Monday, 28 October 2019
ইউটিউব-এ ‘সত্যকন্ঠ মিডিয়া’ কর্তৃক প্রকাশিত জীবনঘনিষ্ঠ, খুবই দরকারি ও উপকারী ভিডিও সমূহঃ অনুগ্রহপূর্বক লাইক, শেয়ার, কমেন্ট ও সাবস্ক্রাইভ করুন।
ইউটিউব-এ ‘সত্যকন্ঠ মিডিয়া’
পরিচালনায় : আব্দুস সালাম হুসাইন আলী
YouTube
/ ইউটিউব-এ
‘সত্যকন্ঠ
মিডিয়া’ কর্তৃক
প্রকাশিত জীবনঘনিষ্ঠ, খুবই দরকারি ও উপকারী ভিডিও সমূহঃ অনুগ্রহপূর্বক লাইক, শেয়ার, কমেন্ট
ও সাবস্ক্রাইভ করুন।
০১/ক. তাক্বওয়া : মু’মিনের জীবনের ভালো, উত্তম ও শ্রেষ্ঠ ভূষণ ; মুফতি আব্দুস সালাম হুসাইন আলী
০১/খ. তাক্বওয়া মুমিনের শ্রেষ্ঠ ভূষণ। মুফতি আব্দুস সালাম হুসাইন আলী
০২. সমকালীন প্রসঙ্গে ইসলাম । হজ্জের ধারাবাহিক নিয়মাবলী ; মুফতি আব্দুস সালাম হুসাইন আলী
০৩. লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর প্রকৃত অর্থ, ফযীলত ও শর্তসমূহঃ । পর্ব ০১ । আলোচক : আব্দুস সালাম হুসাইন আলী
০৪. লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর প্রকৃত অর্থ, ফযীলত ও শর্তসমূহঃ । পর্ব ০২ । আলোচক : আব্দুস সালাম হুসাইন আলী
০৫. আরবি ভাষা শেখার আসর – মুফতি আব্দুস সালাম হুসাইন আলী
০৬. বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বক্তব্য। আব্দুস সালাম হুসাইন আলী
০৭. আরবি বক্তব্য ; মুফতি আব্দুস সালাম হুসাইন আলী
০৮. মনোমুগ্ধকর সুন্দর কুরআন তিলাওয়াত ; মাহফুজুর রহমান বিন আব্দুস সালাম
০৯. মনোমুগ্ধকর সুন্দর কুরআন তিলাওয়াত ; মা’রুফুর রহমান বিন আব্দুস সালাম।
১০. Documentary of
Islamic University of Madinah K.S.A
১১. ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রাহি.) ; যার জীবনের প্রতিটি পরতে
রয়েছে আদর্শ, শিক্ষা ও নিদর্শণঃ
১২. রামাদান কিভাবে দেহের উপর আত্মার বিজয় লাভ করে?- ড. মুফতি কাজী মুহাম্মাদ ইবরাহীম
১৩. Beast Beautiful
Lecture of Mufti Ismail Menk
১৪. মনোমুগ্ধকর, সুন্দর, অন্তর কাড়া কুরআন তিলাওয়াত
১৫. মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য। মাওলানা শফিকুল ইসলাম ভাঙ্গা ফরিদপুর।
লিঙ্ক : https://www.youtube.com/watch?v=hXBDQ4mZUpo&t=212s
১৬. আরবি
সঙ্গীত ; আমি
মুসলিম শিশু, কখনো মিথ্যা বলব না ; نشيد الإسلامية : أنا طفل
المسلم সংগ্রহে - আব্দুস সালাম হুসাইন আলী
লিঙ্ক : https://www.youtube.com/watch?v=4fJwPIYh-Ug&t=194s
১৭. শিশুদেরকে বিশুদ্ধ কুরআন তিলাওয়াত শিক্ষা দিন। تعلم الأطفال تلاوة القرآن
الكريم
Sunday, 27 October 2019
তারিক বিন যিয়াদ (রাহি.) এবং তার ঐতিহাসিক ভাষণঃ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
ইসলামী অকুতোভয় বিপ্লবী বীর সেনানী, সুদক্ষ, চৌকস যোদ্ধা, যুদ্ধ বিদ্যায় পারদর্শী ও বাকপটু, সফল সমর ও রাষ্ট্রনায়ক, অদম্য দূর্জয় দ্বিকবিজয়ী, স্পেন বিজেতা, সফল রাষ্ট্রপতি ও শাসক ;
তারিক
বিন যিয়াদ (রাহি.) এবং তার ঐতিহাসিক ভাষণঃ
সংকলনে : আব্দুস সালাম হুসাইন আলী
০১. ভূমিকা /
অবতরণিকাঃ
মুসলিম জাতির নৈতিক
অবক্ষয়ের এই যুগে উম্মতের একজন তারিক বিন যিয়াদের খুবই দরকার। যার নেতৃত্বে মুসলিম উম্মাহর হারানো অধিকার
আবার পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠিত হবে এবং যার সুবাতাস সর্বত্রই বয়বে। জাতি ফিরে পাবে হারানো অধিকার।
০২. স্মৃতিচারণঃ
৭১১ খ্রিষ্টাব্দে
(রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের মাত্র ৮০ বছরের মাথায়)
আফ্রিকার পশ্চিমাঞ্চল বিজয় শেষে সেনাপতি তারিক বিন যিয়াদ মরক্কোর উপকূল থেকে জাহাজ
বোঝাই সৈন্য নিয়ে পৌঁছে গেলেন স্পেনের তটরেখায়। ভূমধ্যসাগরের যে প্রনালির নাম আজ জিব্রালটার
প্রনালি এটিই স্পেনের উপকূলীয় পর্বতমালার আরবী নাম ‘জাবাল আত-তারিক’ এর বিবর্তিত রূপ। মুসলিমরাই প্রনালি ও পর্বতের নাম দিয়েছিলেন
জাবালুত-তারিক বা সেনাপতি তারিকের পর্বতমালা।
০৩. বিদেশ
বিভুয়ে রণ ভ্রমণঃ
প্রায় দেড়হাজার বছর আগের
সে হস্তনির্মিত পালের জাহাজ নিয়ে সেনাপতি তারিক যেদিন সেই বিদেশ বিভুয়ে পৌঁছুলেন
সেদিন ইতিহাস এক বিস্ময়কর নজিরবিহীন দৃশ্য দেখার সুযোগ পেয়েছিলো। তারিক তাঁর সৈন্যদের নির্দেশ দিলেন, তোমাদের সকল নৌযান তীরে তুলে এনে আগুনে জ্বালিয়ে দাও। কেননা, আমরা ইউরোপ থেকে ফিরে
যাব বলে আসিনি। হয় তোমরা দুর্ধর্ষ
রডারিক বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করে এ ভূখণ্ড দখল করবে নয়ত বীরের মত জীবন দান করবে। বিকল্প কোন পথ আমরা খোলা রাখতে চাই না। এক পর্যায়ে তাঁর নির্দেশে মুসলিম বাহিনীর সকল
জাহাজ জ্বালিয়ে ছাই করে দেওয়া হয়।
০৪. আরবি সাহিত্য, নাহু-সরফ ও বালাগাত (অলঙ্কারশাস্ত্র)-এর সুনৈপণ্য
সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক ভাষণঃ
আরবী সাহিত্যের ইতিহাসে কেবল নয়, বিশ্বসাহিত্যের ইতিহাসেও যুদ্ধক্ষেত্রে প্রদত্ত সেনাপতির ঐতিহাসিক ভাষণ
সংগ্রহে সেনাপতি তারিকের সেদিনকার সে অগ্নিক্ষরা যুগান্তকারী ভাষণ চিরদিনের জন্য
স্থান করে নিয়েছে।
أيها الناس، أين المَفَرُّ؟ البحرُ من ورائكم، والعدوُّ أمامَكم،
وليس لكم واللَّهِ إلا الصدقُ والصَبْرُ، واعلموا أنكم في هذه الجزيرة أَضْيَعُ من
الأيتام في مَأْدُبَةِ اللِّئام، وقد اسْتَقْبَلَكم عدوّكم بِجَيْشِهِ
وأَسْلِحَتِهِ، وأَقْواتُه موفورةٌ ، وأنتم لا وَزَرَ لكم إلا سيوفُكم ولا أقواتَ
إلا ما تَسْتَخْلِصُونَه من أيدِي عدوِّكم، وإِن امْتَدِّتْ بكم الأيامُ على
افتقارِكم ولم تُنْجِزوا لكم أمراً ذهبتْ رِيحُكم، وتَعَوّضَتِ القلوبُ من
رُعْبِها منكم الجَرَاءَةَ عليكم، فادفعوا عن أنفسكم خُذْلانَ هذه العاقبة من
أمركم بِمُنَاجَزَةِ هذا الطاغية.
হে বাহাদুর যুবক ভাই, বন্ধু ও যোদ্ধাগণ! তোমরা
কোথায় পালাবে? পিছু হটবার ও পলায়ন করার কোন সুযোগ নেই। কেননা সমুদ্র তোমাদের পিছনে মৃত্যুক্ষুধা নিয়ে
অপেক্ষমান, সামনে তোমাদের দুর্ধর্ষ শত্রু সৈন্যদল। আল্লাহর শপথ! সততা ও ধৈর্য্য ধারণ ব্যতীত তোমাদের কোন গন্তব্য নেই তথা ; বীর দর্পনে যুদ্ধ করে বিজয় লাভ করা অথবা শাহাদাতের
অমৃত শুধা পান করা ব্যতীরেকে তৃতীয় কোন পথ অবশিষ্ট নেই। জেনে রাখ! তোমরা এই দ্বীপে ঐ সব এতিমদের হারিয়েছ যাদের সাথে তোমরা একই
খাদ্যের টেবিলে বসে দয়া-মায়াহীন লোভী মালিকদের সাথে বসে খাদ্য গ্রহণ করতে। আর অবশ্যই তোমাদের শত্রুবাহিনী তোমাদেরকে
যুদ্ধাস্ত্র ও সৈন্য দ্বারা হাতছানি দিয়ে অভ্যর্থনা জানাচ্ছে। যারা সংখ্যায় অগণিত,
যারা জনবল, অস্ত্রবল ও বাহুবলে পরিপূর্ণ বলিয়ান ও শক্তিমান। আর তোমরা হচ্ছ রিক্তহস্ত ও নিঃস্ব শুধুমাত্র শ্বাণিত তরবারী ব্যতিরেকে অন্য
কোন কিছুই নেই। আর তোমরা যদি দিনের পর দিন অপেক্ষার প্রহরকে দীর্ঘায়ীত কর তাহলে
নিঃস্ব হয়ে যাবে কিন্তু ফলস্বরূপ কার্যকারী ও ভাল কোন ফলাফল পাবে না বরং সর্বস্ব
ক্ষুয়ে ফেলবে। আর তোমাদের মন ও অন্তরের ধী শক্তি ও সাহস লোপ পাবে তাদের অস্ত্র ও
সংখ্যাধিক্তার কারণে অন্তরে ভয় নামক অপদার্থ এনথ্রাক্স জেঁকে বসবে। সুতরাং তোমরা
তোমাদের সর্ব শক্তি প্রয়োগ করে জান ও মাল উৎসর্গ করে শত্রুর উপর ঝাপিয়ে পড় এই
বিরুদ্ধচারণকারী, অত্যাচারিত, অভিশপ্ত ও ঘৃণিত কীটদের মোকাবেলায়। অর্থাৎ তোমারা
বেচে থাকতে পারবে যদি শত্রুর হাত থেকে নিজেদের জীবনকে ছিনিয়ে আনতে পার। ভেবোনা আমি তোমাদের সাথে থাকবো না। আমিই সবার সামনে থাকব, এবং আমার বাচার সম্ভাবনাই সবচেয়ে ক্ষীন।"
০৫. রোমাঞ্চকর
উপলদ্ধিঃ
এরপর অন্তত আধঘণ্টাব্যাপি ভাষণে তিনি অনেক
মৌলিক বিষয়ের অবতারনা করেন। যে যুদ্ধের শুরুই হয় এইরূপ ভাষণ দ্বারা, আল্লাহর উপর এত
বিশ্বাস আর তাওয়াক্কুল দ্বারা, সেই যুদ্ধে কিভাবে কেউ
পরাজিত হতে পারে? আর তাই সেনাপতি তারিকের সেই দল এর বিজয় কাহিনী
আজও আমাদের রোমাঞ্চিত করে তুলে। এর ফলে গোটা স্পেন সহ ফ্রান্সের বিশাল এলাকা নিজেদের কব্জায় নিয়ে নেয়। স্পেন ও ফ্রান্সের জমিনে আল্লাহর আইন
প্রতিষ্ঠিত হয়। গড়ে তুলেন আধুনিক স্পেন
যার আরবী নাম আল-আন্দালুস মুসলিম আন্দালুসিয়া।
০৬. পরিসংহারঃ
হে আল্লাহ! আমাদের এই যামানায় ঐ রকম উদ্ধারকারী, সাহায্যকারী প্রেরণ
কর এবং নির্যাতিত মাজলুম মানবতাকে সাহায্য কর, আমীন।
০৭. তথ্যসূত্রঃ
১.
নাফহুত ত্বাইয়্যিব লিলমাক্কারী (نفح الطيب للمَقَّري) ১/২৪০।
২.
জামহুরাতু খুতাবুল ‘আরব (جمهرة خُطب العرب) ১/৩১৪।
৩. উইকিপিডিয়া ; ইন্টারনেটভিত্তিক বিশ্বকোষ।
৪. Encyclopedia of World
History.
৫.
ইসলামের স্বর্ণালী যুগের রক্তাক্ত ইতিহাস ও
৬.
অন্যান্য গ্রন্থসমগ্র।
চক্ষু রোগের চিকিৎসায় ‘কাম‘আ’ ; ছত্রাক, জমাট শিশির বা মাশরুম-এর পানি ব্যবহারঃ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
চক্ষু রোগের চিকিৎসায় ‘কাম‘আ’ ; ছত্রাক,
জমাট শিশির বা মাশরুম-এর
পানি ব্যবহারঃ
সংগ্রহে : আব্দুস সালাম হুসাইন আলী
মহান
আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা বলেন :
﴿وَظَلَّلْنَا عَلَيْكُمُ الْغَمَامَ
وَأَنزَلْنَا عَلَيْكُمُ الْمَنَّ وَالسَّلْوٰى ۖ كُلُوا مِن طَيِّبٰتِ مَا رَزَقْنٰكُمْ ۖ وَمَا ظَلَمُونَا وَلٰكِن كَانُوٓا أَنفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ﴾
আর আমি তোমাদের উপর মেঘমালার ছায়া দান করেছিলাম এবং তোমাদের
প্রতি ‘মান্না’ ও ‘সালওয়া’ অবতীর্ণ
করেছিলাম; আমি তোমাদেরকে যে
উপজীবিকা দান করেছি সেই পবিত্র জিনিস হতে আহার কর; এবং তারা আমার কোন অনিষ্ট করেনি, বরং তারা নিজেদের অনিষ্ট করেছিল। [সূরা বাক্বারা : ৫৭]।
মহান আল্লাহর নি‘য়ামত স্বরূপ মান্না ও সালওয়া দান
‘মান্না’ ও ‘সালাওয়া’ এর বিবরণঃ
‘মান্না’ ও ‘সালাওয়া’ এর বিবরণঃ
মান্নাঃ যে ‘মান্না’ তাদেরকে দেয়া হতো তা গাছের ওপর অবতারণ করা হতো। তারা
সকালে গিয়ে তা জমা করতো এবং ইচ্ছা মতো খেয়ে নিতো। হাসান
বাসরী (রহঃ) ও কাতাদাহ (রহঃ) বলেন যে, শিলার মতো ‘মান্না’ তাদের ঘরে নেমে আসতো, যা দুধের চেয়ে সাদা ও মধু অপেক্ষা বেশি মিষ্ট ছিলো। সুবহি
সাদিক থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত অবতারিত হতে থাকতো। প্রত্যেক
লোক তার বাড়ীর জন্য ঐ পরিমাণ নিয়ে নিতো যা ঐ দিনের জন্য যথেষ্ট হতো। কেউ
বেশি নিলে তা পচে যেতো। শুক্রবারে তারা শুক্র ও শনি এ দু’দিনের জন্য গ্রহণ করতো। কেননা
শনিবার ছিলো তাদের জন্য সাপ্তাহিক খুশির দিন। সে দিন
তারা জীবিকা অন্বেষণ করতো না। রাবী‘ ইবনু আনাস (রাঃ) বলেন যে, ‘মান্না’ ছিলো মধু জাতীয় জিনিস যা তারা পানি দিয়ে মিশিয়ে পান করতো।
সালওয়াঃ ‘সালওয়া’ এক প্রকার পাখি, চড়–ই পাখি
হতে কিছু বড়, রং
অনেকটা লাল। দক্ষিণা বায়ু প্রবাহিত হতো এবং ঐ পাখিগুলোকে জমা করে দিতো। বানী
ইসরাঈল নিজেদের প্রয়োজন মতো ওগুলো ধরতো এবং যবেহ করে খেতো। একদিন
খেয়ে বেশি হলে তা পচে যেতো। শুক্রবার তারা দুই দিনের জন্য জমা করতো। কেননা
শনিবার তাদের জন্য সাপ্তাহিক খুশির দিন ছিলো। সেই
দিন তারা ‘ইবাদতে মশগুল থাকতো
এবং ঐদিন শিকার করা তাদের জন্য নিষিদ্ধ ছিলো। (তাফসীর ইবনু আবী হাতিম ১/১৭৯) কোন কোন লোক বলেছেন যে, ঐ পাখিগুলো কবুতরের সমান ছিলো। দৈর্ঘ্য
ও প্রস্থে এক মাইল জায়গা ব্যাপী ঐ পাখিগুলো বর্শা পরিমাণ উঁচু স্তুপ হয়ে জমা হতো। ঐ
তীহের মাঠে ঐ দু’টি
জিনিস তাদের খাদ্যরূপে প্রেরিত হতো, যেখানে তারা তাদের নবীকে বলেছিলোঃ ‘এ জঙ্গলে আমাদের আহারের ব্যবস্থা কিরূপে হবে?’ তখন তাদের ওপর ‘মান্না’ ও ‘সালওয়া’ অবতারিত হয়েছিলো।
চক্ষু রোগের চিকিৎসায় ‘কাম‘আ’ ছত্রাক বা মাশরুম-এর পানিঃ
ক. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
الكَمْأَةُ
مِنَ المَنِّ، وماؤُها شِفاءٌ لِلْعَيْنِ
‘মান্না’ ব্যাঙ-এর
ছাতার (ছত্রাক) তথা জমাট শিশির বা মাশরুম-এর অন্তর্গত এবং এর পানি চক্ষু রোগের ঔষধ। [হাদীসের
মান : সহীহ। সহীহ বুখারী ৪১২৬, ৫৩০২ (ই. ফা), ৪৪৭৮ (শামেলা ও তা. পা), সহীহ
মুসলিম ২০৪৯ (শামেলা), ৫১৬৯, ৫১৭০ (ই. ফা), হাদীস সম্বার (ওয়াহীদীয়া ই. লা) ১২৩৮, ফাতহুল বারী ৮/১৪, সুনান নাসাঈ ৪/৩৭০, আহমাদ ১৬২৮, ১৬৩৫, ইবনু
মাযাহ ৩৪৫৪]।
খ. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনুরূপ আরো বলেছেনঃ
الْعَجْوَةُ
مِنَ الْجَنَّةِ وَفِيهَا شِفَاءٌ مِنَ السُّمِّ وَالْكَمْأَةُ مِنَ الْمَنِّ
وَمَاؤُهَا شِفَاءٌ لِلْعَيْنِ
আজওয়াহ নামক মাদীনার এক প্রকার খেজুর হচ্ছে জান্নাতী খাদ্য
ও বিষক্রিয়া নষ্টকারী এবং ব্যাঙের ছাতা ‘মান্না’ এর অন্তর্গত ও চক্ষুরোগে আরোগ্যদানকারী। [তিরমিযী ২০৭২ (ই. ফা) ২০৬৭ (শামেলা ও তাহকীক)]।
Friday, 25 October 2019
বিপদাপদে ধৈর্য্য ধারণ করা এবং নিম্নোক্ত দু‘আ পড়াঃ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
বিপদাপদে ধৈর্য্য ধারণ করা এবং নিম্নোক্ত দু‘আ পড়াঃ
সংগ্রহে : আব্দুস সালাম হুসাইন আলীঃ
রাসূল (ﷺ)-এর স্ত্রী উম্মু সালামা (রাযি.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি। রাসূল (ﷺ) বলেছেন :
قَالَ رَسُولُ
اللهِ ﷺ : مَا مِنْ عَبْدٍ تُصِيْبُهُ
مُصِيْبَةٌ فَيَقُولُ مَا أَمَرَهُ اللهُ ﴿إِنَّا للهِ
وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ﴾ اَللهم أَجُرْنِي فِيْ
مُصِيْبَتِي وَأَخْلِفْ لِي خَيْرًا مِنْهَا إِلاَّ أَجَرَهُ اللهُ فِي
مُصِيْبَتِهِ وَأَخْلَفَ لَهُ خَيْرًا مِنْهَا
কোন বান্দার ওপর যখন
বিপদ-মুসীবাত আসে সে যেন বলে, যা আল্লাহ আদেশ করেছেন :
‘ নিশ্চয়ই আমরা আল্লহরই জন্য আর নিশ্চয়ই আমরা তাঁরই দেিক প্রত্যার্বতনকারী’। [সূরা বাক্বারা : ১৫৬]। হে আল্লাহ! আমাকে এ বিপদ-মুসীবতের বিনিময় দান
কর এবং এর চেয়ে উত্তম বস্তু দান কর। তখন আল্লাহ তাকে তার বিপদ-মুসীবতের
বিনিময় দান করবেন এবং তাকে এর চেয়ে উত্তম বস্তু দান করবেন। [সহীহ মুসলিম ১৯৯৬ (ই. ফা), ৯১৮ (শামেলা), ২০০৩ (ই. সে)]।
Thursday, 17 October 2019
সুস্থ ও সুন্দর জীবন-যাপনে পবিত্র, পরিস্কার ও পরিচ্ছন্নতা একান্ত আবশ্যকঃ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
সুস্থ ও সুন্দর জীবন-যাপনে পবিত্র,
পরিস্কার ও পরিচ্ছন্নতা একান্ত আবশ্যকঃ
সংগ্রহে : আব্দুস সালাম
হুসাইন আলী
ইসলামে সুস্থ ও সুন্দর
জীবন-যাপনে পবিত্র, পরিস্কার ও পরিচ্ছন্নতার প্রতি বেশ গুরুত্বারূপ করা হয়েছে।
০১. আল-কুরআনে সুস্থ ও সুন্দর জীবন-যাপনে
পবিত্র, পরিস্কার ও পরিচ্ছন্নতার নির্শনা :
ক. আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন :
فِيهِ رِجَالٌ
يُحِبُّونَ أَن يَتَطَهَّرُوا وَاللهُ يُحِبُّ الْمُطَّهِّرِينَ
‘সেখানে এমন লোক আছে, যারা উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করতে ভালবাসে। আর আল্লাহ্ পবিত্রতা
অর্জনকারীদের ভালোবাসেন’। [সূরা
আত-তাওবা : ১০৮]।
খ. মহান আল্লাহ তা‘আলা আরো ইরশাদ করেছেন
:
إِنَّ اللهَ يُحِبُّ
التَّوّٰبِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ
‘নিশ্চয় আল্লাহ
তাওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং ভালোবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকেও’। [সূরা বাক্বারা : ২২২]।
০২. হাদীসে সুস্থ ও সুন্দর জীবন-যাপনে
পবিত্র, পরিস্কার ও পরিচ্ছন্নতার নির্শনা :
ক. হাদিসেও বিভিন্ন
উপায়ে পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এমনকি পরিচ্ছন্নতা রক্ষাকে ঈমানের অংশ বলে
আখ্যায়িত করা হয়েছে। আবু মালেক আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন :
اَلطُّهُوْرُ شَطْرُ الْإِيْمَانِ
‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অর্ধেক।’ [মুসলিম ২২৩]।
খ. ইসলামে ব্যক্তির
পরিচ্ছন্নতা, গৃহের পরিচ্ছন্নতা ও পরিপার্শের পরিচ্ছন্নতাসহ সর্কবষয়ে গুরুত্বারূপ করা হয়েছে। ব্যক্তির পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় অন্তত জুম‘আ বারে গোসলের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আবু সাঈদ
খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন :
اَلْغُسْلُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُحْتَلِمٍ
জুম‘আর দিন (শুক্রবার) গোসল করা প্রতিটি সাবালক ব্যক্তির জন্য
ওয়াজিব।’ [বুখারি ৪৭৯]।
গ. আবু হুরায়রা (রা.)
থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) বলেছেন : ‘আল্লাহর জন্য
প্রতিটি মুসলিমের অবশ্য কর্তব্য হলো (অন্তত) প্রতি সাত দিনের মাথায় তার মাথা ও
শরীর ধৌত করা।’ [বুখারি ৮৯৭, মুসলিম ৮৪৯]।
কারো ওপর গোসল ফরয না হলেও
শরীরে ঘাম ও ধূলা-বালু ইত্যাদি লাগার কারণে দুর্গন্ধ হতে পারে, তাই অন্তত সাতদিনে একবার গোসলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার মানে সাত দিন পর
গোসলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা নয়। অন্যদিকে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ পরিচ্ছন্ন রাখতেও
হাদিসে সবিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। দাঁত ও মুখের যত্নের জন্য হাদিসে মিসওয়াকের গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। মিসওয়াক
ব্যবহারকে গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
ঘ. আবু হুরায়রা
(রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) বলেছেন : ‘যদি আমার উম্মতের জন্য কষ্ট না হত তাহলে প্রত্যেক
সালাতের সময় মিসওয়াক করার নির্দেশ দিতাম।’ [বুখারি
৮৮৭, মুসলিম ২৫২]।
ঙ. চুলের পরিচ্ছন্নতা রক্ষায়ও ইসলামে গুরুত্ব
দেয়া হয়েছে। জাবির (রা.) বলেন, একদিন রাসুল
(সা.) আমাদের ঘরে বেড়াতে এলেন। আসার পর তিনি এলোকেশী এক ব্যক্তিকে দেখতে পেলেন।
তার সম্পর্কে তিনি বললেন, ‘এ ব্যক্তি কি এমন কিছু জোটাতে
পারেনি,
যা দিয়ে সে তার মাথার চুল বিন্যস্ত করবে?’ ময়লা কাপড় পরিহিত আরেকজনকে দেখে তিনি বলেন, ‘এ ব্যক্তি কি
এমন কিছুর ব্যবস্থা করতে পারেনি, যা দিয়ে সে তার কাপড়
পরিষ্কার করবে?’ [মুসনাদ আহমাদ ১৪৮৫০, বাইহাকি ৫৮১৩]।
চ. মানুষের পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্য এবং সুস্থতা
ও কমনীয়তার নেয়ামত রক্ষায় শরীয়তে কতটা গুরুত্ব দেয়া হয়েছে তা হাদিস ফিকহের
গ্রন্থগুলোর পবিত্রতা অধ্যায় পড়লে সহজে বোঝা যাবে। নখ কাটা, গোঁফ ছোট করা, বাহুর নিচের চুল উপড়ানো এমনকি গুপ্তাঙ্গের
অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করাসহ কোনোটিই বাদ যায়নি। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে
রাসুল (সা.) বলেন, দশটি বিষয় ‘ফিতরাত’র অন্তর্ভুক্ত:
গোঁফ কাটা,
দাড়ি লম্বা রাখা, মিসওয়াক করা, নাকে পানি দেওয়া, নখ কাটা, চামড়ার ভাঁজের
জায়গাগুলো ধোয়া, বগলের নিচের চুল তুলে ফেলা, নাভির নিচের চুল মুণ্ডানো, (মলমূত্র ত্যাগের পর)
পানি দ্বারা পরিচ্ছন্নতা অর্জন করা। বর্ণনাকারী বলেন, দশম বিষয়টি আমি ভুলে গেছি, সম্ভবত কুলি করা।’ [মুসলিম
২৭৫৭]।
ছ. ঘরবাড়ি পরিচ্ছন্ন রাখতেও হাদিসে যথেষ্ট
গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। আবাস স্থানকেও নোংরা, আবর্জনা ও দৃষ্টিকটু উপাদান থেকে পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। নিজের স্বাস্থ্য ও সুস্থতা
রক্ষায় এর বিকল্প নেই। সাঈদ ইবনুল মুসাইয়িব (রা.) থেকে। তিনি বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ পবিত্র। তিনি পবিত্রকে পছন্দ করেন। আল্লাহ পরিচ্ছন্ন। তিনি
পরিচ্ছন্নতা পছন্দ করেন। আল্লাহ মহৎ, তিনি মহত্ব
পছন্দ করেন, আল্লাহ বদান্য, তিনি বদান্যতা পছন্দ করেন। অতএব তোমরা তোমাদের (ঘরের) উঠোনগুলো পরিচ্ছন্ন
রাখবে। [তিরমিজি ২৭৯৯]।
জ. পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারেও হাদিসে
নির্দেশনা এসেছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা লানতকারী (অভিশাপে আক্রান্ত হতে হয় এমন) দুইটি কাজ থেকে বেঁচে থাকো।
সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, লানতকারী কাজ দুইটি কী? তিনি বলেন, যে মানুষের চলাচলের রাস্তায় কিংবা গাছের
ছায়ায় মলমূত্র ত্যাগ করে।’ [আবু দাউদ ২৫, মুসনাদ আহমদ ৮৮৫৩]।
ঝ. পরিবেশ দূষণ রোধেও হাদিসে গুরুত্বপূর্ণ
নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল
(সা.) বলেছেন : ‘তোমাদের কেউ যেন বদ্ধ পানিতে পেশাব না করে, অতঃপর তা দিয়ে গোসল করে।’ [বুখারি ২৩৯, মুসলিম ২৮২]।
ঞ. তেমনি খাদ্য ও পানীয়কে দূষণমুক্ত রাখতে
পাত্র ঢেকে রাখাসহ বিভিন্ন জরুরি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জাবের ইবন আবদুল্লাহ (রা.)
থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা বাসন
ঢেকে রাখো। পানপাত্রের মুখ বন্ধ রাখো। দরজা কপাটবদ্ধ করো এবং এশারের সময় তোমাদের
শিশুদের ঘরের ভেতরে রাখো। কেননা, এসময় জিনরা ছড়িয়ে পড়ে
এবং প্রভাব করে। আর তোমরা নিদ্রাকালে বাতিগুলো (প্রদীপ) নিভিয়ে দিও। কেননা ইঁদুর
কখনো প্রদীপের সলতে টেনে নিয়ে যায়। অতঃপর তা গৃহবাসীকে জ্বালিয়ে দেয়।’ [বুখারি
৩৩১৬]।
ইসলাম হচ্ছে বাস্তব ও বিজ্ঞানসম্মত এবং মাধুর্পূর্ জীবন ব্যবস্থা। তাই আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সকলকে সব সময় ইসলামের নীতিমালা অনুসরণের মাধ্যমে ইহকাল ও পরকালে সুখী হওয়ার তাওফীক্ব দান করুন, আমীন।
Subscribe to:
Posts (Atom)