Friday, 1 February 2019

কুরআন-সুন্নাহর আলোকে কবীরা গুনাহ সমূহঃ


কুরআন-সুন্নাহর আলোকে কবীরা গুনাহ সমূহঃ
রচনায় : ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.)
সংগ্রহ ও সঞ্চয়নে : মুফতি আব্দুস সালাম

 মুমিন সর্বদা মাকরূহ বা অপছন্দনীয় কর্ম পরিহার করতে চেষ্টা করবেনআর হারাম ও কবীরা গোনাহ-সমূহ থেকে শত যোজন দূরে থাকতে সদা সচেষ্ট থাকবেনআমরা জানি যে, সকল চেষ্টা সত্ত্বেও কিছু অপরাধ হবেইতবে ছোটখাট পাপ ও ভুলভ্রান্তি আল্লাহ নেক কর্মের কারণে ক্ষমা করে দেনএজন্য কঠিন পাপগুলো থেকে দূরে থাকার জন্য সর্বদা সজাগ থাকতে হবে
কবীরা গুনাহের সংজ্ঞা, সংখ্যা ও পরিচয় সম্পর্কে উলামায়ে কিরাম অনেক কথা লিখেছেনযে সকল পাপের বিষয়ে কুরআন কারীম বা হাদীস শরীফে কঠিন গজব, শাস্তি বা অভিশাপের উল্লেখ করা হয়েছে বা যে সকল কর্মকে কুরআন বা হাদীসে কঠিন পাপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলোকে কবীরা গুনাহ হিসেবে গণ্য করা হয়এছাড়াও অনেক পাপকে কবীরা বলা হয়েছেএছাড়া যে কোনো সাধারণ পাপও সর্বদা করলে তা বড় পাপে পরিণত হয়
ইমাম যাহাবী আল-কাবাইরগ্রন্থে কবীরা গুনাহ বিষয়ক আয়াত ও হাদীস সমূহ সংকলিত করেছেনযে সকল পাপকে কুরআন বা হাদীসে বড় পাপ বা কঠিন শাস্তি, গজব বা অভিশাপের কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে তিনি সেগুলির তালিকা প্রদান করেছেনআমি এখানে সেগুলো সংক্ষেপে উল্লেখ করছিপরে এগুলোর মধ্য থেকে বিশেষ কতগুলো পাপ যা আমাদের নেক কাজগুলোকে বিনষ্ট করে দেয় সেগুলোর বিস্তারিত আলোচনা করব, ইন্শা আল্লাহ
এ সকল পাপ বা অপরাধকে আমরা দুইভাগে ভাগ করতে পারি: ব্যক্তিগত বা হক্কুল্লাহ বিষয়ক ও সামাজিক বা হক্কুল ইবাদ বিষয়কযদিও উভয় প্রকার পাপই আল্লাহর অবাধ্যতা ও পরস্পর স¤পৃক্ত, তবুও সংক্ষেপে বুঝার জন্য দুভাগ করে আলোচনা করছি:
ক. হক্কুল্লাহ বিষয়ক কবীরা গুনাহসমূহ
১. ঈমান বিষয়ক: শিরক, কুফর, নিফাক, বিদআত, আল্লাহর শাস্তি থেকে নিরাপত্তা-বোধ করা, আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া, তকদীরে অবিশ্বাস করা, গনক বা জ্যোতিষীর কথা সত্য মনে করা, অশুভ, অমঙ্গল বা অযাত্রায় বিশ্বাস করা, মক্কার হারামে যে কোনো প্রকার অন্যায় করার ইচ্ছা, যাদু শিক্ষা বা ব্যবহার, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য জবাই করা, নিজের জীবন, সম্পদ, ও সকল মানুষের চেয়ে রাসূলুল্লাহ -কে বেশি ভালবাসায় ত্রটি থাকা, রাসূলুল্লাহ -এর নামে মিথ্যা হাদীস বলা, নিজের পছন্দ-অপছন্দ রাসূলুল্লাহ -এর সুন্নাত ও শরীয়তের অনুগত না হওয়া, বিদআতে লিপ্ত হওয়া, আত্মহত্যা করা
২. ফরয ইবাদত পরিত্যাগ বিষয়ক: সালাত পরিত্যাগ, যাকাত প্রদান থেকে বিরত থাকা, ওজর ছাড়া রমযানের সিয়াম পালনে অবহেলা, জুমআর সালাত পরিত্যাগ করা, সুযোগ থাকা সত্ত্বেও হজ্ব আদায় না করা, ধর্ম পালনে অতিশয়তা বা সুন্নাতের অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি ইবাদত করা, সালাতরত ব্যক্তি সামনে দিয়ে গমন করা
৩. হারাম খাদ্য ও পানীয়: মদপান, মৃত প্রাণী, প্রবাহিত রক্ত ও শূকরের গোশত ভক্ষণ করা, স্বর্ণ বা রৌপ্যের পাত্রে পান করা
৪. পবিত্রতা ও অন্যান্য অভ্যাস বিষয়ক: পেশাব থেকে পবিত্র না হওয়া, মিথ্যা বলার অভ্যাস, প্রাণীর ছবি তোলা বা আঁকা, কৃত্রিম চুল লাগান, শরীরে খোদাই করে উল্কি লাগানপুরুষের জন্য মেয়েলী পোশাক বা চাল চলন, টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পোশাক পরা, সোনা ও রেশমের ব্যবহার, গোফ বেশি বড় করা, দাড়ি না রাখামেয়েদের জন্য পুরুষালী পোশাক বা আচরণ, সৌন্দর্য প্রকাশক পোশাক পরিধান করে, মাথা, মাথার চুল বা শরীরের কোনো অংশ অনাবৃত রেখে বা সুগন্ধি মেখে বাইরে যাওয়া
৫. অন্তরের বা মনের পাপ: অহংকার, গর্ব করা, নিজেকে বড় ভাবা, নিজের মতামত বা কর্মের প্রতি পরিতৃপ্ত থাকা, রিয়া, হিংসা, কোনো মুসলিমকে হেয় বা ছোট ভাবা, ক্রোধ, প্রশংসা ও সম্মানের লোভ, সম্পদের লোভ, কৃপণতা, নিষ্ঠুরতা, দ্বীনী ইল্ম পার্থিব উদ্দেশ্যে শিক্ষা করা, ইল্ম গোপন করা
এগুলোর মধ্যে কিছু পাপের সাথে মানুষের অধিকার জড়িতমিথ্যা হাদীস বলা এমনিতেই ভয়ঙ্করতম পাপসাথে সাথে এ মিথ্যা দ্বারা যারা বিপথগামী হয় তাদের সকলের পাপের ভাগ পেতে হয় মিথ্যাবাদীকেযাকাত প্রদানে অবহেলা করলে একদিকে আল্লাহর অবাধ্যতা ও ইসলামের রুকন নষ্ট করা হয়সাথে সাথে সমাজের দরিদ্রদেরকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়ইল্ম গোপন করলে সাধারণত সমাজের মানুষেরা অজ্ঞতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হন এবং এ আলিম তাদের অপরাধের জন্য দায়ী থাকেন
যাদু ও মিথ্যা বলার অভ্যাস যদি কারো কোনো ক্ষতি না করে তাহলেও কবীরা গোনাহপক্ষান্তরে কারো কোনো প্রকার ক্ষতি করলে তা দ্বিতীয় একটি কবীরা গুনাহে পরিণত হয়অনুরূপভাবে অহংকার, হিংসা, কাউকে হেয় ভাবা ইত্যাদি ব্যক্তিগত কবীরা গোনাহ হলেও সাধারণত এগুলোর অভিব্যক্তি ব্যক্তির বাইরে প্রকাশিত হয়ে অন্যদের কষ্ট দেয়তখন তা আরো অনেক হক্কুল ইবাদ সংশ্লিষ্ট কবীরা গোনাহের মধ্যে ব্যক্তিকে নিপতিত করেকৃপণতা যদিও মানসিক পাপ ও ব্যাধি, কিন্তু সাধারণত এ ব্যধি মানুষকে বান্দার হক নষ্ট বা ক্ষতি করার অনেক পাপের দিকে প্ররোচিত করে
খ. সৃষ্টির অধিকার সংক্রান্ত কবীরা গোনাহসমূহ
কুরআন-হাদীসের আলোকে মানুষের মূল দায়িত্ব দুটি ও পাপের সূত্রও দুটিপ্রথম দায়িত্ব, মানুষ তার মহান প্রভুর প্রতি পরিপূর্ণ বিশ্বাস, অগাধ ভালবাসা ও আস্থা পোষণ করবে এবং এ আস্থা, বিশ্বাস ও ভালবাসা বৃদ্ধিপায় এমন সকল কর্ম আল্লাহর মনোনীত রাসূলের শিক্ষা অনুসারে পালন করবেআর এ দায়িত্বে অবহেলা সৃষ্টি করে এমন সকল কর্ম বা চিন্তা-চেতনাই প্রথম পর্যায়ের পাপ
মানুষের দ্বিতীয় দায়িত্ব, এ পৃথিবীকে সুন্দর বসবাসযোগ্য করতে তার আশেপাশের সকল মানুষ ও জীবকে তারই মতো ভালভাবে বাঁচতে সাহায্য করাআর এ দায়িত্বের অবহেলাজনিত কর্মই দ্বিতীয় পর্যায়ের পাপআল্লাহর সৃষ্টির কষ্ট প্রদান, ক্ষতি করা, শান্তি বিনষ্ট করা বা অধিকার নষ্ট করাই মূলত সবচেয়ে কঠিন অপরাধএ জাতীয় পাপগুলো কুরআন-হাদীসে বেশি আলোচনা করা হয়েছেএকই জাতীয় পাপের শাখা প্রশাখাকে বিশেষভাবে বারবার উল্লেখ করা হয়েছেফলে এর তালিকাও অনেক বড় হয়ে গিয়েছে
১. ইসলাম নির্ধারিত শাস্তিযোগ্য অপরাধে অপরাধীর (চুরি, ডাকাতি, খুন, ধর্ষণ ইত্যাদি) শাস্তি মওকুফের জন্য সুপারিশ বা চেষ্টা করা
২. আইনের মাধ্যমে বিচার ছাড়া কোনো মানুষকে হত্যা করাএমনকি ডাকাতী, খুন, ধর্মদ্রোহিতা ইত্যাদি ইসলামী বিধানে যে অপরাধের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বলে নির্ধারিত সে অপরাধে লিপ্ত ব্যক্তিকেও কোনো ব্যক্তি নিজের হাতে শাস্তি দিলে তা হত্যাএকমাত্র উপযুক্ত আদালতের বিচারের মাধ্যমেই অপরাধীর অপরাধ, তার মাত্রা ও শাস্তি নির্ধারিত হবেযথাযথ বিচারে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আগে কাউকে অপরাধী মনে করা বা শাস্তি দেওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে সৃষ্টির অধিকার নষ্টকারী কঠিন অপরাধ
৩. রাষ্ট্রপ্রধান, প্রশাসক বা বিচারক কর্তৃক জনগণের দায়িত্ব, সম্পদ বা আমানত আদায়ে অবহেলা করা বা ফাঁকি দেওয়া
৪. নাগরিক কর্তৃক রাষ্ট্রপ্রধান, শাসক, প্রশাসক বা প্রধানকে ধোঁকা দেওয়া বা রাষ্ট্রের ক্ষতিকর কিছু করা
৫. রাষ্ট্র বা সমাজের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ বা সশস্ত্র বিদ্রোহ
৬. অন্যায় দেখেও সাধ্যমতো প্রতিকার বা প্রতিবাদ না করা
৭. বাইয়াতঅর্থাৎ রাষ্ট্রীয় আনুগত্যের শপথেরবাইরে থেকে রাষ্ট্রদ্রোহীবা অবাধ্যঅবস্থায় মৃত্যুবরণ করা
৮. রাষ্ট্র প্রশাসনের অন্যায় বা জুলুম সমর্থন বা সহযোগিতা করা
৯. সমাজের মানুষদেরকে কবীরা গোনাহের কারণে কাফির বলা বা মনে করা
১০. বিচারকের জন্য ন্যায় বিচারে একনিষ্ঠ না হওয়া বা বিচার্য বিষয়ের বাইরে কোনো কিছু দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিচার করা
১১. আইন প্রয়োগকারীর জন্য আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্ব করা ও আপনজনদের জন্য হালকাভাবে শাস্তি প্রয়োগ করা
১২. মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান বা প্রয়োজনের সময় সত্য সাক্ষ্য প্রদান না করা
১৩. রাষ্ট্রীয় সম্পদ অবৈধভাবে ভক্ষণ বা ভোগ করা, তা যত সামান্যই হোক
১৪. মুনাফিককে নেতা বলা
১৫. জিহাদের মাঠ থেকে পালিয়ে আসা
১৬. মুসলিমগণকে কষ্ট প্রদান ও গালি দেওয়া
১৭. যবরদস্তি, মিথ্যা মামলা বা অবৈধভাবে কোনো মানুষ থেকে কিছু গ্রহণ করা
১৮. হাটবাজার, রাস্তাঘাটে টোল আদায় করা বা চাঁদাবাজী করা
১৯. মুসলিম সমাজে বসবাসরত অমুসলিম নাগরিককে কষ্ট প্রদান বা তার অধিকার নষ্টযে কোনো মানুষকে কষ্ট দেওয়াই কঠিন পাপতবে হাদীস শরীফে বিশেষ করে অমুসলিম ও সমাজের দুর্বল শ্রেণীগুলোর কথা উল্লেখ করা হয়েছেএছাড়া সাধারণ নির্দেশনা তো আছেই
২০. কোনো মহিলা বা এতিমের সম্পদ ভক্ষণ করাযে কোনো মানুষের সামান্য সম্পদ অবৈধভাবে গ্রহণ অন্যতম কবীর গোনাহতবে মহিলা ও এতিম যেহেতু দুর্বল এজন্য হাদীসে তাদের দুর্বলতার কথা উল্লেখ করে তাদের সম্পদ অবৈধ ভোগকারীর কঠিন শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে
২১. আল্লাহর প্রিয় ধার্মিক বান্দাগণকে কষ্ট প্রদান বা তাদের সাথে শত্রতা করা
২২. প্রতিবেশীর কষ্ট প্রদান
২৩. কোনো মাজলিসে এসে খালি জায়গা দেখে না বসে ঠেলাঠেলি করে অন্যদের কষ্ট দিয়ে মাজলিসের মাঝে এসে বসে পড়া বা এমনভাবে মাঝে বসা যাতে অন্য মানুষদের অসুবিধা হয়
২৪. কারো স্ত্রী বা চাকর বাকর ফুসলিয়ে সরিয়ে দেওয়া
২৫. কর্কশ ব্যবহার ও অশ্লীল- অশ্রাব্য কথা বলা
২৬. অভিশাপ বা গালি দানে অভ্যস্ত হওয়া
২৭. কোনো মুসলিমের দুর্বলতার সুযোগ গ্রহণ করে কিছু অর্থলাভ করা
২৮. তিন দিনের অধিক কোনো মুসলিমের সাথে কথাবার্তা বন্ধ রাখা
২৯. মুসলিমগণের একে অপরকে ভাল না বাসা বা ভালবাসার অভাব থাকা
৩০. মুসলিমদের গোপন দোষ খোঁজা, জানা ও বলে দেওয়া
৩১. নিজের জন্য যা পছন্দ করে অন্যের জন্য তা পছন্দ না করা
৩২. কোনো ব্যক্তিকে তার বংশের বিষয়ে অপবাদ দেওয়া
৩৩. পিতামাতার অবাধ্য হওয়া বা তাঁদের কষ্ট প্রদান করা
৩৪. সুদ গ্রহণ করা, প্রদান করা, সুদ লেখা বা সুদের সাক্ষী হওয়া
৩৫. ঘুষ গ্রহণ করা, প্রদান করা ও ঘুষ আদান প্রদানের মধ্যস্থতা করা
৩৬. মিথ্যা শপথ করা
৩৭. হীলা বিবাহ করা বা করানো
৩৮. আমানতের খেয়ানত করা
৩৯. কোনো মানুষের উপকার করে পরে খোটা দেওয়া
৪০. মানুষের গোপন কথা শোনা বা জানার চেষ্টা করা
৪১. স্ত্রীর জন্য স্বামীর অবাধ্য হওয়া
৪২. স্বামীর জন্য স্ত্রীর টাকা বা সম্পদ তার ইচ্ছার বাইরে ভোগ বা দখল করা
৪৩. চোগলখুরী করা বা একজন মানুষের কাছে অন্য মানুষের নিন্দামন্দ ও শত্রতামূলক কথা বলে উভয়ের মধ্যে সুসম্পর্ক নষ্ট করা
৪৪. গীবত বা পরচর্চা করাঅর্থাৎ কারো অনুপস্থিতিতে তার মধ্যে বিরাজমান বাস্তব ও সত্য দোষগুলো উল্লেখ করা
৪৫. অসত্য দোষারোপ করাঅর্থাৎ কারো মধ্যে যে দোষ বিরাজমান নেই অনুমানে বা লোকমুখে শুনে তার সম্পর্কে সে দোষের কথা উল্লেখ করা
৪৬. জমির সীমানা পরিবর্তন করা
৪৭. মহান সাহাবীগণকে গালি দেওয়া
৪৮. আনসারগণকে গালি দেওয়া
৪৯. পাপ বা বিভ্রান্তির দিকে বা খারাপ রীতির দিকে আহ্বান করা
৫০. কারো প্রতি অস্ত্র জাতীয় কিছু উঠান বা হুমকি প্রদান
৫১. নিজের পিতা ছাড়া অন্যকে পিতা বলা
৫২. জেদাজেদি ঝগড়া, বিতর্ক কলহ বা কোন্দল
৫৩. ওজন, মাপ বা দ্রব্যে কম দেওয়া বা ভেজাল দেওয়া
৫৪. কোনো উপকারীর উপকার অস্বীকার করা বা অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা
৫৫. নিজের প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি অন্যকে প্রদান থেকে বিরত থাকা
৫৬. কোনো প্রাণীর মুখে আগুনে পুড়িয়ে বা কেঁটে দাগ বা মার্কা দেওয়া
৫৭. জুয়া খেলা
৫৮. অবৈধ ঝগড়া বা গোলযোগে সহযোগিতা করা
৫৯. কথাবার্তায় সংযত না হওয়া
৬০. ওয়াদা ভঙ্গ করা
৬১. উত্তরাধিকারীকে উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করা
৬২. স্বামী বা স্ত্রী কর্তৃক তাদের একান্ত গোপনীয় কথা অন্য কাউকে বলা
৬৩. কারো বাড়ি বা ঘরের মধ্যে অনুমতি ছাড়া দৃষ্টি করা
৬৪. কেউ আল্লাহর নামে শপথ করে সাহায্য বা ক্ষমা চাইলে আর তার প্রতি বিরক্ত থাকা অথবা তাকে ক্ষমা বা সাহায্য না করা
৬৫. যা কিছু শোনা হয় বিচার বিশ্লেষণ ও সত্যাসত্য নির্ধারণ না করে তা বলা
৬৬. বঞ্চিত ও দরিদ্রদেরকে খাদ্য প্রদানে ও সাহায্য দানে উৎসাহ না দেওয়া
৬৭. ব্যভিচার, সমকামিতা বা যৌন অনাচার ও অশ্লীলতা
৬৮. নিরপরাধ মানুষকে, বিশেষত মহিলাকে ৪ জন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষাীর সুস্পষ্ট সাক্ষ্য ছাড়া ব্যভিচার বা অনৈতিকতার অপবাদ দেওয়া
৬৯. সমাজে অশ্লীলতা প্রসার করতে পারে এমন কোনো গল্পগুজব বা কথাবার্তা বলা বা প্রচার করাএর মধ্যে সকল পর্নোগ্রাফি, ছবি, অশ্লীল উপন্যাস ও গল্প অন্তর্ভুক্তএগুলোর প্রচার, বিক্রয়, আদান প্রদান সবই কবীরা গোনাহ
উপরের সকল পাপই অত্যন্ত ক্ষতিকরকুরআন ও হাদীসে এগুলোর ভয়ঙ্কর শাস্তি ও খারাপ পরিণতির কথা উল্লেখ করা হয়েছেতবে কোনো কোনো পাপ নেক আমলের ফলে আল্লাহ ক্ষমা করতে পারেনআবার কোনো কোনো পাপ সকল নেক আমলকে বিনষ্ট করে দেয়এ সকল ইবাদত বিনষ্টকারী পাপের অন্যতম শিরক, কুফর, অহঙ্কার, হিংসা, অপরের অধিকার নষ্ট করা, গীবত করা ইত্যাদি

No comments:

Post a Comment