Wednesday, 27 March 2019

আরব মনীষা ; ‘অকুতোভয় বীরসেনানী, মহাবীর সালাহ উদ্দীন আইয়ূবী’


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আরব মনীষা ; ‘অকুতোভয় বীরসেনানী
মহাবীর সালাহ উদ্দীন আইয়ূবী
রচনা, সংগ্রহ ও সঞ্চয়নে : মুফতি আব্দুস সালাম হুসাইন আলী 


‘অদম্য দুর্জয় দ্বিকবিজয়ী, রাজপথের লড়াকু সৈনিক, মিথ্যার সাথে আপোষহীন সংগ্রামী সিপাহসালার, অকুতোভয় বীরসেনানী, মহাবীর সালাহ উদ্দীন আইয়ূবীযিনি পশ্চাত্যে সালাদিননামে পরিচিত

সালাহ উদ্দীন ইউসুফ ইবনে আইয়ুব (কুর্দি : سەلاحەدینی ئەییووبی / Selahedînê Eyûbî; আরবি : صلاح الدين يوسف بن أيوب‎‎) (১১৩৭/১১৩৮  ৪ মার্চ ১১৯৩) ছিলেন মিশর  সিরিয়ার প্রথম সুলতান এবং আইয়ুবীয় রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতাপাশ্চাত্যে তিনি সালাদিন বলে পরিচিততিনি কুর্দি জাতিগোষ্ঠীর লোক ছিলেন। লেভেন ইউরোপীয় ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে তিনি মুসলিম প্রতিরোধের নেতৃত্ব দেনক্ষমতার সর্বোচ্চ শিখরে তার সালতানাতে মিশর, সিরিয়া, মেসোপটেমিয়া, হেজাজ, ইয়েমেন এব উত্তর আফ্রিকার অন্যান্য অংশ অন্তর্ভুক্ত ছিল

১১৬৩ সালে তার জেনগি বংশীয় ঊর্ধ্বতন নূরউদ্দিন জেনগি তাকে ফাতেমীয় মিশরে প্রেরণ করেনক্রুসেডারদের আক্রমণের বিরুদ্ধে সামরিক সাফল্যের মাধ্যমে সালাহউদ্দীন ফাতেমীয় সরকারের উচ্চপদে পৌছান ফাতেমীয় খলিফা আল আদিদের সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল১১৬৯ সালে তার চাচা শেরেকোহ মৃত্যুবরণ করলে আল আদিদ সালাহউদ্দীনকে তার উজির নিয়োগ দেনশিয়া নেতৃত্বাধীন খিলাফতে সুন্নী মুসলিমদের এমন পদ দেয়া বিরল ঘটনা ছিলউজির থাকাকালে তিনি ফাতেমীয় শাসনের প্রতি বিরূপ ছিলেনআল আদিদের মৃত্যুর পর তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করেন এবং বাগদাদের আব্বাসীয় খিলাফতের আনুগত্য ঘোষণা করেনপরবর্তী বছরগুলোতে তিনি ফিলিস্তিনে ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালান, ইয়েমেনে সফল বিজয় অভিযানের আদেশ দেন এবং উচ্চ মিশরে ফাতেমীয়পন্থি বিদ্রোহ উৎখাত করেন

১১৭৪ সালে নূরউদ্দিনের মৃত্যুর অল্পকাল পরে সালাহউদ্দীন সিরিয়া বিজয়ে ব্যক্তিগতভাবে নেতৃত্ব দেন দামেস্কের শাসকের অনুরোধে তিনি শান্তিপূর্ণভাবে শহরে প্রবেশ করেন১১৭৫ সালের মধ্যভাগে তিনি হামা  হিমস জয় করেনজেনগি নেতারা তার বিরোধী হয়ে পড়েসরকারিভাবে তারা সিরিয়ার শাসক ছিলএরপর শীঘ্রই তিনি জেনগি সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেন এবং আব্বাসীয় খলিফা আল মুসতাদি কর্তৃক মিশর ও সিরিয়ার সুলতান ঘোষিত হনউত্তর সিরিয়া ও জাজিরায় তিনি আরও অভিযান চালানএসময় হাশিশীনদের দুটি হত্যাচেষ্টা থেকে তিনি বেঁচে যান১১৭৭ সালে তিনি মিশরে ফিরে আসেন১১৮২ সালে আলেপ্পো জয়ের মাধ্যমে সালাহউদ্দিন সিরিয়া জয় সমাপ্ত করেনতবে জেনগিদের মসুলেরশক্তঘাটি দখলে সমর্থ হননি

সালাহউদ্দীনের ব্যক্তিগত নেতৃত্বে আইয়ুবী সেনারা ১১৮৭ সালে হাত্তিনের যুদ্ধে ক্রুসেডারদের পরাজিত করেএর ফলে মুসলিমদের জন্য ক্রুসেডারদের কাছ থেকে ফিলিস্তিন জয় করা সহজ হয়ে যায়এর ৮৮ বছর আগে ক্রুসেডাররা ফিলিস্তিন দখল করে নেয়ক্রুসেডার ফিলিস্তিন রাজ্য এরপর কিছুকাল বজায় থাকলেও হাত্তিনের পরাজয় এই অঞ্চলে মুসলিমদের সাথে ক্রুসেডার সংঘাতের মোড় ঘুরিয়ে দেয়সালাহউদ্দীন ছিলেন মুসলিম, আরব, তুর্কি ও কুর্দি সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ১১৯৩ সালে তিনি দামেস্কে মৃত্যুবরণ করেনতার অধিকাংশ সম্পদ তিনি তার প্রজাদের দান করে যান উমাইয়া মসজিদের পাশে তাকে দাফন করা হয়সেখানে তার মাজার অবস্থিত

তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে সংগৃহীত।

No comments:

Post a Comment