Thursday, 27 June 2019

মানুষকে আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা তাঁর ফিতরাতের উপর সৃষ্টি করেছেন


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
মানুষকে আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা তাঁর ফিতরাতের উপর সৃষ্টি করেছেন
আব্দুস সালাম হুসাইন আলী

➤ প্রতিটি মানুষকে আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা তাঁর নিজস্ব ফিতরাত -এর উপর সৃষ্টি করেছেন ফিতরাত মানে হচ্ছে ইসলাম অথবা সত্যকে গ্রহণ করার যোগ্যতাএকটি স্বচ্ছ-সাদা গাসে যে ধরণের পানি রাখা হয় সে ধরণের কালার গ্রহণ করেতেমনিভাবে প্রতিটি মানুষকে আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা একটি স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন অন্তর দিয়ে সৃষ্টি করেনপরবর্তীতে গুনাহ করতে করতে দাগ পড়ে যায়

➤ মানুষকে আল্লাহ তাঁর ফিতরাতের উপর সৃষ্টি করেছেন মর্মে আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা এরশাদ করেছেন : فِطْرَةَ اللَّهِ الَّتِي فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا لَا تَبْدِيلَ لِخَلْقِ اللَّهِ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَএটাই (একত্ববাদী দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা) আলাহর প্রকৃতি, যার উপর তিনি মানব সৃষ্টি করেছেনআল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তণ নেইএটাই সরল দ্বীন, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ বুঝে না[সুরা রূম : ৩০]

➤ আবূ হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুলাহ (সা) ইরশাদ করেছেন : عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا مِنْ مَوْلُوْدٍ إِلَّا يُوْلَدُ عَلَى الْفِطْرَةِ فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ أَوْ يُنَصِّرَانِهِ أَوْ يُمَجِّسَانِهِ كَمَا تُنْتَجُ الْبَهِيْمَةُ بَهِيْمَةً جَمْعَاءَ هَلْ تُحِسُّوْنَ فِيْهَا مِنْ جَدْعَاءَ ثُمَّ يَقُوْلُ (فِطْرَةَ اللهِ الَّتِيْ فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا لَا تَبْدِيْلَ لِخَلْقِ اللهِ ذٰلِكَ الدِّيْنُ الْقَيِّمُ প্রতিটি শিশুই আল্লাহর পরিচয়, একত্ববাদ ও ভালবাসার উপর জন্মগ্রহণ করেঅতপর তার পিতা-মাতা তাকে ইয়াহুদী বানায় অথবা খৃষ্টান বানায় অথবা অগ্নীপূজক বানায়যেমনিভাবে একটি পশু একটি পরিপূর্ণ বাচ্চা প্রসব করে, যার মধ্যে কোন দোষ ও অপূর্ণতা থাকে নাতোমরা কি সেগুলোর মধ্যে কোন কান কাটা নবজাত বাচ্চা দেখেছো? অতঃপর রাসূলুলাহ (সা) (পূর্বে বর্ণিত) কুরআনের আয়াতটি আবৃত্তি করেন[সহীহ বুখারী ৪৭৭৫; সহীহ মুসলিম ৬৯২৬; মুসনাদে আহমদ ১২৪৯৯]

➤ প্রকৃত অর্থে একটি শিশু নিখুঁত ও পরিপূর্ণ দুটো কান সহ সর্বাঙ্গীন পরিপূর্ণতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে কিন্তু মানুষ কান কেটে তাকে বিশ্রী ও ত্রুটিযুক্ত করে ফেলেএভাবে একটি মানব শিশু আল্লাহর পরিচয়, ভালবাসা ও একত্ববাদী চেতনা নিয়ে জন্ম লাভ করার পর পিতা-মাতা, বন্ধু-বান্ধব ও পীরফকীর কর্তৃক বিভ্রান্ত হয়ে শিরক, অংশীবাদ ও অগ্নীপূজায় লিপ্ত হয় এবং কান কাটা পশু শাবকের মতই অসুন্দর, বিকৃত ও ত্রুটিযুক্ত হয়ে যায়এক পর্যায়ে সে হারিয়ে ফেলে মহান স্রষ্টার প্রকৃত পরিচয়এখানে বিশেষভাবে পিতামাতার কথা বলা হয়েছে যে, তারা সন্তানকে ইয়াহুদী-খ্রিস্টান বানায়হাদীসের এ অংশটি উপলব্ধি করা বর্তমানে খুবই সহজভালো লেখাপড়ার নামে তারা নিজের সন্তানকে খ্রিস্টান স্কুলে কিংবা নাস্তিকদের স্কুলে দিয়ে সন্তানকে চিরতরে তাওহীদ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেএভাবেই পিতা-মাতা সন্তানকে তাওহীদ থেকে বিচ্ছিন্ন করে

➤ এ কারণেই কিয়ামতের মাঠে অনেক সন্তান তাদের পিতা-মাতার বিরুদ্ধে মহান আল্লাহর দরবারে অভিযোগ করবেপবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে : وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا رَبَّنَا أَرِنَا الَّذَيْنِ أَضَلَّانَا مِنَ الْجِنِّ وَالْإِنْسِ نَجْعَلْهُمَا تَحْتَ أَقْدَامِنَا لِيَكُونَا مِنَ الْأَسْفَلِينَ কাফেররা বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা! যেসব জিন ও মানুষ আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল, তাদেরকে দেখিয়ে দাও, আমরা তাদেরকে পদদলিত করব, যাতে তারা যথেষ্ট অপমানিত হয়[সূরা ফুছছিলাত : ২৯]

No comments:

Post a Comment