Thursday, 25 April 2019

কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের শত বর্ষের ঐতিহ্য মূহুর্তেই ধুলায় ধুলিস্যাৎ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
তীর্যক মন্তব্য ; আদব আলীর বেয়াদবী, আত্মচেতনা ফিরানোর জন্য করণীয় ও বর্জনীয়ঃ
কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের শত বর্ষের ঐতিহ্য মূহুর্তেই ধুলায় ধুলিস্যাৎ
প্রশ্নপত্র ফাঁস এ যেন আকাবিরদের শক্ত ইমেজের জীবন্ত ও সলীল সমাধীঃ
মুফতি আব্দুস সালাম হুসাইন আলী

বাংলাদেশের কওমী শিক্ষাঙ্গনকে কোলষিত, দূষিত, দূর্নীতিতে নিমজ্জিত করতে এক শ্রেণির ধোকাবাজ, প্রতারক, দুশ্চরিত্র, জ্ঞানপাপী, লেবাসধারী ও আলেম নামধারী অসাধু উলামায়ে ছু প্রশ্নপত্র জালিয়াতি চক্র ও সিন্ডিকেট বাহিনী শত-সহস্র আকাবিরদের স্মৃতিবিজরিত ঐতিহ্যবাহী দ্বীনী শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস ও অধঃপতনে হীন ও ঘৃণিত পায়তারা করছে। তাদের এহেন ন্যাক্কারজনক কর্মকান্ডে ধিক্কার ও তীব্র নিন্দা জ্ঞাপনের ভাষাও হারিয়ে গেছে আলেম সমাজের শব্দ ভান্ডার বা অভিধান থেকে। তারা তাদের কর্মের মাধ্যমে প্রমাণিত করল যে, তারা ইসলাম-মুসলিম, আল্লাহ ও তদ্বীয় রাসূল (সা)-এর চরম দুষমন ও শত্রু। যারা আগামী দিনের সোনালী সূর্য তথা সদ্য প্রস্ফটিত ফারেগীন ২৬ হাজার তরুণ আলেমদের জীবন নিয়ে রঙ্গহাসি ও হোলি খেলায় মত্ত। প্রথম বারেই পশ্নপত্র ফাঁসেই যদি এদের চরম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা করা হত তাহলে দ্বিতীয় বার পূণরাই পশ্নপত্র ফাঁসের মত কোন স্পর্ধা দেখানোর দুঃসাহস হত না।


কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের এহেন দুর্দিনে সমবেধনার বহিঃপ্রকাশে দুঃখের স্মৃতিমাখা রসিকবাণী ব্যক্ত করেন :

উড়ন্ত দুরন্ত পাখিটি কি কখনো ভাবে যে, নীল আকাশে উড়াল দেয়া ডানা মেলানোর পূর্ব সময় কাল বৈশাখি ঝড়ের তীব্র প্রচন্ড আঘাতে সব কিছু লন্ডবন্ডের মাধ্যমে নিঃশেষ হয়ে অস্তিত্ত্ব হারাতে হবে? ভাবেনা তবুও নিয়তির কাছে হার মানতে হয়

বাংলাদেশের কওমীর ভাগ্যাকাশে কালো অমাবশ্যার ঘুডঘুটে অন্ধকার অশনী সংকেত। আকাবিরদের স্মৃতিবিজরিত ঐতিহ্যবাহী দ্বীনী শিক্ষা ব্যবস্থার ধ্বংস ও অধঃপতনের হীন ও ঘৃণিত পায়তারা করছে এক শ্রেণির জালিয়াতি সিন্ডিকেট। যারা বিদেশী প্রভুদের এনে সমাধানের নামে তথা সরকারী নিয়ন্ত্রনের নামে কওমী শিক্ষা ব্যবস্থা তাদের হাতে ইজারা দিতে চায়।

ঠিক তদ্রুপ মানব সম্প্রদায় ভাবে এক হয় আরেক। সে অজানা ভবিষ্যতের দিকে পারি দিচ্ছে অথচ তাকে নিশ্চিত পারি দিতে হবে অসংখ্য পর্বতসম বিপদ সঙ্কুল কঙ্কটাকীর্ণ, পিচ্চিল ঘিরিপথ যার চতু্র্পাশ্বে রয়েছে আগ্নেয়গিরি, খুদার্ত ভয়ঙ্কর হিংস্র বণ্য প্রাণী রক্তসাগর, পিপাসা নিবারণের নেই কোন উপায়-উপক্রম

মাতৃকোলের অবুঝ নির্ভোদ শিশুকে কাল্পনিক কৃত্রিম সান্তনা-হেতু মা জননী হস্ত ইঙ্গিতে দুর-দুরান্তের ছদ্মনামের চাঁদ মামাকে যতই ডাকুক সে চাঁদ মামা কি সত্যিই আসে এবং কপালে টিপ দেয়? না কখোন না আর এটা নিছক কল্পনা জগতের রাজকুমারের আজব  অবাস্তব গল্প বৈ কিছুই য়।

খনস্থায়ী পার্থিব বস্তুজগতের কয়েক মুহুর্তের অতিথি হয়ে কেন এতো বহুরূপী বর্ণচোরামী? কেন বহুদলে বিভক্তি? কেন এত মতবিরোধ? কুরআন-হাদিস সহিহ আক্বিদার পরিবর্তে কেন জাল-বানোয়াটের গ্রহযোগ্যতা  ‘আমল? কেন মানাভিমান? কেন অষাঢ় বাক্যলাপ?

কেন নীতি-নৈতিকতা বিবর্জিত আমানতের খেয়ানত জনিত পশ্ন ফাঁস, কেন জাতির সাথে গাদ্দারী? কেন মীর জাফরী? ক্ষনিকের জন্য স্বল্প সময়ে অল্প মূল্যে বিশাল সুবিধা গ্রহণের ন্যায় রাতারাতি আঙ্গুল ফুঁলে কলাগাছের মত হওয়ার মনোভাব, স্বার্থস্বিদ্ধী হাসিলে দলীয়, আত্মীয় করণ ও স্বজনপ্রীতি?

আজ কেন মানবাধিকার লঙ্গিত? পিতা-মাতা কেন সন্তানের জন্য বোঝা? নিড়ীহ মানুষ কেন নির্যাতত? ক্ষমতা ও স্বাথের প্রতি কেন এত লোভ-মোহ? কেন এত অন্তর্দদ্ধ? কেন নিজেদের দোষ-ত্রুটির ছিদ্রান্বেশন, শান্তি-সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ব-সৌহার্দ বিনষ্টে কেন এতো গোয়েন্দাগিরী ও কাদা ছোঁড়াছোড়ি, কেন এতো গোঁড়ামী, হীনতা-দীনতা, হীনমন্নতা, কাঠিন্যতা, উগ্রতা-অসৃঙ্খলতা ও সংকীর্ণতায় পরিপূর্ণতা, নেই কেন আমাদের মাঝে উদারতা, বদান্যতা, সহনশীলতা, সংযমতা, প্রশস্থতা, উন্মুক্ততা?

সেহেতু প্রাণাধিক প্রিয় বন্ধুপ্রবর ভ্রাতাগণ! দেশ, জাতি ও সমাজের নেতৃত্বদানকারী আলেম ও আলেম নাম্বীয় সম্প্রদায়গণ! আসুন সব কিছু পরিহার করে ইহ-লৌকিক ও পার-লৌকিক জীবনের সুখ-শান্তি, সমৃদ্ধি, স্বাচ্ছন্দ্য, সফলতা, মঙ্গল, কল্যাণের মাধ্যমে চির সুখের শান্তিনিবাস জান্নাত অর্জনে আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলার সন্তুষ্টি অনুযায়ী বাস্তবকর্ম অনুশীলন ও ‘আমল করি এবং রাসূল (সা)-এর সীরাহ তথা জীবন চরিত অনুসরণ করে নিজেদেরকে আদর্শ ও সোনার মানুষে পরিণত করি, দেশ, জাতি ও সমাজের আমানত যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও আদায় করি।

পশ্নপত্র ফাঁসে নবীন কতেক ফারেগীন আলেমের অভিব্যক্তি :
ক. আজকে আর কান্না থামাতে পারলামনা বুকটা ফেঁটে কান্না আসছে হাউমাউ করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে। সারা রাত নিদ্রবিহীন পড়াশুনা করে পরীক্ষার হলে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পর শুনতে পেলাম : আল-হাই আতুল উলইয়ার কর্তৃপক্ষের আদেশে ; পশ্নপত্র ফাঁসের দায়ে অনিভার্য কারণে পরীক্ষা স্থগিত করা হলো’। কী হচ্ছে আলেম নামধারী এই সমাজের? কেন হচ্ছে এসব? কাদের মাধ্যমে হচ্ছে এসব? জাতি কি আশা করবে আলেম নামধারী ব্যক্তিদের নিকট? কী হবে সাধারন ছাত্রদের?

খ. কলঙ্কিত ‘আল-হাই আতুল উলইয়া’ নামক বোর্ডের কোন প্রয়োজন নেই। ২৬ হাজার ছাত্রদের কষ্ট কলঙ্কিত হায়ার কারণে। বেহায়ামূলক কর্মে হায়ার পরীক্ষা আবারও বাতিল?

গ. জিন শয়তানের চাইতে মানব শয়তান মানবের জন্য বেশি ক্ষতিকারক। মানব সয়তান প্রকাশ্যে ধোকা দেয় আর জিন শয়তান অন্তরে ধোকা দেয়

ঘ. হাইয়া- আবারো ফাঁসআবারো বাতিলপুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তার বিকল্প নেই।


আশঙ্কাঃ কওমী ঘরণার আলেম সমাজ কওমী সনদের যে স্বীকৃতি চেয়েছিলেন’ তা কিন্তু পাননি। আর যা পেয়েছেন তা কিন্তু চাননি। যাক বর্তমান উদ্ভুদ্ধ পরিস্থিতিতে শীল আর পাটার ঘর্ষণে মরিচের যে অবস্থা হয় তথা প্রশ্ন জালিয়াতি চক্র ও সিন্ডিকেট এবং হাইয়ার প্রশ্ন ফাঁসে সমাধান করবে সরকার। আর এর কোন বিকল্প নেই। এর ফলস্রোতিতে কওমীর ঐতিহ্য আর অবশিষ্ঠ্য থাকবে না এটা বর্তমান সময়ের অশণী সংকেত। আল্লাহ রহম করুন। 

No comments:

Post a Comment