Sunday, 14 July 2019

হজ্জ ; আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাত অর্জন, বিশ্ব মুসলিমের ভ্রাতৃত্ববন্ধন ও ঐক্যের এক উজ্জল দৃষ্টান্তময় ইবাদতঃ


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
হজ্জ ; আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাত অর্জন, বিশ্ব মুসলিমের ভ্রাতৃত্ববন্ধনঐক্যের এক উজ্জল দৃষ্টান্তময় ইবাদতঃ
আব্দুস সালাম হুসাইন আলী

 ১. ভূমিকাঃ
হজ্জ ইসলামের পঞ্চম ভিত্তি আর্থিক ও কায়িক (শারীরিক প্ররিশ্রম সমন্বয়ে) যৌগিক একটি ইবাদত। হজ্জ আল্লাহ প্রেম ও বিশ্ব মুসলিমের ভ্রাতৃত্ববন্ধনের অন্যতম পথ হজ্জ বিশ্ব মুসলিমের সামাজিক, রাজনৈতিক ও আধ্যাত্মিক ঐক্যের এক অত্যুজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এটি আল্লাহর নির্দেশিত এমন একটা ফরয বিধান, যা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ পঞ্চম স্তম্ভ এবং ইসলামের অপরাপর বিধান থেকে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হজ্জে আর্থিক ও কায়িক শ্রমের সমন্বয় রয়েছে, যা অন্য কোন ইবাদতে একসঙ্গে পাওয়া যায় না হজ্জ সারা বিশ্বের সহীহ মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সংহতি ও সাম্যের প্রতীক

২. হজ্জের সংজ্ঞা ও পরিচিতিঃ
২/১. সংজ্ঞা ; আভিধানিক ও পারিভাষিক অর্থ :
হজ্জ আরবি শব্দ। হজ্জ শব্দের আবিধানিক অর্থ হল : ইচ্ছা করা, দৃঢ় সংকল্প করা
ইসলামী শর‘য়ী পরিভাষায় : আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কুরআনসুন্নাহের নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে বাইতুল্লাহ যিয়ারত এবং নির্দিষ্ট স্থান সমূহে তাওয়াফ ও জিয়ারত করাকে ইসলামের হজ্জ বলা হয়

২/২. পরিচিতি :
যার ওপর হজ্জ ফরয তাকে অবশ্যই হজ্জ আদায় করতে হবে ৮ যিলহজ্জ থেকে ১২ যিলহজ্জ পর্যন্ত এই ৫ দিনে মক্কা মুকাররমা ও তার আশে পাশের কয়েকটি জায়গায় (মক্কায় তাওয়াফ, সাফা-মারওয়ায় সায়ী, মিনার তাঁবুর জীবন, আরাফাতের বিশাল প্রান্তরে অবস্থান, মুজদালিফায় রাত্রি যাপন আবার মিনাতে প্রত্যাবর্তন, জামরাগুলোতে কংকর নিক্ষেপ, মিনাতে পশু কুরবানী, আবার ক্বাবা তাওয়াফ, সাফা-মারওয়ায় সায়ী ইত্যাদি)হজ্জ একাধারে আর্থিক, শারীরিক ও মানসিক এবাদত এতে অর্থ ব্যয় হয়, শারীরিক পরিশ্রম হয়, পরিবার পরিজনের মায়া ত্যাগ করার মত মানসিক কষ্টও রয়েছেইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে পবিত্র মক্কা মুকাররামা যাতায়াতের খরচ বহন এবং ওই সময় স্বীয় পরিবারের ব্যয়ভার নির্বাহে সক্ষম, দৈহিকভাবে সামর্থ, প্রাপ্তবয়স্ক জ্ঞানবান প্রত্যেক সহীহ মুসলিম নর-নারীর ওপর জীবনে একবার হজ্জ ফরয সঠিকভাবে হজ্জব্রত আদায়কারীকেও দেওয়া হয়েছে জান্নাতের সুসংবাদ একবার হজ্জ করা ফরজ একবারের বেশী করলে সেটা নফল

২/৩. হজ্জ ফরযের সময়কালঃ
আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা মানবজাতির কল্যাণে নবম হিজরীতে ইসলামের পঞ্চম রুকন তথা হজ্জ ফরয করেন।

৩. হজ্জ প্রবর্তনের ঐতিহাসিক পটভূমি বা ইতিহাসঃ
কা‘বাঘরে সর্ব প্রথম হজ্জ আদায় করেন ইসলামের প্রথম নবী ও মুসলিম জাতির আদি পিতা আদম (আ), তারপর নূহ (আ) সহ অন্যান্য নবী-রাসূলগণ। ইব্রাহীম (আ)-এর সময় থেকে হজ্জ আদায় করা আবশ্যকীয় ইবাদত হিসেবে নির্ধারিত করা হয়। হিজরি সনের ১২ তম মাস হলো যিলহজ্জ মাস। ইসলামের বর্ণনা অনুসারে আল্লাহ তা‘আলা ইব্রাহীম (আ)-কে হজ্জ ফরয হওয়ার কথা ঘোষণা করার জন্য নির্দেশ দেন। কোনো কোনো বর্ণনায় আছে যে, এ আদেশের পর ইব্রাহিম (আ) আবু কোবাইস পাহাড়ে আরোহণ করে দুই কানে অঙ্গুলি রেখে ডানে-বামে এবং পূর্ব-পশ্চিমে মুখ ফিরিয়ে ঘোষণা করেছিলেন : "লোক সব, তোমাদের পালনকর্তা নিজের গৃহ নির্মাণ করেছেন এবং তোমাদের ওপর এই গৃহের হজ ফরজ করেছেন তোমরা সবাই পালনকর্তার আদেশ পালন করো" এই বর্ণনায় আরো উল্লেখ আছে যে ইব্রাহিম এর ঘোষণা স্রষ্টার পক্ষ থেকে বিশ্বের সবখানে পৌঁছে দেয়া হয় যেমন আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা এরশাদ করেন : ‘আর মানুষের কাছে হাজ্জের ঘোষণা করে দাও, তারা তোমার কাছে আসবে পদব্রজে ও সর্ব প্রকার ক্ষীণকায় উষ্ট্রসমূহের পিঠে, তারা আসবে দূর-দূরান্তের পথ অতিক্রম করে’। [সূরা হাজ্জ : ২৭]।

হজ্বের বিভিন্ন আচার-কায়দা ইব্রাহিম এর জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন ইসলামিক বর্ণনায় উল্লেখ আছে ইব্রাহিম স্রষ্টার নির্দেশে তাঁর স্ত্রী হাজেরাকে নির্জন মরুভূমিতে রেখে এসেছিলেন সেখানে, কাবা গৃহের অদূরে, হাজেরা নবজাত শিশু ইসমাইলকে নিয়ে পানির অভাবে পড়েছিলেন সাহায্যের জন্য কাউকে না পেয়ে তিনি পানির খোঁজে সাফা-মারওয়া পাহাড়ের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি করেছিলেন এই ঘটনাকে স্মরন করেই হজের সময় মুসলিমদের জন্য সাফা-মারওয়া পাহাড়ের মধ্যে হাঁটার নিয়ম রয়েছে

ইসলামিক বর্ণনায় উল্লেখ আছে স্রষ্টা জান্নাত থেকে আদম  হাওয়া (আ) কে যখন পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেন, এতে তারা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন পরবর্তীতে উভয়ে আরাফা ময়দানে এসে মিলিত হন এই ঘটনার কৃতজ্ঞতাস্বরূপ হজ্বের একটি অংশ হিসেবে মুসলিমরা আরাফাতের ময়দানে এসে উপস্খিত হয়ে স্রষ্টার কাছে কান্নাকাটি করে ইবাদতে মগ্ন হন (সংক্ষেপিত)।

৪. হজ্জ ফরয হওয়ার মূল উৎস বা ভিত্তিঃ
হজ্জ বিধিবদ্ধ হওয়ার মূল উৎস বা ভিত্তির ব্যাপারে আল-কুরআন ও সহীহ হাদীছে বহু আয়াত হাদীস বিদ্যমান। তন্মধ্যে উল্লেখ যেগ্যি হলো :
৪/১. আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা এরশাদ করেছেন : ‘আর আল্লাহর উদ্দেশে এই গৃহের হাজ্জ করা সেই সব মানুষের কর্তব্য যারা সফর করার আর্থিক সামর্থ্য রাখে এবং যদি কেহ অস্বীকার করে তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ সমগ্র বিশ্ববাসী হতে প্রত্যাশামুক্ত’। [সূরা আল-ইমরান : ৯৭]।

৪/২. অনুরূপভাবে আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা এরশাদ করেছেন : হাজ্জের মাসগুলি সুনির্ধারিতকেহ যদি ঐ মাসগুলির মধ্যে হাজ্জের সংকল্প করে তাহলে সে হাজ্জের সময়ে সহবাস, দুস্কার্য ও কলহ করতে পারবেনা এবং তোমরা যে কোন সৎ কাজ করনা কেন আল্লাহ তা জ্ঞাত আছেনআর তোমরা তোমাদের সাথে পাথেয় নিয়ে নাওবস্ত্ততঃ উৎকৃষ্ট পাথেয় হচ্ছে তাকওয়া বা আত্মসংযমসুতরাং হে জ্ঞানবানগণ! আমাকে ভয় কর’। [সূরা বাক্বারা : ১৯৭]।

৪/৩. আবূ হুরায়রাহ (রা) থেকে বর্ণিততিনি বলেন, রাসূল (সা) বলেছেন : ‘ইসলামের মূল ভিত্তি হলো পাঁচটি। কালিমা (ঈমান), সালাত, যাকাত, সাওম ও হাজ্জ’। [সহীহ বুখারী হা/নং ৮, সহীহ মুসলিম হা/নং ১৬]।

৪/৪. আবূ হুরায়রাহ (রা) থেকে বর্ণিততিনি বলেন, রাসূল (সা) আমাদের উদ্দেশে ভাষণ দিলেন এবং বললেনঃ হে জনগণ! তোমাদের উপর হাজ্জ ফরয করা হয়েছেঅতএব তোমরা হাজ্জ করএক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রসূল! তা কি প্রতি বছর? রাসূল (সা) নীরব থাকলেন এবং সে তিনবার কথাটি বললএরপর রাসূল (সা) বললেন, আমি হ্যাঁ বললে তা ওয়াজিব হয়ে যাবে (প্রতি বছরের জন্য) অথচ তোমরা তা পালন করতে সক্ষম হবে না[সহীহ মুসলিম ৩১৪৮ (হা. এ) ৩১২৩ (ই. ফা) ৩১২০ (ই. সে)]।

৫. হজ্জের উদ্দেশ্য, হিকমাহ (গূঢ়রহস্য) ও উপকারীতাঃ
৫/১. হজ্জের উদ্দেশ্যঃ
হজ্জের উদ্দেশ্য হলো সারা বিশ্বের মুসলিমদের সম্মিলিত করার মাধ্যমে আল্লাহর হুকুম পালন ও তাদের কল্যাণ সাধন করা এক কথায় শিরক পরিহার করে আল্লাহকে একমাত্র প্রভু হিসেবে স্বীকার করে নেওয়া। হজ্জ অনুষ্ঠান বিশ্ব মুসলিম ঐক্য-সংহতি ও ভ্রাতৃত্বের এক অপূর্ব নিদর্শন হজ্জের উদ্দেশ্য হলো আল্লাহকে রাজি খুশী করা তালবিয়া ঘোষণার মাধ্যমে তাওহীদ ভিত্তিক জীবন যাপন করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ হওয়া

৫/২. হজ্জের হিকমাত তথা গূঢ়রহস্যঃ

মহান আল্লাহ মানবজাতিকে হজ্জ আদায়ের মাধ্যমে ‘আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলার সন্তুষ্টি ও গুনাহমুক্ত জান্নাত অর্জন করা, বিশ্ব মুসলিমের একত্ববোধ জাগ্রত করণ, সুখ-শান্তি, সমৃদ্ধি, ভ্রাতৃত্ববন্ধন, আধ্যাত্মিক ঐক্যের উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করা, আদর্শিক ভ্রার্তত্বের বন্ধন অটুট করা, অপরূপ সাম্য-সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য আদান-প্রদান করা, শৃঙ্খলাবোধের উন্মেষ করা, সহানুভূতি সৃষ্টি, অর্থনৈতিক ও কায়িক প্ররিশ্রমের সমন্বয় সাধনে যৌগিক ইবাদত করা, মুসলিমের মৌলিক অধিকার প্রদান, বিশ্ব মুসলিমের সর্ববৃহৎ শান্তি সম্মেলন-এ রূপদান, বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব সৃষ্টির পটভূমিকায় কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ, ত্যাগের শিক্ষা, বিশ্ব মুসলিম অর্থ তহবিল গঠন, মিতব্যয়িতা ও সংযমী হতে,  অর্থনৈতিক সাম্য ও সহানুভূতি প্রতিষ্ঠা, নতুন চেতনা শক্তির উন্মেষ ঘটানোই হলো হজ্জের হিকমাত তথা গূঢ়রহস্য

৫/৩. হজ্জের বহুবিদ উপকারীতাঃ

১. হজ্জ পালন করার মাধ্যমে ইসলামের একটি রুকন আদায় করা হয় 
২. হজ্জ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করার সমান ফযীলতপূর্ণ একটি ইবাদত।
৩. যে ব্যক্তি শরয়ি পদ্ধতিতে হজ্জ আদায় করবে সে অফুরন্ত সওয়াব ও মহা পুরস্কার প্রাপ্ত হবে ; যার প্রতিদান হলো জান্নাত এবং হজ্জ আদায়কারী হবেন নিষ্পাপ শিশুর মত
৪. হজ্জের মধ্যে আল্লাহর যিকির, তাঁকে সম্মান প্রদর্শন করা ও তাঁর নিদর্শনাবলি ফুটিয়ে তোলা হয় 
৫. এ ইবাদত পালনের উদ্দেশ্যে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আগত মুসলমানদের সম্মিলন ঘটে, পারস্পারিক পরিচিতি, সম্পর্ক ও হৃদ্যতা তৈরী হয় এর সাথে পাওয়া যায় নানা ওয়াজ-নসিহত, দিকনির্দেশনামূলক আলোচনা ও নেকীর কাজে উদ্বুদ্ধ করণমূলক নির্দেশনা
৬. একই পোশাকে, একই স্থানে, একই সময়ে মুসলমানদের এভাবে প্রকাশ পাওয়া কারণ হাজীগণ একই সময়ে পবিত্রস্থানগুলোতে একত্রিত হয়ে থাকেন তাদের সকলের একই কাজ সকলের পোশাকও এক চাদর ও লুঙ্গি এবং সকলে আল্লাহর প্রতি বিনয়াবনত
৭. এ ছাড়াও হজ্জের মৌসুমে দুনিয়া ও আখেরাতের আরও প্রভূত কল্যাণ সাধিত হয় এবং মুসলমানদের পারষ্পারিক কোললাদি ও সুবিধা বিনিময় হয় 
৮. হজ্জের মধ্যে যে ওয়াজিব কুরবানী ও মুস্তাহাব কুরবানী আল্লাহর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়; আল্লাহর সীমানাগুলোর প্রতি সম্মানপ্রদর্শনপূর্বক এর মাধ্যমে নিজেরা গোশত ভক্ষণ করা, অন্যকে হাদিয়া দান করা এবং গরীবদেরকে সদকা করা ইত্যাদি আমলের সুযোগ থাকেঅতএব, হজ্জের উপকারিতা, এর গূঢ়রহস্য অফুরন্ত

৬. হজ্জের ফযীলত (তাৎপর্য-মাহাত্ম) ও গুরুত্বঃ

৬/১. হজ্জের ফযীলত (তাৎপর্য ও মাহাত্ম) :
৬/১/ক. হজ্জ এমন একটি ইবাদাত যার প্রত্যেকটি কাজে আল্লাহর যিকর করা হয়তাওয়াফ, সাঈ, রমঈল জিমার (পাথর নিক্ষেপ), মিনা,মুযদালিফাহ, আরাফাহসহ প্রত্যেকটি নির্দেশনায় আল্লাহর যিকরে প্রতিধ্বনিত হয়।  আল্লাহ তায়ালা বলেন :
 অনন্তর যখন তোমরা তোমাদের (হাজ্জের) অনুষ্ঠানগুলি সম্পন্ন করে ফেল তখন যেরূপ তোমাদের পিতৃ-পুরুষদেরকে স্মরণ করতে তদ্রুপ আল্লাহকে স্মরণ কর, বরং তদপেক্ষা দৃঢ়তরভাবে স্মরণ কর; কিন্তু মানবমন্ডলীর মধ্যে কেহ কেহ এরূপ আছে যারা বলেঃ হে আমাদের রাব্ব! আমাদেরকে ইহকালেই দান কর এবং তাদের জন্য আখিরাতে কোনই অংশ নেই’। (সূরা বাকারাহ : ২০০]।

৬/১/খ. আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা অনুরূপভাবে অন্যত্র বলেন :
তোমরা স্বীয় রবের অনুগ্রহ লাভের চেষ্টা করলে তাতে তোমাদের পক্ষে কোন অপরাধ নেই; অতঃপর যখন তোমরা আরাফাত হতে প্রত্যাবর্তিত হও তখন পবিত্র স্মৃতি-স্থানের নিকট আল্লাহকে স্মরণ কর; এবং তিনি তোমাদেরকে যেরূপ নির্দেশ দিয়েছেন তদ্রুপ তাঁকে স্মরণ কর; এবং নিশ্চয়ই তোমরা এর পূর্বে বিভ্রান্তদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে  (সূরা বাকারাহ : ১৯৮]।

৬/১/গ. হজ্জ পালন উত্তম ইবাদাত :
আবূ হুরাইরাহ্ (রা) হতে বর্ণিত, নাবী (সা)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেন : আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনাজিজ্ঞেস করা হলো, অতঃপর কোনটি? তিনি বললেন : আল্লাহর পথে জিহাদ করাজিজ্ঞেস করা হলো, অতঃপর কোনটি? তিনি বলেন : হাজ্জ-ই-মাবরূর (মাকবূল হাজ্জ)[সহীহ বুখারী হা/নং ১৫১৯]।

৬/১/ঘ. হাজিগণ আল্লাহর মেহমান তাদের সকল অপরাধ ক্ষমা করা, তাদের দু‘আ কবূল করা এবং তাদের চাহিদা পূরণ করা হয় :
ইবনে উমার (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা) বলেছেন : ‘আল্লাহর পথের সৈনিক, হজ্জযাত্রী ও উমরা যাত্রীগণ আল্লাহর প্রতিনিধিতারা আল্লাহর নিকট দু‘আ করলে তিনি তা কবুল করেন এবং কিছু চাইলে তা তাদের দান করেন অন্য বর্ণণায় আছে : ‘তারা তাঁর নিকট দোয়া করলে তিনি তাদের দোয়া কবুল করেন এবং তাঁর নিকট মাফ চাইলে তিনি তাদের ক্ষমা করেন’। [ইবনু মাযাহ হা/নং ২৮৯৩ এবং ২৮৯২]।

৬/১/ঙ. হজ্জ জিহাদ অপেক্ষা উত্তম ‘আমল :
উম্মুল মুমিনীন আয়িশাহ্ (রা) হতে বর্ণিততিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! জিহাদকে আমরা সর্বোত্তম আমল মনে করিকাজেই আমরা কি জিহাদ করবো না? তিনি বললেন : না, বরং তোমাদের জন্য সর্বোত্তম জিহাদ হল, হাজ্জে মাবরূর [সহীহ বুখারী হা/নং ১৫২০]।

৬/১/চ. হাজ্জে মাবরূরের একমাত্র প্রতিদান হলো জান্নাত :
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এক উমরাহর পর আর এক উমরাহ উভয়ের মধ্যবর্তী সময়ের (গুনাহের) জন্য কাফফারাআর জান্নাতই হলো হাজ্জে মাবরূরের প্রতিদান[সহীহ মুসলিম হা/নং ১৭৭৩ (হা. এ), আহমাদ হা/নং ৯৯৫৫, (আ. প্র হা/নং ১৬৪৭), (ই. ফা হা/নং ১৬৫৫)]।

৬/২. হজ্জের গুরুত্ব :
৬/২/ক. হজ্জের গুরুত্ব অপরিসীম। হজ্জের গুরুত্বারোপ কল্পে আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা পবিত্র কুরআনে স্বতন্ত্র একটি সূরা ‘সূরা হাজ্জ’ অবতীর্ণ করেছেন। এ থেকেই হাজ্জের গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়।

৬/২/খ. আর্থীক সঙ্গতি ও শারীরিক সক্ষমতার ভিত্তিতে জীবনে একবার হাজ্জ আদায় করা ফরয। ইহা অস্বীকার করা কুফরী এবং ফরয হওয়ার পর আদায়ে বিলম্ব ও বাহানা খোজা নিফাক্বীর শামিল।

৬/২/গ. হজ্জ ফরয হওয়ার পর হজ্জ আদায় না করা ভয়াবহ দূর্ভোগ, কুফল ও রাসূল (সা)-এর সতর্ক বার্তা রয়েছে। আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি আল্লাহ্ তা'আলার ঘর পর্যন্ত পৌছার মত সম্বল ও বাহনের অধিকারী হওয়ার পরও যদি হাজ্জ না করে তবে সে ইয়াহুদী হয়ে মারা যাক বা নাসারা হয়ে মারা যাক তাতে (আল্লাহ তা'আলার) কোন ভাবনা নেই কারণ আল্লাহ তা'আলা তার কিতাবে বলেনঃ মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাবার সামর্থ্য আছে, আল্লাহ্ তা'আলার উদ্দেশে ঐ ঘরের হাজ করা তার অবশ্য কর্তব্য। (সূরাঃ আল-ইমরান - ৯৭)হাদীসটি যঈফ তথা দুর্বল; তিরমিযী হা/নং ৮১২, মিশকাত মিশকাত হা/নং ২৫২১, তালীকুর রাগীব ২/১৩৪, দারেমী হা/নং ১৮২৬, বায়হাক্বী হা/নং ৩৬৯৩]

৬/২/ঘ. তবে তবে বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত : ওমর ফারুক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন :  হাজ্জ ফরয হওয়ার পর আর্থীক সঙ্গতি ও শারীরিক সক্ষমতা থাকা সত্বেও যারা হাজ্জ আদায় করে না তবে সে ইয়াহুদী হয়ে মারা যাক বা নাসারা হয়ে মারা যাক তাতে (আল্লাহ তা'আলার) কোন ভাবনা নেই এই সনদটি বিশুদ্ধ ; তাফসীর ইবনে কাছীর (আরবি) ২/৮৫, বাংলা (অনুবাদ ড. মুজীবুর রহমান) ৪র্থ-৭ম/১২৬, তাফসীর ত্ববারী ২/২৫ , মুসনাদ আল-ফারুক ১/২৯২, উমদাতুত তাফসীর ১/৩৯৫]

৬/২/ঙ.  ওমর ফারুক (রা:) এ ব্যাখ্যায় বলেছেন : সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যারা হজ্জ করে না তাদের ওপর জিযিয়া কর আরোপ করতে ইচ্ছে হয়; কারণ তারা, মুসলমান নয় [প্রাগুক্ত]।

৭. হজ্জের আহকাম সমূহঃ

৭/১. যাদের উপর হজ্জ ফরয বা হজ্জের শর্ত সমূহঃ
১. মুসলিম হওয়া
২. প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া।
৩. স্বাধীন হওয়া
৪. বিবেকবান হওয়া
৫. নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়া ; যে ব্যক্তি হজের সফর (পথ খরচ) বহন করতে সক্ষম এবং তার অনুপস্থিতিকালীন তার পরিবারবর্গের প্রয়োজন মেটানোর মতো খরচও রেখে যেতে সক্ষম, এমন ব্যক্তির ওপর হজ ফরজঅনুরূপ যে ব্যক্তি হজের শাওয়াল মাস শুরু হওয়া থেকে সৌদি আরবে অবস্থানরত ছিল এবং জিলহজ মাস পর্যন্ত সৌউদী আরবে অবস্থান করতে থাকে এবং তার ওপর যদি কোনো বিধি-নিষেধ, ওজর ও অসুবিধা না থাকে তাহলে তার ওপরও হজ পালন করা ফরজ  ইত্যাদি
৬. যাতায়াতে নিরাপত্তা
৭. মহিলাদের সাথে মাহরাম থাকা

৭/২. হজ্জের ফরজ বা রুকন ৩টি :

. ইহরাম বাধা (সেলাইমুক্ত সাদা কাপড় পরিধান করা, নিয়ত করা ও তালবিয়্যাহ পড়া)।
. আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা।
. তাওয়াফে ইফাদাহ করা (আগমনী তাওয়াফ করা)।

৭/৩. হজ্জের ওয়াজিব ৬টি :

১. সাফা ও মারওয়া পাহাড় দ্বয়ের মাঝে ৭ বার সায়ী করা
২. মুযদালিফায় রাত যাপন করা।
৩. মিনায় তিনটি জামারাতে শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করা
৪. মিনার ময়দানে কুরবানী করা।
৫. ইহরাম খোলার পূর্বে মাথার চুল মুন্ডানো বা ছাটা
. বিদায়ী তাওয়াফ করা

৭/৪. হজ্জের সুন্নাত কর্ম সমূহঃ
১. জিলহজ্জের  তারিখে মিনার উদ্দেশ্যে গমন করা
২. সূর্য্য উদীত হওয়ার পর আরাফার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়া এবং যোহর, আসর, মাগরিব, এশা ও ফযর পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা।
৩. ৯ই জিল হজ্জ সূর্য উদয়ের পর আরাফায় উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়া
৪. আরাফার ময়দানে গোসল করা
৫. মিনায় অবস্থানকালীন ১০, ১১, ১২ তারিখ রাত্রগুলো মিনায় অবস্থান করা
৬. আরাফা প্রত্যাবর্তন করে মুযদালিফায় রাত্রি যাপন করা
৭. আরাফা থেকে সূর্য অস্ত যাবার পর হজ্জের ইমামের রওয়ানার পর রওয়ানা দেওয়া 

৭/৫. ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কর্ম সমূহঃ

১. সেলাইযুক্ত যে কোন কাপড় বা জুতা ব্যবহার, এক্ষেত্রে স্পঞ্জ সেন্ডেলের ব্যবহার করা
২. মস্তক ও মুখমন্ডল (ইহরামের কাপড়সহ যে কোন কাপড় দ্বারা) ঢাকা,
৩. পায়ের পিঠ ঢেকে যায় এমন জুতা পরা
৪. চুলকাটা বা ছিড়ে ফেলা
৫. হাত-পায়ের কাটা
৬. ঘ্রানযুক্ত তৈল বা আতর লাগানো
৭. স্ত্রীর সঙ্গে সংগম করা
৮. যৌন উত্তেজনামূলক কোন আচরণ বা কোন কথা বলা
৯. স্থলজ প্রাণী শিকার করা
১০. ঝগড়া বিবাদ বা যুদ্ধ করা
১১. চুল দাড়িতে চিরুনী বা আঙ্গুলী চালনা করা, যাতে ছিড়ার আশংকা থাকে
১২. শরীরে সাবান / শ্যাম্পু লাগানো
১৩. উকুন, ছারপোকা, মশা ও মাছিসহ কোন জীবজন্তু হত্যা করা বা মারা
১৪. কোন গুনাহের কাজ করা, ইত্যাদি

৮. হজ্জের প্রকারভেদ ও পরিচিতিঃ
হজ্জ তিন প্রকার। যথা :

১. হজ্জে ইফরাদ : ওমরাহ্ ব্যতিত শুধু হজ্জের জন্য ইহরাম বাঁধা এবং হজ্জের সাথে ওমরাহকে না মিলানো। (বদলী হজ্জের জন্যও এই হজ্জ)

২. হজ্জে ক্বিরান : একত্রে একই স্থান থেকে হজ্জ ও ওমরার নিয়্যাত করে হজ্জের সাথে ওমরাহকে মিলানো এবং একই ইহ্রামে উভয়টি আদায় করা

৩. হজ্জে তামাত্তু : একই সফরে পৃথক পৃথক ভাবে ইহরাম পরিধান করে হজ্জ ও ওমরাহ আদায় করা প্রথম ইহরামে ওমরাহর নিয়্যাত করে তা পালন শেষে চুল কেটে ইহরাম খুলে হালাল হয়ে দ্বিতীয় বার নতুন করে হজ্জের নিয়্যাতে ৮ই জিলহজ্জ মক্ক শরীফ থেকে হজ্জের জন্য ইহরাম বাধা তামাত্তু করার ইচ্ছা থাকলে প্রথমে ওমরার নিয়্যাত করে এহরাম বাঁধুন


৯. তালবিয়া, তাওয়াফ ও সা‘য়ীর বিবরণঃ
৯/১. তালবিয়ার শব্দ ও অর্থঃ
(‘‘লাব্বাঈকা আল্লাহুম্মা লাব্বাঈক, লাব্বাঈকা, লা-শারীকা-লাকা লাব্বাঈক, ইন্নাল হামদা ওয়ান্ নিমাতা লাকা ওয়াল-মুল্ক, লা শারীকালাক”) হে আল্লাহ আমি হাজির! আমি উপস্থিত! আপনার ডাকে সাড়া দিতে আমি হাজির আপনার কোন অংশীদার নেই নিঃসন্দেহে সমস্ত প্রশংসা ও সম্পদরাজি আপনার এবং একচ্ছত্র আধিপত্য আপনারআপনার কোন অংশীদার নেই

৯/২. তাওয়াফের বিবরণ :

হাজীদের সর্বপ্রথম কাজই হলো (তামাত্তু ও ক্বেরান কারীগণ) নিজের মালছামানগুছিয়ে রেখে পাকপবিত্র হয়ে মোটেই দেরী না করে হারাম শরীফে হাজিরা দেওয়া এবং তাওয়াফ করা ওমরাহ এবং হজ্জের তাওয়াফ ব্যাতিত নফল তাওয়াফ ও করা যায় যেমন: রাসূল (দঃ), সাহাবা-আওলিয়া, আহ্লে বাইত, মা-বাবা, পীর-উস্তাদ ও অন্যান্য মুরুব্বী বা সন্তানদের স্মরনে বা তাঁদের নামে তাওয়াফ করা

৯/৩. তাওয়াফের ওয়াজিব কর্ম সমূহঃ

১. শরীর পাক-সাফ রাখা, ওজু করা মহিলাদের হায়েজ নেফাছ অবস্থায় তাওয়াফ করা জায়েজ নাই
২. ছতর ঢাকা অর্থাৎ যেটুকু ঢাকা প্রত্যেক পুরুষ-নারীর জন্য ফরজ
৩. হাতীমে কাবার বাইরে থেকে তাওয়াফ করা
৪. পায়ে হেঁটে তাওয়াফ করা ক্ষম ব্যক্তি খাটিয়ার মাধ্যমে তাওয়াফ করতে পারেন
৫. ‘হাজরে আস্ওয়াদ থেকে শুরু করে ডানদিক দিয়ে তাওয়াফ শুরু করা
৬. এক নাগাড়ে বিরতিহীন ভাবে সাতবার চক্কর দিয়ে তাওয়াফ পূর্ণ করা
৭. সাত চক্করে এক তাওয়াফ’, এটা পূর্ণ হলেই তাওয়াফের নামাজ পড়া

৯/৪. তাওয়াফের সুন্নাত কর্ম সমূহঃ

১. তাওয়াফের শুরুতে হাজারে আসওয়াদ এর দিকে মুখ করা
২. সম্ভব হলে হাজরে আস্ওয়াদ চুম্বন করা নতুবা হাত দ্বারা দূর থেকে ইশারা করা, এবং মুখে বিসমিল্লাহি আল্লাহু আক্বার ওয়ালিল্লাহিল হাম বলা
৩. হাজরে আসওয়াদবরাবর দাঁড়িয়ে তাকবীরে তাহরিমার ন্যায় উভয় হাত সিনা পর্যন্ত উঠান
৪. যে তাওয়াফের পরে সাঈ আছে তাতে এযতেবা করা অর্থাৎ ইহরামের চাদরের (উপরের অংশের) দুই মাথা ডান বগলের নিচ দিয়ে বাম কাঁধের উপর ফেলে দেওয়া
৫. সাঈ যুক্ত তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করে রমল করা অর্থাৎ বীরের মত হেলে দুলে জোর ক্বদমে (একের পর এক পা ফেলে) চলা
৬. বাকী চার চক্কর সাধারণ গতিতে (ধীরে ধীরে) সম্পন্ন করা
৭. প্রত্যেক চক্কর তাওয়াফ শেষ করে এবং শেষ চক্করেরও পরে হাজরে অস্ওয়াদকে চুম্বন করাসম্ভব না হলে দূর থেকে ইশারা করে বিসমিল্লাহে আল্লাহ আকবর ওয়ালিল্লাহিল হামদ, দু‘আটি পাঠ করা এবং ৩ নং নিয়মের ন্যায় দাড়িয়ে ইশারা করে তাওয়াফ শেষ করা

৯/৫. সায়ীর নিয়মঃ

হজ্জ ও ওমরাহ ছাড়া নফল তাওয়াফের কোন সায়ী নাই কারো নামে ওমরাহ করতে হলেও সায়ী করতে হবে সায়ী অর্থ দৌড়ানো এটা ছাফা পাহাড় থেকে প্রথমে শুরু করতে হবে ছাফা থেকে মারওয়ামারওয়া থেকে ছাফায় এভাবে সাতবার সায়ীর সময় প্রথম তিন চক্কর সবুজ বাতির মাঝের অংশটুকু দৌড়ে দৌড়ে হেলে দুলে যাওয়া সুন্নাত (পুরুষদের জন্য) পরের চার চক্কর সাধারণ গতিতে সম্পন্ন করতে হবে

১০. হজ্জের শিক্ষাঃ
১. সকল মুসলিমকে শিরক ও বিদয়াতের অভিশাপ থেকে মুক্ত থাকা।
২. বিশ্বের সকল অমুসলিমের নিকট কুরআন ও সুন্নাহর দাওয়াত পৌছানো।
৩. মহানবী (সা)-এর ঘোষণা মোতাবেক সকল মুসলিম নর-নারীকে কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী জীবনের সকল কর্মসম্পাদন করা।
৪. মুসলিম দেশগুলোতে আল-কুরআনের আইন চালু করা।
৫. অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বিষয়ে মুসলিম উম্মাহ পারস্পরিক পরামর্শ ও সিদ্বান্তের ভিত্তিতে চলা।
৬. মুসলমানদের বিরুদ্বে অন্যায়ভাবে হস্তক্ষেপকারী দেশগুলোকে ঐক্যবদ্বভাবে প্রতিরোধ করা।
৭. নিজেরা ভ্রাতৃঘাতী কোন যুদ্বে না জড়ানো।
৮. মুসলমানদের শিক্ষা, সাংস্কৃতি, মূল্যবোধ ও দারিদ্রতা বিমোচনের জন্য সবাই একযোগে কাজ করা।
৯. সকলেই দ্বন্দ-কলহ মিটিয়ে লড়াই ঝগড়ার পরিবর্তে ভালবাসা ও ভ্রাতৃত্ব স্থাপনের জন্য উদ্দ্যোগ গ্রহণ করা।
১০. হজ্জের সংক্ষিপ্ত খোতবায় থাকবে সকল মানুষের জন্য শান্তির বাণীসহ কার্যকর নির্দেশনা

১১. উপসংহারঃ
মহান আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা আমাদের সকলকে তাঁর সন্তুষ্টি ও জান্নাত অর্জনের নিমিত্তে বহুবিদ ফযীলতপূর্ণ, গুরুত্ববহ, সাওয়াব সম্বলিত, মুসলিম জাতির ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক বাৎষরিক সর্ববৃহৎ তীর্থযাত্রা ও গণজামায়েত এবং উল্লেখযোগ্য ইবাদত তথা হাজ্জ পালনের তাওফীক্ব দান করুন, আমীন।

No comments:

Post a Comment