বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
স্মৃতির ডায়রি ও স্মৃতির এ্যালবামঃ / অস্তিত্ব ও ডায়রির পাতায় পাতায় যার স্মৃতি স্মরণ হয়ঃ
মরহুম শেখ মুহাম্মাদ হুসাইন আলী
(রাহিমাহুল্লাহ)-এর আত্মজীবনী ও অবদানঃ
গ্রন্থনা ও রচনায় : মুফতি আব্দুস সালাম হুসাইন
আলী
০১. সূচনাঃ
মহান আল্লাহ
সুবহানাহু তা‘আলা এই পৃথিবীতে কিছু মানুষ সৃষ্টি করেছেন যারা মৃত্যুর পরও
‘সাদক্বায়ে জারিয়ার’ মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে সুপরিচিত এবং মহান আল্লাহ
সুবহানাহু তা‘আলার নিকটও পছন্দনীয়। তন্মধ্যে বীর চট্রলার দিক বিজয়ী অদম্য-দুর্জয় ও জীবন যুদ্ধে সফল এক মহানয়ক হলেন ‘মরহুম শেখ
হুসাইন আলী (রাহিমাহুল্লাহ)।
০২. শেখ মুহাম্মাদ হুসাইন অালী (রাহিমাহুল্লাহ) ও পিতা-মাতার
পরিচিতিঃ
শেখ মুহাম্মাদ হুসাইন অালী (রাহিমাহুল্লাহ) হলেন আকিকাবানু ও আব্দুল ওয়াহেদ দ্বয়ের
দ্বিতীয় ছেলে মরহুম শেখ মুহাম্মাদ হুসাইন আলী রাহিমাহুল্লাহ। তিনি বাংলাদেশর ময়মনসিংহ
বিভাগীয়, ময়মনসিংহ জেলাধীন, ধোবাউড়া উপজেলার, ৬নং ঘোষগাও ইউনিয়নের, ৬নং ওয়ার্ডের
অন্তর্ভূক্ত চন্দ্রকোনা গ্রামের [মালাওনা বাড়ি]-এর তোখর শাসক। তিনি এক সম্ভান্ত ও আদর্শ মুসলিম পরিবারে ()
সনে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা : মরহুম আব্দুল ওয়াহেদ মন্ডল এবং মাতা : আকিকাবানু
ছিলেন অত্যন্ত সহজ-সরল, আদর্শ, নম্র ও ভদ্র প্রকৃতির উদার মানসিকতার মানুষ।
০৩. শেখ মুহাম্মাদ হুসাইন আলী (রাহিমাহুল্লাহ) –এর শৈশব-কৈশর ও যৌবনকালঃ
মরহুম শেখ মুহাম্মাদ হুসাইনি আলী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর শৈশব-কৈশোর ও যৌবনকাল
অতিবাহিত হয় ময়মিনসিংহের ভালুকার হলান ও গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায়। তিনি যৌবন ও
তারুণ্যের উদ্দীপনায়ও একজন আদর্শবান ও সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের মান-সম্মান,
আত্মমর্যাদা অক্ষুন্ন রেখে ইসলামের সু-শীতল ছায়াতলে জীবন-যাপন করেন।
০৪. বাংলাদেশ থেকে ভারতের অঙ্গ রাজ্য ‘আসামে ভ্রমণ’ ও দাম্পত্য জীবন শুরুঃ
গ্রাম্য সহজ-সরল মানুষের উপর যখন অমানসিক অত্যাচার শুরু হয় তখন বাংলাদেশের
অধিকাংশ জনগোষ্টি ভারতের অঙ্গ রাজ্য ‘আসামে ভ্রমণ’ করেন। তন্মধ্যে আকিকাবানু ও
আব্দুল ওয়াহেদের পরিবারও ছিলেন। সেখানে তিনি দীর্ঘ দিন অতিবাহিত করেন এবং দাম্পত্য
জীবনের সূচনা করেন এবং দেশের বহমান পরিস্থিতি শান্ত হলে কোন এক সময় নিজ মাতৃভূমি
বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন।
০৫. পেশাঃ
কালের স্রোতে শেখ মুহাম্মাদ হুসাইন আলী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর পারিবারিক ঐতিহ্য ‘চৌধুরী ও মন্ডল’
থেকে শেখে পরণিত হন। যাদের গোয়াল ভরা গরু, পুকুর ভরা মাছ, মাচা ভরা ধান, মাঠ ভরা
জমি, পাতিল ভরা খাদ্য ছিল। যেখানে অভুক্ত মানুষ পেট পুরে ভাত খেত। প্রতাপের সাথে
ভূমিতে ফসল উৎপাদন করতেন। সেখানে তারা মুষ্টিমেয় ভূমিতে চাষাবাদ করে জীবন ধারণ
করতেন। আর নানান পেশায় দিনাপাত করতেন। কখনো দোকান্দার, কখনো কৃষক আর কখনোওবা
ফেরীওয়ালা। সুখে-দুঃখে দিনাতিপাত করে ‘জীবন যুদ্ধের সাত সমুদ্র তেরো নদী পাড়ি
দিয়ে, উত্তাল তরঙ্গমালার ফেনারাজিতে নিজের জীবনকে আলোকিত করে সময় পাড় করেন।
০৬. স্ত্রী ও সন্তানাদিঃ
শেখ মুহাম্মাদ হুসাইন আলী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর দুই স্ত্রী ; আমিরুন্নিসা ও ফাতেমা।
উভয়ের ৭ ছেলে ও ২ মেয়ে।
প্রথম স্ত্রী আমিরুন্নিসার ৬ ছেলে ও ১ মেয়ে। যথা :
১. মাওলানা মুহা. নেয়ামতুল্লাহ ; স্বনামধন্য শিক্ষক,
মুহাদ্দিস, বহু প্রতিষ্ঠানের মুহতামিম এবং বর্তমান ঘোষগাঁও বাজারের পূর্ব পাশে
ভালুকাপাড়া বকুল তলা বাবুল উলুম বাবুস সালাম মাদরাসার সুযোগ্য নায়েবে মুহতামিম। তার ২ মেয়ে ২ ছেলে। আলেমা মানছুরা ও আলেমা মাহমুদা, হাফেজ মাহমুদুল হাসান ও এনামুল
হাসান।
২. জনাব কেরামত আলী। তার ১ ছেলে ২ মেয়ে ; আব্দুল হামিদ,
মমতা ও কোহিনুর।
৩. জনাব আব্দুল খালেক। ঘোষগাঁও বাজারের প্রসিদ্ধ হোন্ডা ও
সাইকেল মেরামতকারী। তার স্ত্রী ‘মালেকা খাতুন’ ৬নং ঘোষগাও ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নং
ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার ছিল। সে গত জুলাই ২০১৯ এ ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি...)।
তার ২ ছেলে ও ৪ মেয়ে। ইমামুল হক ইমু, রাকিবুল হাসান, সুমী, বিউটি, মুক্তা ও . . .।
৪. জনাব আব্দুল মালেক। আশুলিয়া, ঢাকা প্রবাসী। তার ৩ ছেলে ও
২ মেয়ে ; আব্দুর রহিম, ইলিয়াছ ও আবু সাঈদ, নুন্নাহার ও শামসুন্নাহার।
৫. মাওলানা মুহা. ইবরাহীম খলীল। নালিতাবাড়ি, শেরপুর নিবাসী।
একাধিক মসজিদ ও মাদরাসার খেদমতে আত্মনিয়োজিত। তার ৪ ছেলে। ইসহাক, ইসমাঈল, ইয়াকুব ও
ইয়াসীন।
৬. মুফতি আব্দুস সালাম। বহুগ্রন্থ প্রণেতা, সাহিত্যিক,
লেখক-গবেষক, সাংগনিক ও মিডিয়া ব্যক্তি। একাধিক প্রতিষ্টানে কর্মব্যস্ততায় সময় পাড়
করেন। তার ৩ ছেলে। মাহফুজুর রহমান, মা’রুফুর রহমান ও মাসউদুর রহমান।
৭. আনোয়ারা খাতুন (আনো)। তার ১ ছেলে ও ১ মেয়ে। রমযান আলী,
রুমা, সালমা ও . . .।
দ্বিতীয় স্ত্রী ফাতেমার ১ ছেলে ও ১ মেয়ে।
১. জনাব লুকমান হোসেন।
২. ফিরুজা আক্তার মিনু।
৭. শেষ জীবনের কর্মঃ
মরহুম শেখ হুসাইন
আলী (রাহিমাহুল্লাহ) একজন সফল কৃষক ছিলেন, ধর্মীয়
অনুশাসনে ছিলেন অত্যন্ত গুরুত্বশীল, তাবলিগ জামাতে সময় ব্যয় করেছেন, মহান প্রভুর সান্নিধ্য,
সন্তুষ্টি ও পরকালীন জীবনে মুক্তির জীবনের শেষ সময় অতিবাহিত করেছেন ‘চন্দ্রকোনা
বাইতুল মা’মুর জামে মসজিদে’ বিনা পয়সায় ‘মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করে’। তার ৩
ছেলে প্রখ্যত আলেম। আর বর্তমানে তার পরিবারে রয়েছে বহুসংখ্যক হাফেজ, আলেম ও আলেমা।
যার তার জন্য ‘সাদক্বায়ে জারিয়া’ সমতুল্য।
৮. মুত্যুঃ
তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৮ আগষ্ট ২০১৬ বহস্পতিবার, দুপুর ১টার দিকে এই পৃথিবীর মায়া-মহব্বত ত্যাগ করে
এবং আমাদেরকে ছেড়ে চলেগেছেন তাঁর প্রভুর নিকট। তিনি একজন সফল কৃষক ছিলেন, ধর্মীয় অনুশাসনে ছিলেন গুরুত্বশীল, তাবলিগ
জামাতে সময় ব্যয় করেছেন,
তার জানাযার সালাতে উল্লেখযোগ্য মুসল্লিগণ উপস্থিত হয়ছিলেন, উপস্থিত
হয়েছিলেন অসংখ্য আলেম-উলামা ও ইউপি চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য নেতৃবর্গগণ। মহান আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা মরহুম হুসাইন আলী, মরহুমা আব্দুল ওয়াহেদ, মরহুমা
আকিকাবানু এবং তার পরিবারের সকল আত্মীয় সজনকে পরকালীন মুক্তি ও
জান্নাত নসীব করুন, আমীন।
No comments:
Post a Comment