম
ব্যবহারকারীরাই কিয়ামতের দিন আল্ল¬াহর একান্ত নেক দৃষ্টি লাভে ধন্য হবে।
চ. শোকরগুজারকারী হওয়া ঃ
ঈরিবার প্রতিপালনে ভালো-মন্দ, অভাব-অনটন
সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা’আলার
ওপর শোকরগুজারকারী নারীর মর্যাদা অত্যধিক। যা দেখে
পরিবারের ছোট্ট সোনা-মনিরা শোকরগুজারকারী হতে শিখবে। কিভাবে
সর্বাবস্থায় আল্ল¬াহর
শোকর আদায় করতে হয়। তাইতো শোকরগুজারকারী নারী পরিবারের
জন্য আল্ল¬াহর
রহমত।
ছ. আনুগত্যশীল হওয়া ঃ
পরিবারের কর্তা ব্যক্তি পুরুষ
হাক বা নারী হোক তাঁর প্রতিটি কথা-বার্তা বিনয়ের সহিত মেনে নেয়াই হচ্ছে আনুগত্য। তাইতো
পরিবারে আনুগত্যই হচ্ছে শান্তির একমাত্র পথ। আনুগত্য
মেনে নেয়ার মাঝেই উন্নত নেতৃত্ব ও মননশীলতা তৈরি হয়।
জ. দায়িত্বশীল হওয়া ঃ
পরিবারের প্রতিটি কাজ-কর্ম
সম্পাদন, ধন-সম্পদ
সংরক্ষণসহ যাবতীয় দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করা নারীর গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কারণ
দায়িত্বশীলতা অনেক বড় গুণ। সন্তানের
মাঝে দায়িত্বের প্রতি সচেতনতা সৃষ্টি করা প্রত্যেক মায়েদের আবশ্যকীয় কর্তব্য।
সুতরাং পরিবারের প্রত্যেক
শিশুর প্রথম শিক্ষকই হলেন মা। মা শিশুকে
উপরের দায়িত্বগুলো যথাযথভাবে নিজের পালনের মাধ্যমেই শিক্ষা দিবেন। শিশুরা
মাকে দেখে দেখেই শিখবে। সুতরাং মাকেই সব সময় উত্তম
শিক্ষাগ্রহণ করে বাস্তবায়ন করা একান্ত আবশ্যক। এ
গুণগুলো প্রত্যেক পরিবারের নারীদের মাঝে যত বেশি বাস্তবায়িত হবে, তাদের
সন্তান-সন্তুতি বড় হয়ে সে গুণের বহিঃপ্রকাশই করবে কর্মজীবনে, এটাই
স্বাভাবিক। আল্লাহ আমাদের দেশের তথা সমাজের
প্রত্যেক নারীকে উক্ত গুণের অধিকারী হওয়ার তাওফিক দান করুন, আমিন।
১৮. স্বামীর হক (অধিকার)
আদায়ে আদর্শ নারীর করণীয় ঃ
আব্দুল্লাহ বিন আউফা থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ ﷺ
বলেছেন : لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِغَيْرِ اللَّهِ لأَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لا تُؤَدِّي الْمَرْأَةُ حَقَّ رَبِّهَا حَتَّى تُؤَدِّيَ حَقَّ زَوْجِهَا وَلَوْ سَأَلَهَا نَفْسَهَا وَهِيَ عَلَى قَتَبٍ لَمْ تَمْنَعْهُ ‘আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে যদি
আমি সিজদা করার আদেশ করতাম তবে নারীকে আদেশ করতাম তার স্বামীকে সিজদা করতে। শপথ
সেই সত্তার যার হাতে আমি মুহাম্মাদের প্রাণ, কোন নারী তার পালনকর্তার হক আদায়
করতে পারবে না যে পর্যন্ত তার স্বামীর যাবতীয় হক আদায় না করবে। এমনকি
যদি উটের হাওদাজে বসে তাকে সহবাস করতে আহ্বান করে, তবুও সে বাধা দিবে না’।[ ]।
১৯. সৌভাগ্যের বস্তু চারটি ঃ
নবী কারীম (ﷺ)
বলেছেন : ‘সৌভাগ্যের
বস্তু চারটি’। যথা
:
ক. আর্দশ বা নকে রমণী।
খ. প্রশস্ত আবাসস্থল।
গ. সৎ প্রতবিশেী এবং
ঘ. আরাম দায়ক আরোহী।
আর চারটি বস্তুতে রয়ছেে
র্দুভাগ্য। তন্মধ্যে উল্লখেযোগ্য হলো : (১) অসৎ
নারী।”
[ ]।
এ সমস্ত উক্তি ও অনুরূপ আরো
অনকে হাদীছ থকেে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণতি হয় য,ে একজন মুসলমি পুরুষরে জীবন সঙ্গী
নর্বিাচন করার জন্য একজন নকে ও সৎ রমণী অনুসন্ধান করা কত গুরুত্বর্পূণ। আর
মুসলমি রমণীর উপর আবশ্যক হচ্ছে নকে স্ত্রী হসিবেে নজিকেে প্রতষ্ঠিতি করার জন্য
র্সবোত্তম গুণাবলী সমূহ র্অজন করার চষ্টো করা। যাতে
আল্লাহ তার উপর সন্তুষ্ট হন। ইহ-পরকালে
তার জীবন হয় পূণ্য ও সফলতায় পরপর্িূণ।
হে মুসলমি বোন! নম্নিে নকে
রমণী হওয়ার জন্য কুরআন-সুন্নাহ ও র্পূবসূরী নকে মনষিীদরে কতপিয় উক্তি সন্নবিশে করা
হল। এগুলোর শখিুন এবং নজিরে জীবনে তা
বাস্তবায়ন করার চষ্টো করুন। কনেনা নবী (ﷺ)
বলনে, “শক্ষিা
র্অজন করার মাধ্যমে জ্ঞান লাভ করা যায়, ধর্যৈরে অনুশীলনরে মাধ্যমে সহষ্ণিু
হওয়া যায়। যে ব্যক্তি কল্যাণ লাভরে চষ্টো কর,ে তাকে উহা
প্রদান করা হয়।”
[ ]।
রাসুলে আকরাম সাল¬াল¬াহু আলাইহি
ওয়াসাল¬াম
বলেন, “শিক্ষা
অর্জন করার মাধ্যমে জ্ঞান লাভ করা যায়। ধৈর্যের
অনুশীলনের মাধ্যমে সহিষ্ণু হওয়া যায়। যে ব্যক্তি
কল্যাণ লাভের চেষ্টা করে তাকে কল্যাণ প্রদান করা হয়” [ ]।
২০. আদর্শ নারী ও মুসলিম
রমনীর জান্নাত অর্জন অতি সহজ ঃ
মুসলিম রমণীগণ সঠিকভাবে তার
দায়িত্ব পালন করলে তিনি জান্নাতে প্রবেশ করবেন। আব্দুর রহমান বিন ইউফ (রাযি.) থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)
বলছেনে : إِذَا صَلَّتِ الْمَرْأَةُ خَمْسَهَا وَصَامَتْ شَهْرَهَا وَحَفِظَتْ فَرْجَهَا وَأَطَاعَتْ زَوْجَهَا قِيلَ لَهَا ادْخُلِي الْجَنَّةَ مِنْ أَيِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ شِئْتِ ‘কোন মহিলা যখন, পাঁচ ওয়াক্ত
সালাত আদায় করবে, এক
মাসের সিয়াম পালন করবে,
নিজের যৌনাঙ্গ সংরক্ষণ করবে এবং স্বামীর আনুগত্য করবে তখন সে, জান্নাতের
যে কোন ফটক দিয়ে (জান্নাতে) প্রবেশ করতে পারবে’। [ ]।
২১. আদর্শ নারীর বিশেষ
বৈশিষ্ঠ্য হলো পর্দা পালন করা ঃ
পর্দা মুসলিম বোনদের জন্য
শ্রেষ্ঠ ইবাদত। এটি একটি অবশ্যপালনীয় কাজ। আল্লাহ
তা’আলা
পবিত্র কুরআনে এবং রাসুল (সা.) সহীহ হাদিসে বার বার এর উপর তাকিদ দিয়েছেন। মনের
পর্দার সাথে সাথে বাইরের পর্দাও পালন করতে হবে। আল্ল¬াহ তায়ালা
নিশ্চয়ই মনের খবর জানেন। তাই মুসলিম বোন ও আমাদের
মা-চাচিদেরকে বাড়িতেও পর্দার সাথে জীবন অতিবাহিত করতে হবে।
পর্দার সাথে যৌনতা, অশ¬ীলতা ও
বেহায়হাপনা সংশ্লি¬ষ্ট। আমাদের দেশে
রাস্তাঘাটে কিংবা কর্মস্থলে যতগুলো যৌন হয়রানীর ঘটনা ঘটে তার চেয়ে বেশি ঘটে নিজ
বাড়িতে ও প্রতিবেশী যুবকদের মাধ্যমে। তবে অধিকাংশ
ক্ষেত্রেই মহিলারা তা গোপনে সহ্য করে নেন। কোন
ক্ষেত্রে তা প্রকাশ পেলেও লোক-পারিবারিক / বংশীয় সম্মান রক্ষা ও লোক-লজ্জার ভয়ে
সেগুলো ধামা-চাপা দেয়া হয়। সেজন্য
মুসলিম নারীকে অবশ্যই বাড়িতে পর্দার নিয়ম মেনে চলতে হবে। পর্দা
রক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ ও সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করে না দিলে পিতা, স্বামী ও
পুত্রকে আল্ল¬াহর
কাছে জবাবদেহী করতে হবে।
এ ব্যাপারে মহান আল্ল¬াহ তা’আলা বলেন : ﴿ يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَابِيبِهِنَّ ذَلِكَ أَدْنَى أَنْ يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا ৫৯﴾ ‘হে নবী! আপনি আপনার পতিœগণকে ও কন্যাগণকে
এবং মু’মিনের
স্ত্রীদেরকে বলুন, তারা
যেন তাদের চাদরের কিয়দাংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে
তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না।’[ ]।
তাছাড়া মহিলারা সুগন্ধী
ব্যবহার করে বাইরে বের হবে না। হাদিসে
বর্ণিত হয়েছে, “যে
নারী সুগন্ধী মেখে ঘর থেকে বের হয় অতঃপর মানুষের সম্মুখ দিয়ে হেটে চলে যাতে করে
তারা তার সুবাশ অনুভব করে তবে সেই নারী ব্যভিচারী।” [ ]।
গৃহিণীকে স্বামীর সামর্থ, সুবিধা-অসুবিধার
কথা বুঝতে হবে। ইসলাম ধর্মের বিধি-বিধানের আলোকে
একজন পুরুষ পরিবার পরিচালনা করবেন। প্রতিটি
পরিবারকে সুখের নীড়ে পরিণত করতে আল্ল¬াহ পাকের নির্দেশনা ও রাসুল (সা.)-এর
দৃষ্টান্ত অনুসরণ করা প্রয়োজন। সহীহ
বুখারিতে বর্ণিত হয়েছে,
“রাসুলে আকরাম (সা.) বলেছেন, উষ্ট্ররোহী মহিলাদের মধ্যে কুরাইশ বংশীয় মহিলারা সর্বোত্তম। তারা
শিশুদেও প্রতি স্নেহশীলা এবং স্বামীর মর্যাদা রক্ষার্থে উত্তম হেফাজতকারিণী।’ [ ]।
নারীরা অতিরিক্ত কল্পনাপ্রবণ। এতে
অনেক সময় দাম্পত্য জীবনে সমস্যা সৃষ্টি হয়। নারী জাতি
স্বভাবতই স্নেহ আদর-ভালোবাসার প্রত্যাশী। পরিপূর্ণ
আদর-সোহাগে সে সাংসারিক কাজে আরো গতিশীল হয়ে উঠে। অন্য
দিকে অবহেলা ও লাঞ্ছনায় সে লজ্জাবতী লতার মতো নুইয়ে পড়ে। তবে
এটাও চিন্তার বিষয় একজন নারী দীর্ঘদিন ধরে লাভ করা বাবার স্নেহ, ভাইয়ের আদর
ও মায়ের সোহাগপূর্ণ একটি পরিবেশ ছেড়ে এসেছে। তাই
পরিবর্তী পরিস্থিতি মেনে নিতে কিছুটা সময় লাগে। তাই
এক্ষেত্রে একমাত্র স্বামী বেচারাই তার কষ্ট লাঘব করতে পারে । আর
স্বামীও যদি তাকে প্রশ্রয় না দেয় তাহলে তার মনের জমানো কথাগুলো বলার মতো কোন যায়গা
সে খুঁজে পায় না, তাই
সংসারে ধীরে ধীরে অশান্তি নেমে আসে।
সংসারের শান্তির জন্য আকাশ
কুসুম কল্পনা, অনিশ্চিত
ধারণা ও অযৌক্তিক অনুমান থেকে আমাদের বেঁচে থাকতে হবে। বিয়ের
পর স্ত্রীর ভরণ-পোষণ,
কাপড়-চোপড়, সোনা-গয়নাসহ
সকল চাহিদা স্বামীকে পূরণ করতে হবে। তাই বলে
আপনি যা খুশি তা চাইতে পারবেন না। না দিতে
পারলে বলতে পারবেন না “তোমার
সংসারে এসে একদিনও শান্তি পেলাম না,” তোমার মতো অকর্মার সাথে আমার বিয়ে
হয়েছে, না
জানি সামনে আরো কত দুর্গতি আছে,” অথবা আপনি যদি বলেন, রহমান সাহেবও তো তোমার মতো চাকরিই
করেন, উনি
পাঁচ তলা বাড়ি করতে পারলে আমরা সারা জীবন ভাড়া বাসায় থাকবো কেন? এমনও শোনা
যায় কাদের সাহেবও তো ব্যবসা করেন, তোমার ব্যবসায় বার বার লোকসান হবে কেন? যদি বলা হয়
যা চাই তা দিতে না পারলে তিন কথা বলে আনছো কেন? অথবা কেউ কেউ বলেন আমাকে সেচ্ছায়
বিদায় করে দাও, আামি
কারো কাছে কোন অভিযোগ করবো না।
এ ব্যাপারে তিরমিযি শরীফে বলা
হয়েছে, যে
নারী কোনরূপ অসুবিধা ছাড়াই বিনা কারণে স্বামীর নিকট তালাক চায়, তার জন্য
জান্নাতের সুঘ্রাণ হারাম”। স্বামীর
কথার বাইরে স্ত্রীর চলার কোন ব্যবস্থা নেই।
আনাস বনি মলকে (রা.) থকেে
র্বণতি। রাসূল (ﷺ)
বলনে : “কোন
ধরণরে রমণী জান্নাতী আমি কি তোমাদরেকে বলে দবি না? তাঁরা বললনে, হ্যাঁ হে
আল্লাহর রাসূল! তনিি বললনে,
তোমাদরে জান্নাতী রমণীগণ হচ্ছ,ে স্বামীর প্রতি প্রমে নবিদেনকারীনী
এবং অধকি সন্তান প্রসবকারীনী। তার
আনুগত্যরে প্রকাশ হচ্ছ,ে
তার সাথে খারাপ আচরণ করা হলে বা সঠকি করা হল,ে স্বামীর কাছে গয়িে বল,ে এই আমার
হাত আপনার হাতে সপে দলিাম,
আপনি সন্তুষ্ট না হওয়া র্পযন্ত আমি চোখরে পলক ফলেব না। র্অথাৎ
আমি কোন আরাম নবি না কোন আনন্দ বনিোদন করব না যতক্ষণ আপনি আমার প্রতি খুশি না হন।” [ ]।
আবু হুরায়রা (রা.) হতে র্বণতি। তনিি
বলনে : قِيلَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيُّ النِّسَاءِ خَيْرٌ قَالَ الَّتِي تَسُرُّهُ إِذَا نَظَرَ وَتُطِيعُهُ إِذَا أَمَرَ وَلا تُخَالِفُهُ فِي نَفْسِهَا وَمَالِهَا بِمَا يَكْرَهُ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)
কে প্রশ্ন করা হল হে আল্লাহর রাসূল! কোন শ্রণেীর নারী র্সবোত্তম? তনিি বলনে, “তার পরচিয়
হচ্ছে তুমি তার দকিে চাইলে সে তোমাকে আনন্দতি করব,ে কোন নর্দিশে দলিে তা বাস্তবায়ন করব।ে
তার নজিরে ব্যাপারে এবং স্বামীর সম্পদরে ব্যাপারে সঠকি পসন্দ করনে না এমন কাজ করে
তার বরিোধীতা করবে না।” [ ]।
অন্য র্বণনায় এসছে,ে একদা
রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কে লক্ষ্য করে বললনে : أَلا أُخْبِرُكَ بِخَيْرِ مَا يَكْنِزُ الْمَرْءُ الْمَرْأَةُ الصَّالِحَةُ إِذَا نَظَرَ إِلَيْهَا سَرَّتْهُ وَإِذَا أَمَرَهَا أَطَاعَتْهُ وَإِذَا غَابَ عَنْهَا حَفِظَتْهُ “আমি কি তোমাকে মানুষরে
আর্কষণীয় শ্রষ্ঠে গুপ্তধন সর্ম্পকে বলে দবি না? তা হচ্ছ,ে নকে রমণী। সঠকি
তার দকিে তাকালে সে তাকে আনন্দতি করে দয়ে, কোন আদশে করলে তা পালন করে এবং
বাড়তিে না থাকলে তার ইজ্জত-আবরু রক্ষা কর।ে” [ ]।
ওহে মুসলমি বোন নজিরে প্রতি
লক্ষ্য করুন, উক্ত
গুণাবলী কি আপনার চরত্রিে সমাবশে ঘটাতে পরেছেনে। আপনি
কোথায়? আপনার
কি উচতি নয় পালনর্কতার সন্তুষ্টরি পথ অনুসন্ধান করা? দু’নয়িা-আখরোতে সুখরে জীবন গঠন করার
জন্য সঠকি খদেমত করা ও আনন্দময় সংসার গড়তে সচষ্টে হওয়া?
২২. স্বামীর খদেমত জান্নাতে
প্রবশে করার মাধ্যমঃ
হুসাইন বনি মহেসান (রা.) বলনে, আমার ফুফু
আমার কাছে র্বণনা করছেনে। একদা তনিি নবী (ﷺ)
কাছে কোন প্রয়োজনে গয়িছেলিনে। প্রয়োজন শষে
হলে নবী (ﷺ) তাকে জজ্ঞিসে করলনে : أَذَاتُ زَوْجٍ أَنْتِ قَالَتْ نَعَمْ قَالَ كَيْفَ أَنْتِ لَهُ قَالَتْ مَا آلُوهُ إِلا مَا عَجَزْتُ عَنْهُ قَالَ فَانْظُرِي أَيْنَ أَنْتِ مِنْهُ فَإِنَّمَا هُوَ جَنَّتُكِ وَنَارُكِ “তোমার কি সঠকি আছ?ে তনিি
বললনে, হ্যাঁ। তনিি
বললনে, তার
জন্য তুমি কমেন স্ত্রী?
আমি বললাম, একান্ত
অপারগ না হলে তার খদেমত করতে কোন ত্রুটি করি না। তনিি
বললনে, ভালভাবে
খয়োল রাখব,ে
তুমি করিূপ তার খদেমত করে থাক। কনেনা সইে
তোমার জান্নাত অথবা জাহান্নাম।” [ ]। র্অথাৎ -
তার অনুগত্য ও খদেমত করলে জান্নাতে যাবে আর অবাধ্য হলে জাহান্নামে যাব।ে
শায়খ আলবানী বলনে, ‘এই
হাদীছ থকেে সুস্পষ্টভাবে এ দলীল পাওয়া যায়, স্বামীর আনুগত্য করা স্ত্রীর উপর
ওয়াজবি এবং সাধ্যরে মধ্যে তার খদেমত করা তার উপর আবশ্যক। সন্দহে
নইে য,ে
খদেমতরে প্রথম বষিয় হচ্ছ,ে
স্বামীর গৃহরে তদারকি করা তার সন্তান-সন্তুতকিে সুষ্ঠুভাবে লালন-পালন করা।’
উম্মে সালামা (রা.) থকেে
র্বণতি। তনিি বলনে, রাসূলুল্লাহ্
(ﷺ)
বলছেনে : أَيُّمَا امْرَأَةٍ مَاتَتْ وَزَوْجُهَا عَنْهَا رَاضٍ دَخَلَتِ الْجَنَّةَ “যে নারী এমন অবস্থায় মৃত্যু
বরণ করবে য,ে
সঠকি তার প্রতি সন্তুষ্ট,
সে জান্নাতে প্রবশে করব।ে” [ ]।
২৩. আর্দশ রমণীর বশিষে কতপিয়
আলামতঃ
উল্লখেতি হাদীছ সমূহ থকেে
আর্দশ রমণীর পরচিয়ে নম্নি লখিতি বষিয়গুলো জানা যায়ঃ
ক. আর্দশ রমণী নকে ও পূণ্যরে কাজে অংশ নয়ে এবং
আপন পালনর্কতার ইবাদত করে তাঁর হক আদায় কর।ে
খ. আর্দশ রমণী এমন ক্ষত্রেে স্বামীর আনুগত্য
করবে যাতে আল্লাহর নাফরমানী নইে।
গ. নজিরে ইজ্জতরে হফোযত করব-ে বশিষে করে
স্বামীর অনুপস্থতিতি।ে
ঘ. স্বামীর সম্পদরে হফোযত করবে ও তার
সন্তানদরেকে সঠকিভাবে লালন-পালন করব।ে
ঙ. র্সবদা এমনভাবে স্বামীর সম্মুখর্বতী হবে
যাতে তনিি খুশি হন এবং এজন্য নজিরে অতরিক্তি সৌর্ন্দয ও হাসি মুখ তার সামনে প্রকাশ
করতে সচষ্টে হব।ে
চ. সঠকি হলে যে কোন প্রকারে তাকে খুশি করার
র্সবাত্মক প্রচষ্টো করব।ে কনেনা সইে তার জান্নাত অথবা
জাহান্নাম। যমেনটি ইতোর্পূবে হাদীছে উল্লখে হয়ছে।ে
ছ. তার সঙ্গ চাইলে কোনভাবইে তাতে বাধা দয়োর
চষ্টো করবে না। তার ডাকে সাড়া দবিে এবং পরপর্িূণরূপে
নজিকেে তার কাছে সর্মপন করব।ে
২৪. স্বামীর আনুগত্যের বাস্তব
প্রমাণ ঃ
ইবনে আবদে রাব্বেহী আন্দালুসী
“ত্ববায়িউন
নিসা” গ্রন্থে
লিখেছেন, মেয়েটিকে
নিয়ে তিনি ২০ বছর সংসার করেছেন। আমি সর্বদাই
তার উপর খুশি থেকেছি। একদিন আমি ঘরে ফজরের দু’রাকাত
সুন্নাত আদায় করলাম। এমন সময় মুয়াজ্জিন নামাজের ইকামত
দিতে লাগলো। হঠাৎ একটি বিষধর বিচ্ছু দেখে আমি
সেটি একটি পাত্র দিয়ে ঢেকে স্ত্রীকে বল¬াম যয়নাব! আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত
নাড়াচাড়া করবে না, নামায
শেষে ফিরে দেখি বিচ্ছুটি তাকে দংশন করেছে। যেহেতু তাকে
বলেছিলাম আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত তুমি নড়াচড়া করবে না, তাই
বিচ্ছুটি পাত্রের নীচ থেকে বের হয়ে তাকে দংশন করল কিন্তু সে আমার নির্দেশের লংঘন
করল না এবং সেখান থেকে পালিয়ে গেল না । সে স্বামীর
এতদূর আনুগত্যকারীলী ছিল।
আজকাল স্বামী একটু সচ্ছল হলেই
স্ত্রী কাজের মেয়ে রাখার জন্য চাপাচাপি করেন। অথচ
হাদিসে আছে, নবী
কন্যা ফাতেমা (রা.) সব কাজ নিজ হাতে করতেন, আটা বানানোর যাতা ঘুরাতে ঘুরাতে হাতে
ফোস্কা পড়ে গিয়েছিল,
কলসি দিয়ে পানি আনতে আনতে কোমড়ে দাগ পড়ে গিয়েছিল। অনেক
মহিলা তার স্বামীর উপর প্রভাব বিস্তার করতে চান। এটি
নিত্যান্তই গর্হিত কাজ।
২৫. পুরুষরা নারীদের উপর
কর্তৃত্বশীল ঃ
﴿اَلرِّجَالُ قَوَّامُونَ عَلَى النِّسَاءِ بِمَا فَضَّلَ اللَّهُ بَعْضَهُمْ عَلَى بَعْضٍ وَبِمَا أَنْفَقُوا مِنْ أَمْوَالِهِمْ فَالصَّالِحَاتُ قَانِتَاتٌ حَافِظَاتٌ لِلْغَيْبِ بِمَا حَفِظَ اللَّهُ وَاللَّاتِي تَخَافُونَ نُشُوزَهُنَّ فَعِظُوهُنَّ وَاهْجُرُوهُنَّ فِي الْمَضَاجِعِ وَاضْرِبُوهُنَّ فَإِنْ أَطَعْنَكُمْ فَلَا تَبْغُوا عَلَيْهِنَّ سَبِيلًا إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيًّا كَبِيرًا ৩৪﴾ পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ
জন্য যে, আল্লাহ
একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের
অর্থ ব্যয় করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা
এবং আল্লাহ্ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে। আর
যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদোপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং (মৃদ)
প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর
তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয়
আল্লাহ্ সবার উপর শ্রেষ্ঠ।’ [ ]।
২৬. স্বামী পটানোর কৌসল ঃ
♣ জৈনকা ধার্মিকা এক শাশুরী তার সদ্য
নবাগত বউমাকে উপদেশ দিতে গিয়ে বললেন ঃ
শাশুরী ঃ শোন মা! পুরুষরা
হচ্ছে বন্য ঘোড়ার মত,
যদি রেগে যায় তাহলে সংসার উলট-পালট করে দিবে, তুমি যদি তোমার ঘরে শান্তি চাও তাহলে
কখনো তার উপর হুকুম চালানোর চেষ্টা করবে না, কারণ হুকুমের দাস হয়ে থাকার জন্য তার
জন্মই হয়নি। তবে হ্যাঁ, তার সাথে সব
সময় ছায়ার মত থাকার চেষ্টা করো, তার প্রয়োজনের দিকে নজর রেখো, তার দেখা-শোনায় কোন অবহেলা করোনা, তাহলে দেখবে
সে কেমন সোজা ঘোড়ার মত তোমার কথায় চলে। যদি এই
কায়দায় না চলতে পার মা?
তবে কখনোই ওর মনে জায়গা করতে পারবে না।
বউমা ঃ আপনার উপদেশ কখনোই
ভুলবো না মা।[ ]।
২৭. বিয়ের পর আদর্শ নারীর
করণীয় ঃ
বিয়ের পর স্বামীর সংসারকে আপন
করে নিতে হয়। সংসারের প্রয়োজনে ঘরের বাইরে সকল
কাজে স্বামীকে সাহায্য করতে হবে। হযরত আবু
বকর (রা.) এর কন্যা আসমা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যুবাইর
(রা.) আমাকে যখন বিবাহ করেন তখন একটি ঘোড়া বাদে অন্য কিছুই তার ছিল না। আমি
ঘোড়াটিকে দানাপানি খাওয়াতাম, ঘাস ও খড়ের যোগান দিতাম। ঘোড়ার
জন্য খেজুরের আঁটি কুটে তার খাদ্যে মিশাতাম, সার্বক্ষণিক তাকে খাওয়াতাম ও পানি
পান করতাম। রাসুলুল¬াহ (সা.)
যুবাইরকে যে জমি দিয়েছিলেন সেখান থেকে আমি খেজুরের বিচির বোঝা নিজের মাথায় নিয়ে
হেঁটে হেঁটে বাড়ি আসতাম। ঐ স্থানটি আমাদের বাড়ি থেকে দু’মাইল দূরে
ছিল’। [
]।
২৮. আদর্শ ও নেক সন্তানের
জন্য কুরআনী প্রার্থণা ঃ
হে মুসলিম বোন! আমাদেরকে
একদিন আল্ল¬াহর
কাছে ফিরে যেতে হবে। মহিলাদেরকে জীবনের সিংহভাগই স্বামী ও
সন্তানের সেবায় কাটাতে হয়। সন্তানকে
বকা-ঝকা বা গালি-গালাজ না করে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়? গন্তানকে
সঠিক সময়ে আদব কায়দা শিক্ষা না দিলে পরবর্তীতে তারা মানতে চায় না। এক্ষেত্রে
গালমন্দ না করে আমরা আল্ল¬াহর কাছে হেদায়েত চাইব। মর্মে
মহান আল্লাহ তা’আলা
এরশাদ করেন : ﴿قَالَ رَبِّ أَوْزِعْنِي أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِي أَنْعَمْتَ عَلَيَّ وَعَلَى وَالِدَيَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صَالِحًا تَرْضَاهُ وَأَصْلِحْ لِي فِي ذُرِّيَّتِي إِنِّي تُبْتُ إِلَيْكَ وَإِنِّي مِنَ الْمُسْلِمِينَ ১৫﴾ (আল্ল¬াহর কাছে
বলব) : (হে আল্লাহ !) “আমাকে
এরূপ ভাগ্য দান কর, যাতে
আমি তোমার নেয়ামতের শোকর করি, যা তুমি দান করেছ আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে এবং যাতে আমি
তোমার পছন্দনীয় সৎকাজ করি। আমার সন্তাানদেরকে
সৎকর্মপরায়ণ কর, আমি
তোমার প্রতি তওবা করলাম এবং আমি আজ্ঞাবহদের অন্যতম।’ [ ]।
যাদের সন্তান নেই তারা আল্ল¬াহর কাছে
বলবেন : ﴿رَبِّ هَبْ لِي مِنْ لَدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاءِ ৩৮﴾ “হে আমার প্রতিপালক আমাকে তুমি
তোমার নিকট হতে সৎ বংশধর দান কর। নিশ্চয়ই
তুমি প্রার্থনা শ্রবনকারী।’ [ ]।
২৯. আদর্শ নারীর আবশ্যকীয়
পরিত্যজ্য হলো ; দারিদ্রতার
কারণে সন্তান হত্যা না করা ঃ মহান আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করনে : وَلَا تَقْتُلُوا أَوْلَادَكُمْ مِنْ إِمْلَاقٍ نَحْنُ نَرْزُقُكُمْ وَإِيَّاهُمْ ‘‘দারদ্রিতার কারণে তোমরা
তোমাদরে সন্তানদরে হত্যা করবে না, আমি তোমাদরেকে ও তাদরেকে জীবকিা দয়িে থাক।ি’’ এখানে
আল্লাহ তা’আলা
সন্তানরে অধকিাররে কথা বলছনে। মাতা পতিা ও
সন্তান বাদ দলিে মানুষরে পারবিারকি জীবন বলতে আর কছিু থাকে না। ইসলামে
পরবিারকি জীবনকে এভাবইে গুরুত্ব দয়ো হয়ছে।ে সমাজ
জীবনরে সবচয়েে মুল্যবান ধাপ হল পরবিার। পরবিার
ব্যতীত মানুষ মানুষে পরণিত হতে পারে না।
দারদ্রিতার ভয়ে সন্তান হত্যা করাকে
আল-কুরআনরে একাধকি স্থানে কঠোর ভাষায় নষিধে করা হয়ছে।ে এ
ধরনরে কাজরে নন্দিা করা হয়ছেে প্রচন্ডভাব।ে যমেনঃ وَلَا تَقْتُلُوا أَوْلَادَكُمْ خَشْيَةَ إِمْلَاقٍ نَحْنُ نَرْزُقُهُمْ وَإِيَّاكُمْ إِنَّ قَتْلَهُمْ كَانَ خِطْئًا كَبِيرًا ‘‘তোমাদরে সন্তানদরে
দারদ্রি-ভয়ে হত্যা করবে না। তাদরেকে
আমইি রয্কি দইে এবং তোমাদরেকওে। নশ্চিয়
তাদরে হত্যা করা মহাপাপ।’’ [ ]।
এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা ভবষ্যিত
দারদ্রিতার ভয়ে সন্তান হত্যা করতে নষিধে করছেনে। আর
সূরা আনআমরে এ আয়াতে দারদ্রিতার কারণে সন্তান হত্যা করতে নষিধে করছেনে। কাজইে
ফলাফল দাড়াল র্বতমান কংিবা ভবষ্যিত দারদ্রিতা, বাস্তব দারদ্রিতা কংিবা দারদ্রিতার
আশংকা, যে
কোন কারণইে হোক, সন্তান
হত্যা করা বরিাট অপরাধ যে সকল সন্তানদরে হত্যা করা হয়, হাশররে
ময়দানে তাদরেকে উপস্থতি করে হত্যাকরীদরে বরিুদ্ধে স্বাক্ষী হসিাবে আল্লাহ প্রশ্ন
করবনে।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলনেঃ وَإِذَا الْمَوْءُودَةُ سُئِلَتْ ৮ بِأَيِّ ذَنْبٍ قُتِلَتْ ৯ ‘‘যখন
জীবন্ত-সমাধস্থি কন্যাকে জজ্ঞিসে করা হবে কী অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়ছেলি?’’ [ ]।
হাদীসে এসছেে :
يقول ابن مسعود قلت يا رسول الله أي الذنب أعظم؟ قال : أن تجعل لله ندا وهو خلقك، قلت ثم أي؟ أن تقتل ولدك خشية أن يطعم معك، قلت ثم أي؟ قال : أن تزاني حليلة جارك، ثم تلا رسول الله صلى الله عليه وسلم : ﴿وَالَّذِينَ لَا يَدْعُونَ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آَخَرَ وَلَا يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلَّا بِالْحَقِّ وَلَا يَزْنُونَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا . يُضَاعَفْ لَهُ الْعَذَابُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيَخْلُدْ فِيهِ مُهَانًا ﴾
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)
বলনে, আমি
প্রশ্ন করলাম ইয়া রাসূলাল্লাহ! সবচয়েে বড় পাপ কী? রাসূলুল্লাহ (ﷺ)
বললনে, ‘‘যে
আল্লাহ তোমাকে সৃষ্টি করছেনে, তার সাথে তুমি যদি শরীক কর।’’ তারপর আমি
প্রশ্ন করলাম, এর
পরে সবচয়েে বড় পাপ কী?
তনিি বললনে, ‘‘তোমার
সাথে খাবে এ ভয়ে তুমি যদি তোমার সন্তানকে হত্যা কর।’’ আমি আবার
প্রশ্ন করলাম তারপরে বড় পাপ কী? তনিি বললনে, ‘‘তুমি যদি তোমার প্রতবিশেীর স্ত্রীর
সাথে ব্যভচিার করো।’’
এ কথা বলে তনিি আল-কুরআনরে এ আয়াতগুলো পাঠ করলনে : ﴿وَالَّذِينَ لَا يَدْعُونَ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آَخَرَ وَلَا يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلَّا بِالْحَقِّ وَلَا يَزْنُونَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا . يُضَاعَفْ لَهُ الْعَذَابُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيَخْلُدْ فِيهِ مُهَانًا﴾ র্অথঃ ‘‘যারা
আল্লাহর সাথে কোন ইলাহ আহবান করে না। আল্লাহ যার
হত্যা নষিধে করছেনে যর্থাথ কারণ ব্যতরিকে তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভচিার করে না। যে
এগুলো করে সে শাস্তি ভোগ করব।ে কয়িামতরে
দনি তার শাস্তি দ্বগিুণ করা হবে এবং সখোনে সে স্থায়ী হবে হীন অবস্থায়।’’ [ ]।
র্সবাবস্থায়ই সন্তান হত্যা করা হারাম। দারদ্রিরে
কারণে হোক বা অন্য কোন কারণে বা কোন কারণ ব্যতীত। এ
আয়াতে দারদ্রিতার কারণে সন্তান হত্যা করার নষিধে এসছেে এ জন্য য,ে জাহলেী
যুগে দারদ্রিতার কারণে বা অপমানরে ভয়ে সন্তান হত্যার প্রচলন ছলি।
প্রকাশ থাকে য,ে
সন্তান-সন্তত,ি
স্ত্রী, পরবিার-পরজিন
আল্লাহর ন’িআমত
সমূহরে মধ্যে অন্যতম ন’িআমত। আল্লাহ
তা’আলা
বলনেঃ
﴿وَاللَّهُ جَعَلَ لَكُمْ مِنْ أَنْفُسِكُمْ أَزْوَاجًا وَجَعَلَ لَكُمْ مِنْ أَزْوَاجِكُمْ بَنِينَ وَحَفَدَةً وَرَزَقَكُمْ مِنَ الطَّيِّبَاتِ أَفَبِالْبَاطِلِ يُؤْمِنُونَ وَبِنِعْمَةِ اللَّهِ هُمْ يَكْفُرُونَ﴾ ‘‘আর আল্লাহ তোমাদরে থকেইে তোমাদরে জোড়া সৃষ্টি করছেনে। এবং
তোমাদরে যুগল থকেে তোমাদরে জন্য সন্তান-পৌত্রাদি সৃষ্টি করছেনে এবং তোমাদরে উত্তম
জীবনোপকরণ দান করছেনে। তবুও কি তারা মথ্যিায় বশ্বিাস করবে
এবং তারা আল্লাহর নআেমাত অস্বীকার করব?ে’’ [ ]।
মাতা পতিা, স্ত্রী, সন্তানাদ,ি
নাতী-নাতনী নয়িে সংসার ও পরবিার যে আল্লাহ তাআলার কত বড় দান, কত বশিাল
নআেমাত তা ঐ ব্যক্তি কছিুটা অনুধাবন করছেে যার এগুলো ছলি এখন নইে। কংিবা
এখন আছে কন্তিু থকেওে নইে। তাই সন্তান
হত্যা করা একজন মানুষ হত্যা করার অপরাধ তো বটইে, সাথে সাথে আল্লাহর এ বশিাল নআেমাতকে
প্রত্যাখ্যান করার অপরাধে অপরাধী হব।ে
কন্তিু র্বতমান পাশ্চাত্যরে ভোগবাদী
সমাজে পরবিার গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছ।ে আমাদরে
সমাজওে এর হাওয়া লগেছে।ে ইসলামী সমাজে পরবিাররে গুরুত্ব ও
ভূমকিাকে কোন অবস্থাতে ছোট করে দখোর সুযোগ নইে। যা
কছিু পারবিারকি শৃংখলার বরিুদ্ধে যায়, ইসলাম অবশ্যই তার বরিুদ্ধে দন্ডায়মান।
মানুষ একটি ভুল দৃষ্টভিংগরি উপর
ভত্তিি করে সন্তান হত্যা করত। সটেি হল
দারদ্রিতা বা দারদ্রিতার ভয়। পতিা মনে
করত এ সন্তানরে খাবার দাবারে দায়ত্বিটা আমার নজিরে। আমি
কভিাবে এ দায়ত্বি পালন করব?
কন্তিু তার এ ধারণাটা মোটইে ঠকি নয়। প্রতটিি
প্রাণীর রযিক তথা জীবনোপকরণরে দায়ত্বি আল্লাহরাববুল আলামীনরে। তনিি
বলনেঃ وَمَا مِنْ دَابَّةٍ فِي الْأَرْضِ إِلَّا عَلَى اللَّهِ رِزْقُهَا ‘‘ভূ-পৃষ্ঠে বচিরণকারী সকলরে
জীবকিার দায়ত্বি আল্লাহরই।’’ [ ]।
তনিি আরো বলনেঃ وَكَأَيِّنْ مِنْ دَابَّةٍ لَا تَحْمِلُ رِزْقَهَا اللَّهُ يَرْزُقُهَا وَإِيَّاكُمْ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ ‘‘এমন কত জীবজন্তু আছে যারা
নজিদেরে খাদ্য বহন করে না। আল্লাহই
রয্কি দান করনে তাদরেকে ও তোমাদরেকওে, এবং তনিি র্সবশ্রোতা, র্সবজ্ঞ।’’ [ ]।
এখন প্রশ্ন থকেে যায় য,ে সন্তান
হত্যা করা হারাম। কন্তিু সন্তান যনে জন্ম গ্রহণ করতে
না পারে এ জন্য জন্ম নয়িন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করলে কি হারামরে মধ্যে গন্য হব?ে সটো কি
আল্লাহর এ নষিধেরে আওতায় পড়ব?ে
দারদ্রিতার ভয়ে নয়, বরং অন্য
কোন কারণে যদি জন্ম নয়িন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়, তবে তা জায়যে বলে অনকে আলমে মতামত
দয়িছেনে। কন্তিু যদি দারদ্রিতার কারণে কংিবা
দারদ্রিতার ভয়ে জন্ম নয়িন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়, তাহলে তা যে হারাম হব,ে এতে কারো
দ্বমিত নইে। এ আয়াতও তার প্রমাণ। আর
আমাদরে সমাজে দারদ্রিতার ভয় দখেয়িে জন্ম নয়িন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করার জন্য মানুষকে
উৎসাহ দয়ো হয় এবং প্রচার চালানো হয়। এটা জায়যে
হওয়ার প্রশ্নই আসে না। তবে দারদ্রিতার ভয়ে জন্ম নয়িন্ত্রণ
পদ্ধতি গ্রহণ করা পৃথবিীতে চলে আসা একটি জীবন্ত সন্তান হত্যা করার মত সমান অপরাধ
যে নয়, তাতে
সন্দহে নইে। তবে তা যে অপরাধ, এটা
ন:িসন্দহেে বলা যায় আল্লাহরাববুল আলামীনরে এ অসীয়তরে আলোক।ে
৩০. আদর্শ নারীর আবশ্যকীয়
পরিত্যজ্য হলো ; অশ্লীলতা
পরিহার করা ঃ
মহান আল্লাহ তা’আলা এরশাদ
করনে : وَلَا تَقْرَبُوا الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ ‘‘প্রকাশ্যে হোক বা গোপনে
অশ্লীল কাজরে কাছে যাবে না’’। এটি
এমন একটি বষিয় যার উপর নর্ভির করে মুসলমি পরবিার ও সমাজরে পবত্রিতা, শৃংখলা, সুখ, পারস্পারকি
আস্থা ও ভালোবাসা নর্ভির কর।ে এটি যমেন
বাহ্যকিভাবে ব্যক্তি ও পরবিারকে পবত্রি রাখে তমেনি আধ্যাত্মকিভাবে তাকে পবত্রি ও
পরচ্ছিন্ন রাখ।ে
সকল প্রকার অশ্লীলতা-বহোয়াপনাই অপরাধ। এ
আয়াতে অশ্লীল কাজ বলতে জনো-ব্যভচিার, নারী-পুরুষরে অবাধ মলো-মশোকে বুঝানো
হয়ছে।ে এটি গোপনে করা যমেন অপরাধ তমেনি প্রকাশ্যে করা
বা করে প্রকাশ করা আরো বড় অপরাধ। ব্যভচিার
সর্ম্পকে আল্লাহ অন্য আয়াতে বলছেনেঃ وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَا إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا ‘‘আর ব্যভচিাররে নকিটর্বতী হয়ো
না, এটা
অশ্লীল ও নকিৃষ্ট আচরণ।’’ [ ]।
শুধু যনো-ব্যভচিার থকেে বরিত থাকতে
বলা হয়ন,ি
বরং তার ধার-েকাছে যতেওে নষিধে করা হয়ছে।ে যা তার
দকিে আহবান কর,ে
তার দকিে যতেে উৎসাহ যোগায় তার সবগুলোই নষিদ্ধি। এমন
অনকে মানুষ আছনে যারা এ সকল অশ্লীলতা থকেে পুত-পবত্রি থাকনে। কন্তিু
অন্য লোকরো এ গুলো করলে তার প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করনে না। মনে
মনে ভাবনে, এরা
করে করুক। তাতে আমার কি আসে যায়। এগুলো
তাদরে করা ছাড়া উপায় নইে। এ বয়সে বা এ সমাজে এগুলোর প্রয়োজন আছ,ে ইত্যাদি
মানসকিতা পোষণ করনে।
এ সকল মানুষদরেকে মহান আল্লাহর এ
বাণীটি শোনানো যতেে পারে : إِنَّ الَّذِينَ يُحِبُّونَ أَنْ تَشِيعَ الْفَاحِشَةُ فِي الَّذِينَ آَمَنُوا لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ فِي الدُّنْيَا وَالْآَخِرَةِ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ ‘‘যারা মুমনিদরে মধ্যে
অশ্লীলতার প্রসার কামনা কর,ে
তাদরে জন্য আছে দুনয়িা ও আখরিাতে যন্ত্রণাদায়ক শাস্ত।ি
আর আল্লাহ জাননে তোমরা জান না।’’ [ ]।
৩১. উপসংহার ঃ
মহান আল্লাহ তা’আলা আমাদের
সকলকে উপরোক্ত আলোচনা থেকে বাস্তবে শিক্ষা গ্রহন কওে ইহ-লৌলিক ও পার-লৌকিকের অনাগত
জীবনে সুখ-সাচ্ছন্দ্য,
সমৃদ্ধী, শান্তি-সফলতা, মঙ্গল ও
কল্যাণ অর্জনের তাওফীক দান করুন, আমীন।
৩২. নির্ঘন্ট / তথ্যপঞ্জি /
সহায়ক গ্রন্থাবলী ঃ
১.
আল-কুরআনুল কারীম প্র. ড. মুজীবুর রহমান কর্তৃক অনূদীত।
২.
আদর্শ নারী, আব্দুর
রাজ্জাক বিন ইউসুফ।
৩. আদর্শ রমণী, আব্দুল
হামীদ ফাইযী আল-মাদানী।
৪.
মুসলিম মহিলা।
৫.
জান্নাতী মহিলা।
৬.
অন্যান্য সহায়ক গ্রন্থাবলী।