বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
চক্ষু রোগের চিকিৎসায় ‘কাম‘আ’ ; ছত্রাক,
জমাট শিশির বা মাশরুম-এর
পানি ব্যবহারঃ
সংগ্রহে : আব্দুস সালাম হুসাইন আলী
মহান
আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা বলেন :
﴿وَظَلَّلْنَا عَلَيْكُمُ الْغَمَامَ
وَأَنزَلْنَا عَلَيْكُمُ الْمَنَّ وَالسَّلْوٰى ۖ كُلُوا مِن طَيِّبٰتِ مَا رَزَقْنٰكُمْ ۖ وَمَا ظَلَمُونَا وَلٰكِن كَانُوٓا أَنفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ﴾
আর আমি তোমাদের উপর মেঘমালার ছায়া দান করেছিলাম এবং তোমাদের
প্রতি ‘মান্না’ ও ‘সালওয়া’ অবতীর্ণ
করেছিলাম; আমি তোমাদেরকে যে
উপজীবিকা দান করেছি সেই পবিত্র জিনিস হতে আহার কর; এবং তারা আমার কোন অনিষ্ট করেনি, বরং তারা নিজেদের অনিষ্ট করেছিল। [সূরা বাক্বারা : ৫৭]।
মহান আল্লাহর নি‘য়ামত স্বরূপ মান্না ও সালওয়া দান
‘মান্না’ ও ‘সালাওয়া’ এর বিবরণঃ
‘মান্না’ ও ‘সালাওয়া’ এর বিবরণঃ
মান্নাঃ যে ‘মান্না’ তাদেরকে দেয়া হতো তা গাছের ওপর অবতারণ করা হতো। তারা
সকালে গিয়ে তা জমা করতো এবং ইচ্ছা মতো খেয়ে নিতো। হাসান
বাসরী (রহঃ) ও কাতাদাহ (রহঃ) বলেন যে, শিলার মতো ‘মান্না’ তাদের ঘরে নেমে আসতো, যা দুধের চেয়ে সাদা ও মধু অপেক্ষা বেশি মিষ্ট ছিলো। সুবহি
সাদিক থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত অবতারিত হতে থাকতো। প্রত্যেক
লোক তার বাড়ীর জন্য ঐ পরিমাণ নিয়ে নিতো যা ঐ দিনের জন্য যথেষ্ট হতো। কেউ
বেশি নিলে তা পচে যেতো। শুক্রবারে তারা শুক্র ও শনি এ দু’দিনের জন্য গ্রহণ করতো। কেননা
শনিবার ছিলো তাদের জন্য সাপ্তাহিক খুশির দিন। সে দিন
তারা জীবিকা অন্বেষণ করতো না। রাবী‘ ইবনু আনাস (রাঃ) বলেন যে, ‘মান্না’ ছিলো মধু জাতীয় জিনিস যা তারা পানি দিয়ে মিশিয়ে পান করতো।
সালওয়াঃ ‘সালওয়া’ এক প্রকার পাখি, চড়–ই পাখি
হতে কিছু বড়, রং
অনেকটা লাল। দক্ষিণা বায়ু প্রবাহিত হতো এবং ঐ পাখিগুলোকে জমা করে দিতো। বানী
ইসরাঈল নিজেদের প্রয়োজন মতো ওগুলো ধরতো এবং যবেহ করে খেতো। একদিন
খেয়ে বেশি হলে তা পচে যেতো। শুক্রবার তারা দুই দিনের জন্য জমা করতো। কেননা
শনিবার তাদের জন্য সাপ্তাহিক খুশির দিন ছিলো। সেই
দিন তারা ‘ইবাদতে মশগুল থাকতো
এবং ঐদিন শিকার করা তাদের জন্য নিষিদ্ধ ছিলো। (তাফসীর ইবনু আবী হাতিম ১/১৭৯) কোন কোন লোক বলেছেন যে, ঐ পাখিগুলো কবুতরের সমান ছিলো। দৈর্ঘ্য
ও প্রস্থে এক মাইল জায়গা ব্যাপী ঐ পাখিগুলো বর্শা পরিমাণ উঁচু স্তুপ হয়ে জমা হতো। ঐ
তীহের মাঠে ঐ দু’টি
জিনিস তাদের খাদ্যরূপে প্রেরিত হতো, যেখানে তারা তাদের নবীকে বলেছিলোঃ ‘এ জঙ্গলে আমাদের আহারের ব্যবস্থা কিরূপে হবে?’ তখন তাদের ওপর ‘মান্না’ ও ‘সালওয়া’ অবতারিত হয়েছিলো।
চক্ষু রোগের চিকিৎসায় ‘কাম‘আ’ ছত্রাক বা মাশরুম-এর পানিঃ
ক. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
الكَمْأَةُ
مِنَ المَنِّ، وماؤُها شِفاءٌ لِلْعَيْنِ
‘মান্না’ ব্যাঙ-এর
ছাতার (ছত্রাক) তথা জমাট শিশির বা মাশরুম-এর অন্তর্গত এবং এর পানি চক্ষু রোগের ঔষধ। [হাদীসের
মান : সহীহ। সহীহ বুখারী ৪১২৬, ৫৩০২ (ই. ফা), ৪৪৭৮ (শামেলা ও তা. পা), সহীহ
মুসলিম ২০৪৯ (শামেলা), ৫১৬৯, ৫১৭০ (ই. ফা), হাদীস সম্বার (ওয়াহীদীয়া ই. লা) ১২৩৮, ফাতহুল বারী ৮/১৪, সুনান নাসাঈ ৪/৩৭০, আহমাদ ১৬২৮, ১৬৩৫, ইবনু
মাযাহ ৩৪৫৪]।
খ. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনুরূপ আরো বলেছেনঃ
الْعَجْوَةُ
مِنَ الْجَنَّةِ وَفِيهَا شِفَاءٌ مِنَ السُّمِّ وَالْكَمْأَةُ مِنَ الْمَنِّ
وَمَاؤُهَا شِفَاءٌ لِلْعَيْنِ
আজওয়াহ নামক মাদীনার এক প্রকার খেজুর হচ্ছে জান্নাতী খাদ্য
ও বিষক্রিয়া নষ্টকারী এবং ব্যাঙের ছাতা ‘মান্না’ এর অন্তর্গত ও চক্ষুরোগে আরোগ্যদানকারী। [তিরমিযী ২০৭২ (ই. ফা) ২০৬৭ (শামেলা ও তাহকীক)]।
No comments:
Post a Comment