আদম ও হাওয়া (আঃ) দ্বয়ের তাওবাহ-ইস্তিগফার ;
আমাদের শিক্ষা ও
প্রয়োজনীয়তাঃ
আব্দুস সালাম হুসাইন আলী
০১.
ভূমিকাঃ
আল-হামদুলিল্লাহি রাব্বিল ‘আ-লামী-ন। ওয়াস সালাতু ওয়াস
সালাম ‘আলা- সায়্যিদিল আম্বিয়াই ওয়াল মুরসালীন। ওয়া ‘আলা আ-লিহি ওয়া আসহা-বিহি
আজমাঈন। আম্মা বা‘দ! পৃথিবীর মানুষ ভূল ও অপরাধ করবে এটাই স্বাভাবিক নীতিতে পরিণত
হয়েছে। তবে সর্বোত্তম হলো ভূল ও অপরাধ হয়ে গেলে সাথে সাথে ক্ষমা চাওয়া, ভূল
স্বীকার করা।
০২. নিম্নে পৃথিবীর সর্ব প্রথম
মানব ও মানবী ‘আদম ও আদম ও হাওয়া (আঃ) দ্বয়ের তাওবাহ-ইস্তিগফার প্রসঙ্গে কুরআনের
বাণী :
﴿قَالَا رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنفُسَنَا وَإِن لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ﴾
‘তারা উভয়ে বলল, হে আমাদের রাব্ব! আমরা নিজেদের প্রতি
অন্যায় করেছি, আপনি
যদি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি রহম না করেন তাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে
পড়ব। [সূরা আ‘রাফ : ২৩]।
০৩. তাফসীর /
ব্যাখ্যাঃ
৩/১. তাফসীর আহসানুল বায়ান :
তওবা ও
ক্ষমা প্রার্থনার এ হল সেই বাক্যসমূহ, যা আদম (আঃ) বরকতময় মহান আল্লাহর
কাছ থেকে শেখেন। যেমন সূরা বাক্বারার ৩৭ নং আয়াতে
এ কথা স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। (উক্ত
আয়াতের টীকা দ্রঃ) শয়তান আল্লাহর অবাধ্যতা করল এবং তারপর সে কেবল এর উপর অটলই
থাকেনি, বরং এটাকে বৈধ ও সাব্যস্ত করার জন্য জ্ঞান ও অনুমানভিত্তিক দলীলসমূহ পেশ করতে
লাগল। ফলে সে আল্লাহর সান্নিধ্য থেকে
বিতাড়িত এবং চিরদিনকার জন্য অভিশপ্ত গণ্য হল। পক্ষান্তরে আদম (আঃ) স্বীয় ভুলের জন্য অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর দরবারে তওবা ও
ক্ষমা প্রার্থনা করার প্রতি যত্নবান হলেন। ফলে তিনি
আল্লাহর রহমত ও তাঁর ক্ষমা লাভের যোগ্য গণ্য হলেন। এইভাবে দু'টি পথের পরিচয় স্পষ্ট হয়ে গেল। শয়তানের
পথের এবং আল্লাহওয়ালাদের পথেরও। পাপ করে
অহংকার প্রদর্শন করা,
তার উপর অটল থাকা এবং তাকে সঠিক সাব্যস্ত করার জন্য
দলীলাদির স্তূপ খাড়া করা ইত্যাদি হল শয়তানী পথ। আর পাপ করার পর অনুতাপে দগ্ধ হয়ে আল্লাহ-সমীপে নত হয়ে যাওয়া এবং তওবা ও ক্ষমা
চাওয়ায় সচেষ্ট হওয়া ইত্যাদি হল আল্লাহর বান্দাদের পথ। হে
আল্লাহ আমাদেরকে তাদের অন্তর্ভূক্ত করুন। [তাফসীর
আহসানুল বায়ান]।
৩/২. তাফসীর যাকারিয়া :
কাতাদা বলেন, তারা দু’জন
নিজেদের লজ্জাস্থান পরস্পর দেখতে পেত না। কিন্তু
অপরাধের পর সেটা প্রকাশ হয়ে পড়ল। তখন আদম
আলাইহিস সালাম বললেন,
হে রব! যদি আমি তাওবা করি এবং ক্ষমা চাই তাহলে কি হবে আমাকে
জানান? আল্লাহ বললেন,
তাহলে আমি তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবো। কিন্তু ইবলীস ক্ষমা চাইলো না, বরং সে অবকাশ চাইল। ফলে আল্লাহ প্রত্যেককে তার প্রার্থিত বিষয় দান করলেন। [আত-তাফসীরুস সহীহ]।
৩/৩. আয়াত
সংশ্লিষ্ট কাহিনী ; এ কাহিনীটিতে কয়েকটি
গুরুত্বপূর্ণ সত্যের সন্ধান পাওয়া যায়ঃ
৩/৩/ক. লজ্জা মানুষের একটি প্রকৃতিগত ও স্বাভাবিক অনুভূতি।
মানুষ নিজের শরীরের বিশেষ স্থানগুলোকে অন্যের সামনে
উন্মুক্ত করার ব্যাপারে প্রকৃতিগতভাবে যে লজ্জা অনুভব
করে সেটি ঐ স্বাভাবিক অনুভূতির প্রাথমিক প্রকাশ। কুরআন আমাদের জানায়,
সভ্যতার ক্রমোন্নতির ফলে মানুষের মধ্যে
কৃত্রিমভাবে এ লজ্জার সৃষ্টি হয়নি বা এটি বাইরের থেকে
অর্জিত কোন জিনিসও নয়,
যেমন শয়তানের কোন কোন সুচতুর শিষ্য ও অনুসারী অনুমান করে থাকে । বরং জন্মের প্রথম দিন থেকেই এ
প্রকৃতিগত গুণটি মানুষের মধ্যে রয়েছে।
৩/৩/খ. নগ্নতা, অশ্লিলতা, বেহায়াপনা ও যৌনতার পথে পরিচালিত করা :
মানুষকে তার স্বভাবসূলভ সোজা-সরল পথ থেকে সরিয়ে দেবার
জন্যে শয়তানের প্রথম কৌশলটি ছিল তার এ লজ্জার অনুভূতিতে আঘাত করা, উলংগতার
পথ দিয়ে তার জন্যে নির্লজ্জতা ও অশ্লিলতার দরজা খুলে দেয়া এবং
যৌন বিষয়ে তাকে খারাপ পথে পরিচালিত করা। অন্য
কথায় বলা যায় , প্রতিপেক্ষের ওপর আক্রমণ চালাবার জন্যে তার যে, দুর্বলতম স্থানটিকে সে বেছে নিয়েছিল সেই ছিল তার জীবনের যৌন বিষয়ক দিক । যে লজ্জাকে মানবীয় প্রকৃতির দুর্গরক্ষক হিসেবে মহান আল্লাহ
নিযুক্ত করেছিলেন তারই ওপর এনেছে সে প্রথম আঘাতটি। শয়তান ও তার শিষ্যবর্গের এ কর্মনীতি আজো অপরিবর্তিত রয়েছে। মেয়েদেরকে উলংগ করে প্রকাশ্য বাজারে না দাঁড় করানো
পর্যন্ত তাদের প্রগতির কোন কার্যক্রম শুরুই হতে পারে না।
৩/৩/গ. অসৎকাজ করার প্রকাশ্য আহবানকে মানুষ খুব কমই গ্রহণ করে :
অসৎকাজ করার প্রকাশ্য আহবানকে মানুষ খুব কমই গ্রহণ করে, এটিও
মানুষের স্বভাবসূলভ প্রবণতা। সাধারণত তাকে নিজের জালে
আবব্ধ করার জন্যে তাই প্রত্যেক অসৎকর্মের আহকায়ককে কল্যাণকামীর
ছদ্মবেশে আসতে হয়।
৩/৩/ঘ. মানুষের মধ্যে উচ্চতর বিলাশী জীবন লাভের আকাংখা :
মানুষের মধ্যে উচ্চতর বিষয়াবলী যেমন মানবিক পর্যায় থেকে
উন্নতি করে উচ্চতর
মার্গে পৌছার বা চিরন্তন জীবনলাভের স্বাভাবিক আকাংকা থাকে । আর শয়তান তাকে ধোঁকা দেবার
ক্ষেত্রে প্রথম সাফল্য অর্জন করে এ পথেই। সে
মানুষের এ আকাংখাটির কাছে আবেদন জানায়। শয়তানের সবচেয়ে সফল অস্ত্র হচ্ছে , সে মানুষের সামনে তাকে উন্নতির
উচ্চ শিখরে নিয়ে যাওয়ার এবং বর্তমান অবস্থা থেকে উন্নতর অবস্থায় পৌছিয়ে দেবার টোপ
ফেলে, তারপর তাকে এমন পথের সন্ধান দেয় , যা তাকে নীচের দিকে টেনে নিয়ে যায়।
৩/৩/ঙ. মানবীয় সাধারণ ধারণার খন্ডন :
সাধারণভাবে একথাটির প্রচলিত হয়ে গেছে যে, শয়তান
প্রথমে হাওয়া (আ.)-কে তার প্রতারণা জালে আবদ্ধ করে, তারপর আদম
(আ.)-কে জালে আটকাবার জন্যে তাকে ক্রীড়নক হিসেবে ব্যবহার
করে। কিন্তু কুরআন এ ধারণা খণ্ডন করে। কুরআনের বক্তব্য হচ্ছে, শয়তান তাদের উভয়কেই
ধোঁকা দেয় এবং তারা উভয়েই শয়তানের ধোঁকায় বিভ্রান্ত হয়। আপাতদৃষ্টিতে এটা একটি মামুলী কথা বলে মনে হয়। কিন্তু যারা জানেন,
হযরত হওয়া সম্পর্কিত এ সাধারন্যে প্রচলিত
বক্তব্যটি সারা দুনিয়ায় নারীর নৈতিক সামাজিক ও আইনগত মর্যাদা হ্রাস করার ক্ষেত্রে কত বড় ভূমিকা পালন করেছে একমাত্র তারাই কুরআনের এ বর্ণনার যথার্থ
মূল্য ও মর্যাদা অনুধাবন করতে সক্ষম হবেন।
৩/৩/চ. নিষিদ্ধবৃক্ষের ফল ও যৌক্তিকতা :
এরূপ ধারণা করার কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই যে, নিষিদ্ধ
গাছের এমন কোন
বিশেষ গুণ ছিল, যে কারণে তার ফল মুখ দেবার সাথে
সাথেই হযরত আদম ও হাওয়ার লজ্জাস্থান অনাবৃত হয়ে গিয়েছিল। আসলে এটি কেবল আল্লাহর নাফরমানিরই ফলশ্রুতি ছিল। আল্লাহ ইতিপূর্বে নিজের ব্যবস্থাপনায়
তাদের লজ্জাস্থান আবৃত করেছিলেন। তারা
তাঁর নির্দেশ
অমান্য করার সাথে সাথেই তিনি তাদের ওপর থেকে নিজের হেফাজত ও
সংরক্ষণ ব্যবস্থা তুলে নিয়েছিলেন, তাদের আবরণ উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন। তারা যদি প্রয়োজন মনে করে তাহলে নিজেদের লজ্জাস্থান আবৃত করার
ব্যবস্থা করুক। এ কাজের দায়িত্ব তাদের নিজেদের
ওপরই ছেড়ে দিয়েছিলেন। আর যদি তারা প্রয়োজন মনে
না করে অথবা এ জন্যে প্রচেষ্টা না চালায় তাহলে তারা যেভাবেই বিচরণ করুক না
কেন, তাতে আল্লাহর কিছু আসে যায় না। এভাবে
যেন চিরকালের জন্যে এ সত্যটি প্রকাশ করে দেয়া হলো যে, মানুষ
আল্লাহর নাফরমানী করলে একদিন না একদিন তার আবরণ উন্মুক্ত হয়ে যাবেই এবং মানুষের
প্রতি আল্লাহর সাহায্য
-সহযোগিতা ততদিন থাকবে যতদিন সে থাকবে আল্লাহর হুকুমের
অনুগত। আনুগত্যের সীমানার বাইরে পা রাখার সাথে সাথেই সে আল্লাহর সাহায্য লাভ করতে পারবে না। বরং তখন তাকে তার নিজের হাতেই সঁপে দেয়া হবে। বিভিন্ন হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ বিষয়টি বর্ণনা করেছেন এবংএ সম্পর্কে তিনি দোয়া করেছেন। ‘‘"হে আল্লাহ! আমি তোমার রহমতের আশা করি। কাজেই এক
মুহুর্তের জন্যেও আমাকে আমার নিজের হাতে সোপর্দ করে দিয়ো
না"।
৩/৩/ছ. মানুষের
শ্রেষ্ঠত্বের বিরোধিতায় শয়তানের অবস্থান :
শয়তান একথা প্রমাণ করতে চাচ্ছিল যে, তার
মোকাবিলায় মানুষকে যে শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে সে তার যোগ্য নয়। কিন্তু প্রথম মোকাবিলায় সে পরিজিত হলো। সন্দেহ নেই, এ
মোকাবিলায় মানুষ তার রবের নির্দেশ মেনে চলার ব্যাপারে পূর্ণ সফলকাম হতে পারেনি এবং তার এ দুর্বলতাটিও প্রকাশ হয়ে পড়লো যে, তার
পক্ষে নিজের প্রতিপক্ষের প্রতারণা জালে আবদ্ধ হয়ে তার আনুগত্যের পথ থেকে বিচ্যুত
হওয়া সম্ভব। কিন্তু এ প্রথম মোকাবিলায় একথাও চূড়ান্ত ভাবে প্রমানিত হয়ে গেছে যে, মানুষ
তার নৈতিক মর্যাদার দিক দিয়ে একটি উন্নত ও শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। প্রথমত শয়তান নিজেই নিজের শ্রেষ্ঠত্বের দাবীদার ছিল। আর মানুষ নিজে শ্রেষ্ঠত্বের দাবী করেনি রবং শ্রেষ্ঠত্ব তাকে
দান করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত শয়তান নির্জলা অহংকার ও আত্মাম্ভরিতার ভিত্তিতে
স্বেচ্ছায় আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে। অন্যদিকে মানুষ স্বেচ্ছায় ও স্বতপ্রবৃত্ত হয়ে আল্লাহর হুকুম অমান্য করেনি। বরং শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে এতে
প্রবৃত্ত হয়। অসৎকাজের প্রকাশ্য আহবানে সে সাড়া দেয়নি। বরং অসৎকাজের আহবায়ককে সৎকাজের
আহবায়ক সেজে তার সামনে আসতে হয়েছিল। সে নীচের দিকে যাওয়ার উদ্দেশ্যে নিয়ে নীচের দিকে যায়নি বরং এ পথটি তাকে উপরের
দিকে নিয়ে যাবে এ ধোকায় পড়ে সে নীচের দিকে যায়। তৃতীয়ত শয়তানকে সতর্ক করার পর সে নিজের ভুল স্বীকার করে বন্দেগীর দিকে
ফিরে আসার পরিবর্তে নাফরমানীর ওপর আরো বেশী অবিচল হয়ে যায়। অন্যদিকে মানুষকে তার ভূলের ব্যাপারে সতর্ক করে দেবার পর সে
শয়তানের মত
বিদ্রোহ করেনি বরং নিজের ভূল বুঝতে পারার সাথে সাথেই
লজ্জিত হয়ে পড়ে। নিজের ত্রুটি স্বীকার করে,
বিদ্রোহ থেকে আনুগত্যের দিকে ফিরে আসে এবং ক্ষমা প্রার্থনা
করে নিজের
রবের রহমতের ছত্রছায়ায় আশ্রয় খুঁজতে থাকে।
৩/৩/জ. মানবপথ ও শয়তানের পথ সম্পূর্ণ ভিন্ন :
এভাবে শয়তানের পথ ও মানুষের উপযোগী পথ দুটি পরস্পর থেকে
সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে যায়।আল্লাহর
বন্দেগী থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে তাঁর মোকাবিলায় বিদ্রোহের ঝাণ্ডা বুলন্দ করা ,
সতর্ক করে দেয়া সত্ত্বেও সগর্বে নিজের বিদ্রোহাত্মক
কর্মপদ্ধতির ওপর
অটল হয়ে থাকা এবং যারা আল্লাহর আনুগত্যের পথে চলে তাদেরকেও
বিভ্রান্ত ও প্ররোচিত করে গোনাহ ও নাফরমানীর পথে টেনে আনার চেষ্টা করাই হচ্ছে
নির্ভেজাল শয়তানের পথ। বিপরীত পক্ষে মানুষের উপযোগী
পথটি হচ্ছেঃ প্রথমত শয়তানের প্ররোচান ও অপহরণ প্রচেষ্টার
মোকাবিলা করতে হবে। তার এ প্রচেষ্টায় বাধা
দিতে হবে। নিজের শত্রুর চাল ও কৌশল বুঝাতে হবে এবং তার হাতে থেকে বাচার জন্যে সবসময় সতর্ক থাকতে হবে । কিন্তু এরপর যদি কখনো তার পা বন্দেগী ও
আনুগত্যের পথ থেকে সরেও যায় তাহলে নিজের ভূল উপলব্ধি
করার সাথে সাথেই লজ্জায় অধোবদন হয়ে তাকে নিজের রবের দিকে ফিরে আসতে হবে এবং নিজের অপরাধ ও ভুলের প্রতিকার ও সংশোধন করতে হবে। এ কাহিনী থেকে মহান আল্লাহ এ মৌল শিক্ষাটিই দিতে চান। এখানে মানুষের মনে তিনি একথাগুলো বদ্ধমূল করে দিতে চান যে, তোমরা যে পথে চলছো সেটি শয়তানের পথ। এভাবে
আল্লাহর হেদায়াতের পরোয়া না করে জিন ও মানুষের মধ্যকার শয়তানদেরকে
নিজেদের বন্ধু ও অভিভাবকে পরিণত করা এবং ক্রমাগত সতর্ক
বাণী উচ্চারণ করার পরও তোমাদের এভাবে নিজেদের ভুলের ওপর অবিচল থাকার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া মূলত নির্ভেজাল শয়তানী কর্মনীতি ছাড়া আর কিছুই নয়। তোমরা নিজেদের আদি ও চিরন্তন দুশমনের
ফাঁদে আটকা পড়ছো। এবং তার কাছে পূর্ণ পরাজয় বরণ করছো। শয়তান যে পরিণতির মুখোমুখি হতে
চলেছে, তোমাদের এ বিভ্রান্তির পরিণামও তাই হবে। যদি তোমরা সত্যিই নিজেরা নিজেদের শত্রু না হয়ে গিয়ে থাকো
এবং তোমাদের মধ্যে সামান্যতম চেতনাও থেকে থাকে, তাহলে তোমরা নিজেদের ভুল শুধরিয়ে
নাও, সতর্ক হয়ে যাও
এবং তোমাদের বাপ আদম ও মা হাওয়া পরিশেষে যে পথ অবলম্বন
করেছিলেন তোমরাও সেই একই পথ অবলম্বন করো।
০৪. আয়াত হতে
শিক্ষণীয় বিষয়:
ক. শয়তান মানুষের প্রকাশ্য
শত্রু, তার প্রতিশ্র“তি মিথ্যা, সে ধোঁকা দিয়ে মানুষকে পথভ্রষ্ট করতে চায়,
তাই তার সম্পর্কে সতর্ক থাকতে
হবে।
খ. শয়তানের চক্রান্তে পড়ে অন্যায় করলে সঙ্গে সঙ্গে তাওবাহ করা উচিত, এটাই আদম (আঃ)-এর বৈশিষ্ট্য। আর তাওবাহ না করে অপরাধে অটল থাকা শয়তানের কাজ।
খ. শয়তানের চক্রান্তে পড়ে অন্যায় করলে সঙ্গে সঙ্গে তাওবাহ করা উচিত, এটাই আদম (আঃ)-এর বৈশিষ্ট্য। আর তাওবাহ না করে অপরাধে অটল থাকা শয়তানের কাজ।
০৫. উপসংহারঃ
জীবনের সর্বক্ষেত্রে আমাদেরকে
নবীদের পথ অনুসরণ করতে হবে। অপরাধ, ভুল ও গুনাহ হয়ে গেলে সাথে সাথে তাওবাহ করে
আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাইতে হবে। মহান আল্লাহ আমাদেরকে উপরোক্ত বিষয়ের উপর আমল করার
তাওফীক দান করুন, আমীন।
Casino site | Lucky Club
ReplyDeleteLucky Club - UK Casino. The online casino that we all love to play and win and gambling is one of the best in the business. With over 500 online casinos, luckyclub.live