بسم الله الرحمن الرحيم
আল্লাহর নামে যিনি
স্বভাবে পরম মেহেরবান, কর্মে পরম
দয়াবান
সাফল্যের সোপানঃ
আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কাজ-কর্ম
ও ইবাদহ পালন করলে দুনিয়ার প্রশংসা ও সুনাম হবে নগদ প্রাপ্ত সুসংবাদঃ
রচনা, সংগ্রহ ও সঞ্চয়নে
: মুফতি আব্দুস সালাম
০১.
অবতরণিকাঃ
আল্লাহ্ সুব্হানাহু তা‘আলা সমগ্র বিশ্ববাসীকে
সদা-সর্বদা লোক দেখানো লৌকিকতামুক্ত, রাসূল (সা)-এর পথ-মত, সীরাহ্ তথা জীবন-চরিত অনুযায়ী মহান আল্লাহ্ সুব্হানাহু তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জনের
জন্য ইবাদাহ্ পালনের নির্দেশনা প্রদান করেছেন। এটিই হবে
মানব জাতির ইবাদহ্ পালনের মৌলিক অনুভূতি, আশা-আকাঙ্খা ও প্রত্যাশা। ইবাদহ্ পালনের
মৌলিক এই অনুভূতি, আশা-আকাঙ্খা
ও প্রত্যাশা পূরণের পর লোকদের মুখনিসৃত অপ্রত্যাশিত ও অকাঙ্খিত বাহ্বা, উৎসাহ্ ও প্রশংসায়
দেষণীয় নয় বরং উহা ‘মু’মিনের জীবনে নগদ প্রাপ্ত
সুসংবাদ’। অদ্যকার বক্ষমান
এই প্রবন্ধে সংক্ষিপ্তাকারে সল্প পরিসরে এই বিষয়েই আলোকপাত করা হবে ইনশা আল্লাহ।
০২.
হাদীসঃ
عَنْ
أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قِيلَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : أَرَأَيْتَ
الرَّجُلَ يَعْمَلُ الْعَمَلَ مِنَ الْخَيْرِ وَيَحْمَدُهُ النَّاسُ عَلَيْهِ،
قَالَ : تِلْكَ عَاجِلُ بُشْرَى الْمُؤْمِنِ .
০৩. অনুবাদঃ
Abu
Dharr reported : It was said to Allah's Messenger (ﷺ) : What is your opinion about the person who has done good
deeds and the people praise him? He said: It is glad tidings for a believer
(which he has received in this mortal world). আবূ দারদা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) কে প্রশ্ন করা হলো (হে আল্লাহর রাসূল!) আপনি কি
এমন কোন ব্যক্তি দেখেছেন যে,
আল্লাহর জন্যই ‘আমল করে (তথা
কোন কল্যাণময় কর্ম করে) আর মানুষ তার কৃতকর্মের জন্য প্রশংসা করে (এটা তার প্রত্যাশা
না)। রাসূল (ﷺ) বললেন :
ঐ প্রশংসা মুমিনের জন্য নগদ প্রাপ্ত সুসংবাদ’। [সহীহ মসলিম হা/নং ২৬৪২, সুনান ইব্ন মাযাহ
হা/নং ৪২২৫]।
০৪.
ব্যাখ্যাঃ
ﻋﺎﺟﻞ
ﺑﺸﺮﻯ ﺍﻟﻤﺆﻣﻦ ﺃﻥ ﻳﻌﻤﻞ ﺍﻟﻤﺆﻣﻦ ﺍﻟﻌﻤﻞ ﺍﻟﺼﺎﻟﺢ ﻣﺨﻠﺼًﺎ ﻟﻠﻪ ﻓﻴﻪ، لا ﻳﺮﺟﻮ ﺑﻪ ﻏﻴﺮ ﻭﺟﻪ ﺍﻟﻠﻪ،
ﻓﻴﻄﻠﻊ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻋﻠﻴﻪ، ﻓﻴﺜﻨﻮﺍ ﻋﻠﻴﻪ ﺑﻪ، ﻓﻴﺴﺮﻩ ﺫﻟﻚ ﻭﻳﺴﺘﺒﺸﺮ ﺑﻪ ﺧﻴﺮًﺍ، ﻓﺘﻠﻚ ﻋﺎﺟﻞ ﺑﺸﺮﻯ ﺍﻟﻤﺆﻣﻦ.
মুমিনের জন্য নগদ সুসংবাদ হলো ; যখন কোন মুমিন একনিষ্ঠতার
সাথে কোন সৎ কর্ম সম্পাদন করে শুধু মাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য, এর দ্বারা আল্লাহ
ব্যাতীত অন্য কারো নিকট থেকে কোন কিছুর আকাঙ্খা করে না, তখন মানব সম্প্রদায়
তার প্রশংসা করে, বাহ্বা প্রদান
ও উৎসাহ প্রদান করে এটাই হলো নগদ সূসংবাদ।
ﻭﻣﻦ
ﺫﻟﻚ ﺍﻟﺮﺅﻳﺎ ﺍﻟﺼﺎﻟﺤﺔ ﻳﺮﺍﻫﺎ ﻓﻲ ﻧﻮﻣﻪ ﺃﻭ ﺗﺮﻯ ﻟﻪ، ﻭﻣﻦ ﺫﻟﻚ ﻭﻗﻮﻉ ﻣﺤﺒﺘﻪ ﻓﻲ ﻗﻠﻮﺏ ﺍﻟﻨﺎﺱ، ﻭﺭﺿﺎﻫﻢ
ﻋﻨﻪ، ﻭﻣﻦ ﺫﻟﻚ ﺃﻥ ﻳﺠﺪ ﻓﻲ ﻧﻔﺴﻪ ﺭﺍﺣﺔ ﻟﻠﻌﻤﻞ ﺍﻟﺼﺎﻟﺢ ﻭﺍﻧﺸﺮﺍﺡ ﺻﺪﺭ، ﻭﻳﻜﻮﻥ ﺫﻟﻚ ﻭﺃﻣﺜﺎﻟﻪ ﻣﻦ
ﺩلاﺋﻞ ﻣﺤﺒﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻟﻪ، ﻭﻗﺒﻮﻝ ﻋﻤﻠﻪ، ﻓﻴﻌﺠﻞ ﺍﻟﻠﻪ ﻟﻪ ﺍﻟﺒﺸﺮﻯ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﺑﻬﺬﺍ ﺍﻟﺜﻨﺎﺀ، ﻭﺍﻟﺮﺿﺎ،
ﻭﺍﻟﻘﺒﻮﻝ ﻣﻦ ﺍﻟﻨﺎﺱ، ﻭﻳﺪﺧﺮ ﻟﻪ ﻓﻲ الآﺧﺮﺓ ﺟﺰﻳﻞ ﺍﻟﺜﻮﺍﺏ.
আর উহা হলো সৎ ও ভালো স্বপ্ন যা মানুষকে
নিদ্রাবস্থায় দেখানো হয়। আর উহা হলো মানুষের অন্তরে তার ভালবাসা
গাঢ় করে দেওয়া হয় এবং তার প্রতি সন্তুষ্ট মনোভাব তৈরি করে দেওয়া হয়। আর উহা হলো
মানুষ তার অন্তরে সৎ ও ভাল কর্মের কারণে প্রশান্তি অনুভব করে এবং তার অন্তর প্রশস্ত
হয়। আর উহার উপমা হলো আল্লাহ তা‘আলার ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ, তার কৃত কর্মের গ্রহণযোগ্যতার নিদর্শন। সুতরাং আল্লাহ তা‘আলা তাকে ইহজগতেই
সুসংবাদ দেন এবং তার প্রতি সন্তুষ্ট হন, মানুষের পক্ষ থেকে তার কর্ম গ্রহণ করেন। সর্বোপরি
তাকে পরকালে অসংখ্য প্রতিদানে ধন্য করবেন।
ﻋﻦ
ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲ صلى الله عليه وسلم ﻗﺎﻝ : ﺇﺫﺍ ﺃﺣﺐ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﻌﺒﺪ ﻧﺎﺩﻯ ﺟﺒﺮﻳﻞ : ﺇﻥ ﺍﻟﻠﻪ
ﻳﺤﺐ ﻓﻠﺎﻧًﺎ ﻓﺄﺣﺒﺒﻪ، ﻓﻴﺤﺒﻪ ﺟﺒﺮﻳﻞ، ﻓﻴﻨﺎﺩﻱ ﺟﺒﺮﻳﻞ ﻓﻲ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﺴﻤﺎﺀ : ﺇﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻳﺤﺐ ﻓﻠﺎنًا
ﻓﺄﺣﺒﻮﻩ، ﻓﻴﺤﺒﻪ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﺴﻤﺎﺀ، ﺛﻢ ﻳﻮﺿﻊ ﻟﻪ ﺍﻟﻘﺒﻮﻝ ﻓﻲ ﺍﻟﺄﺭﺽ . ﻭﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﻭﺯﺍﺩ : ﻓﺬﻟﻚ
ﻗﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ: ﴿ إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ سَيَجْعَلُ لَهُمُ
الرَّحْمَنُ وُدًّا ﴾ - {سورة مريم : ৯৬}.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন : নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা যখন কোন বান্দাকে
ভালবাসেন তখন জিবরীল (আ) কে ডেকে বলেন : আমি অমুক বান্দাকে ভালবাসি, সুতরাং তুমিও তাকে
ভালবাস। তখন জিবরীল (আ) তাকে ভালবাসেন। অতঃপর জিবরীল (আ) আকাশে ঘোষণা দিয়ে বলেন
: আল্লাহ তা‘আলা অমুক
বান্দাকে ভালবাসেন সুতরাং তোমরাও তাকে ভালবাস। তখন সমস্ত
আকাশবাসী তাকে ভালবাসে। তারপর দুনিয়াবাসীর অন্তরে তার কবুলিয়াত
রেখে দেয়া হয়। (আর ইমাম তিরমিযী (রহ) কিছু বৃদ্ধি করে বর্ণনা করেছেন
: মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন
: ﴿إِنَّ الَّذِينَ ءَامَنُوا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ سَيَجْعَلُ لَهُمُ
الرَّحْمٰنُ وُدًّا﴾ ‘নিশ্চয়ই যারা ঈমান
আনে ও সৎ কর্ম করে দয়াময় অবশ্যই তাদের প্রতি (পারস্পরিক)
ভালবাসা দান, সম্প্রীতি
সৃষ্টি করবেন’। [সূরা মারইয়াম
: ৯৬]। ([সহীহ বুখারী হা/নং ৫৬৯৩ ও ৬৬৪০, সহীহ মুসলিম হা/নং
২৬৩৭, তিরমিযী হা/নং
৩১৬১])।
ﻗﺎﻝ
ﺍﻟﻨﻮﻭﻱ ﺭﺣﻤﻪ الله، ﻣﻌﻨﻰ ﻳﻮﺿﻊ ﻟﻪ ﺍﻟﻘﺒﻮﻝ ﻓﻲ ﺍﻟﺄﺭﺽ : ﺃﻱ ﺍﻟﺤﺐ ﻓﻲ ﻗﻠﻮﺏ ﺍﻟﻨﺎﺱ، ﻭﺭﺿﺎﻫﻢ ﻋﻨﻪ،
ﻓﺘﻤﻴﻞ ﺇﻟﻴﻪ ﺍﻟﻘﻠﻮﺏ، ﻭﺗﺮﺿﻰ ﻋﻨﻪ، ﻭﻗﺪ ﺟﺎﺀ ﻓﻲ ﺭﻭﺍﻳﺔ:
ﻓﺘﻮﺿﻊ ﻟﻪ ﺍﻟﻤﺤﺒﺔ.
ইমাম নাবাবী (রহ) বলেন, ‘দুনিয়াবাসীর অন্তরে
তার কবুলিয়াত রেখে দেয়া হয়’-এর অর্থ হলো
: দুনিয়ার মানুষের মধ্যে তার জন্য তিনি ভালবাসা তৈরী করেন। এবং তার প্রতি
মানুষ সন্তোষ থাকে, সকলের অন্তর
তার প্রতি দাবিত হয়, তার কৃত-কর্মে
সন্তাষ থাকে। অন্য বর্ণনায় এসেছে, তার জন্য মানুষের
ভালবাসা রেখে দেওয়া হয়।
ﻭﻗﺎﻝ
ﺍﺑﻦ ﻛﺜﻴﺮ ﺭﺣﻤﻪ الله، ﻳﺨﺒﺮ ﺗﻌﺎﻟﻰ : ﺃﻧﻪ ﻳﻐﺮﺱ ﻟﻌﺒﺎﺩﻩ ﺍﻟﻤﺆﻣﻨﻴﻦ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﻳﻌﻤﻠﻮﻥ ﺍﻟﺼﺎﻟﺤﺎﺕ
ﻓﻲ ﻗﻠﻮﺏ ﻋﺒﺎﺩﻩ ﺍﻟﺼﺎﻟﺤﻴﻦ ﻣﻮﺩﺓ، ﻭﻫﺬﺍ ﺃﻣﺮ لا ﺑﺪ ﻣﻨﻪ ولا ﻣﺤﻴﺪ ﻋﻨﻪ، ﺍﻧﺘﻬﻰ.
ইমাম ইব্নু কাছীর (রহ) বলেন, আল্লাহ তা‘আলা জানিয়ে দিয়েছেন
যে, একজন সৎকর্মপরায়ণ
ব্যক্তি অন্য একজন সৎকর্মপরায়ণ ব্যক্তির সাথে ভালবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যায় এবং অন্যান্য
মানুষ ও সৃষ্টজীবের মনেও আল্লাহ তা’আলা তাদের প্রতি মহব্বত সৃষ্টি করে দেন। [তাফসীর ইব্নু
কাছীর]।
ﻗﺎﻝ
ﺍﻟﻨﻮﻭﻱ ﺭﺣﻤﻪ ﺍلله، ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ : ﻣﻌﻨﺎﻩ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﺒﺸﺮﻯ ﺍﻟﻤﻌﺠﻠﺔ ﻟﻪ ﺑﺎﻟﺨﻴﺮ، ﻭﻫﻲ ﺩﻟﻴﻞ ﻋﻠﻰ
ﺭﺿﺎ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻋﻨﻪ، ﻭﻣﺤﺒﺘﻪ ﻟﻪ، ﻓﻴﺤﺒﺒﻪ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﺨﻠﻖ ﻛﻤﺎ ﺳﺒﻖ ﻓﻲ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ، ﺛﻢ ﻳﻮﺿﻊ ﻟﻪ ﺍﻟﻘﺒﻮﻝ
ﻓﻲ ﺍﻟﺄﺭﺽ، ﻫﺬﺍ ﻛﻠﻪ ﺇﺫﺍ ﺣﻤﺪﻩ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻣﻦ ﻏﻴﺮ ﺗﻌﺮﺽ ﻣﻨﻪ ﻟﺤﻤﺪﻫﻢ، ﻭﺇﻟﺎ ﻓﺎﻟﺘﻌﺮﺽ ﻣﺬﻣﻮﻡ.
ইমাম নাবাবী, ইব্নুল জাওযী এবং
সুয়ূতী (রহ) গণ বলেন, ইসলামী বিদ্যানগণ
বলেন : ‘মুমিনের জন্য
নগদ সুসংবাদ’-এর অর্থ হলো
: এটা কল্যাণের নগদ সুসংবাদ,
আর এটা আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রমাণ ও তার প্রতি ভালবাসা। সুতরাং তাকে
ভালবাসেন। যেমন পূর্বের হাদীসে বিবরিত হয়েছে। অতঃপর দুনিয়াবাসীর
অন্তরে তার কবুলিয়াত রেখে দেয়া হয়। আর এই সব হলো অপ্রত্যাশিত প্রশংসা। আর যদি সে
প্রত্যাশা করে তাহলে ঘৃণিত হবে।
ﺳﺌﻞ
ﺍﺑﻦ ﻋﺜﻴﻤﻴﻦ رحمه الله، ﻣﺎ ﻣﻌﻨﻲ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﺍﻟﺬﻱ ﻳﻘﻮﻝ:
ﺗﻠﻚ ﻋﺎﺟﻞ ﺑﺸﺮﻯ ﺍﻟﻤﺆﻣﻦ؟ ﻓﺄﺟﺎﺏ : ﺍﻟﻤﺆﻣﻦ ﻳﺒﺸﺮ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﺑﻌﻤﻠﻪ ﺍﻟﺼﺎﻟﺢ ﻣﻦ ﻋﺪﺓ ﻭﺟﻮﻩ
: ﺃولاً : ﺇﺫﺍ ﺷﺮﺡ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﺪﺭﻩ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﻌﻤﻞ ﺍﻟﺼﺎﻟﺢ، ﻭﺻﺎﺭ ﻳﻄﻤﺌﻦ ﺇﻟﻴﻪ ﻭﻳﻔﺮﺡ ﺑﻪ؛ ﻛﺎﻥ ﻫﺬﺍ
ﺩﻟﻴﻼً ﻋﻠﻰ ﺃﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰﻛﺘﺒﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﺴﻌﺪﺍﺀ؛ ﻟﻘﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﺒﺎﺭﻙ ﻭﺗﻌﺎﻟﻰ : ﴿ فَأَمَّا
مَنْ أَعْطَى وَاتَّقَى * وَصَدَّقَ بِالْحُسْنَى * فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْيُسْرَى﴾.
ﻓﻤﻦ ﺑﺸﺮﻯ ﺍﻟﻤﺆﻣﻦ ﺃﻥ ﻳﺠﺪ ﻣﻦ ﻧﻔﺴﻪ ﺭﺍﺣﺔ ﻓﻲ الأﻋﻤﺎﻝ ﺍﻟﺼﺎﻟﺤﺔ ﻭﺭﺿﺎ ﺑﻬﺎ ﻭﻃﻤﺄﻧﻴﻨﺔ ﺇﻟﻴﻬﺎ؛
ﻭﻟﻬﺬﺍ ﻛﺎﻧﺖ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻗﺮﺓ ﻋﻴﻦ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ
ﻋﻠﻴﻪ ﻭﻋﻠﻰ ﺁﻟﻪ ﻭﺳﻠﻢ. ثانيا : ﺃﻥ ﻳﺜﻨﻲ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻋﻠﻴﻪ ﺧﻴﺮًﺍ؛ ﻓﺈﻥ ﺛﻨﺎﺀ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻋﻠﻴﻪ ﺑﺎﻟﺨﻴﺮ
ﺷﻬﺎﺩﺓ ﻣﻨﻬﻢ ﻟﻪ ﻋﻠﻰ ﺃﻧﻪ ﻣﻦ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﺨﻴﺮ، وثالثا : ﺃﻥ ﺗﺮﻯ ﻟﻪ ﺍﻟﻤﺮﺍﺋﻲ ﺍﻟﺤﺴﻨﺔ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻨﺎﻡ.
আল্লামা ইব্নু উসাইমীন (রহ) কে প্রশ্ন
করা হলো : ‘মুমিনের জন্য
নগদ সুসংবাদ’ এই হাদীসের
অর্থ কী? তিনি উত্তরে
বলেন : ‘মমিন ব্যক্তিকে
এই দুনিয়াতে কয়েকটি কারণে তার সৎ ও ভালো কৃত-কর্মের জন্য সুসংবাদ প্রদান করা হয়। যথা : প্রথমত
: যখন আল্লাহ তার অন্তরকে সৎ কর্মের দিকে প্রশস্ত করে দেন তখন সে অন্তরে প্রশান্তি
ও আনন্দ উপলদ্ধি করে আর এটা প্রমাণবহন করে যে, আল্লাহ তাকে সুভ্যাগ্যবানদের অন্তর্ভূক্ত করেছেন। যেমন আল্লাহ্
তা‘আলা বলেছেন : ‘অতঃএব যে ব্যক্তি
(আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য) দান করে ও (আল্লাহকে) ভয় করে। আর উত্তম
বিষয়কে সত্য মনে করে। আমি তার জন্য পথ চলা সহজ করে দেই’। [সূরা লাইল
: ৫ - ৭]। সুতরাং মুমনি ব্যক্তি এই সুসংবাদের মাধ্যমে অন্তরে
সৎ ও ভালো ‘আমল দ্বারা
প্রশান্তি, আনন্দ ও সন্তুষ্টি
অর্জনকরতে পারে। আর এজন্যই রাসূল (ﷺ) এর সালাত
ছিল আত্মতৃপ্তিদায়ক ও চক্ষুশীতলতা। দ্বিতীয়ত : মানুষ তার কল্যাণের জন্য প্রশংসা
করে, আর মানুষের
কল্যাণময় প্রশংসাটা তার জন্য ভালো ও সততার সাক্ষীস্বরূপ। তৃতীয়ত :
তাকে সুখ নিদ্রায় গভীর ঘুমে আচ্ছন্য দেখা যায়।
ﻗﺎﻝ
ﺍﻟﺴﻌﺪﻱ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ : ﺃﻣﺎ ﺍﻟﺒﺸﺎﺭﺓ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ، ﻓﻬﻲ ﺍﻟﺜﻨﺎﺀ ﺍﻟﺤﺴﻦ، ﻭﺍﻟﻤﻮﺩﺓ ﻓﻲ ﻗﻠﻮﺏ ﺍﻟﻤﺆﻣﻨﻴﻦ،
ﻭﺍﻟﺮﺅﻳﺎ ﺍﻟﺼﺎﻟﺤﺔ، ﻭﻣﺎ ﻳﺮﺍﻩ ﺍﻟﻌﺒﺪ ﻣﻦ ﻟﻄﻒ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻪ، ﻭﺗﻴﺴﻴﺮﻩ لأﺣﺴﻦ الأﻋﻤﺎﻝ ﻭالأﺧﻼﻕ، ﻭﺻﺮﻓﻪ
ﻋﻦ ﻣﺴﺎﻭﺉ الأﺧﻼﻕ؛ ﺗﻔﺴﻴﺮ ﺍﻟﺴﻌﺪﻱ
আল্লামা সা‘দী (রহ) বলেন : দুনিয়ার
সুসংবাদটা হলো : সুধারণা ও প্রশংসা, মু’মিনদের অন্তরে
বন্ধুত্ব, ভালবাসা ও
সম্প্রীতি, সত্য ও ভালো
স্বপ্ন দেখা, আল্লাহর কোন
বান্দা তাকে সদয় ও করুনা ব্যতীত দৃষ্টিগোচর করে না, তার জন্য উত্তম চারিত্রিক গুণাবলী ও সৎকর্ম সহজ
করে দেন এবং সে তার সচ্চরিত্র দ্বারা মানুষের মাঝে সমতা তৈরি করে। [তাফসীর আস-সা‘দী]।
০৫. উপরোক্ত আলোচনার শিক্ষাঃ
ক. মানব সম্প্রদায়
ইবাদাহ পালন করবে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য।
খ. লৌকিকতা মুক্ত ইবাদাহর
কারণে মানুষের প্রশংসায় কোন সমাস্যা নেই।
গ. পরকালের উদ্দেশ্যে
কর্ম সম্পাদন করলে আল্লাহ দুনিয়াতেই নগদ সুসংবাদ প্রদান করেন।
ঘ. আল্লাহর রাসূল (সা)-এর
সালাত ছিল আত্মতৃপ্তিদায়ক ও চক্ষুশীতলকারী।
০৬. উপসংহারঃ
আমাদের সর্বাবস্থায় লোক দেখানো লৈৗকিকতামুক্ত, রাসূল (সা)-এর পথ-মত, জীবন-চরিত অনুযায়ী
মহান রবের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ইবাদাহ্ পালন করতে হবে। তবেই আমরা
দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতা অর্জন করতে সচেষ্ট হব। মহান আল্লাহ
আমাদের সকলকে উক্ত পদ্ধতিতে যাবতীয় ‘আমল করার কাওফীক্ব দান করুন, আমীন।
No comments:
Post a Comment